প্রচলিত বর্ণবাদ আমাদের হিন্দু সমাজের এক জটিল ব্যধি, এই দুষ্ট ব্যধি আমাদের হিন্দু সমাজকে কিরকম জড়বৎ করে তুলেছে, সেই বিষয়ে চিন্তাশীল হিন্দুরা যথেষ্ট অবগত।
যদিও প্রচলিত বর্ণবাদের উপদেষ্টারা এই বলেল যে, বর্ণবাদ বেদ উদ্ভূত এবং প্রাচীন ভারতের প্রচলিত পন্থা, এই বর্ণবাদ কে উপেক্ষা করবার উপায় নেই।
কিন্তু বাস্তব চিরন্তন সত্য এই'যে বেদোক্ত বর্ণবাদের সঙ্গে বর্তমানের বর্ণবাদের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই, সমাজে চলতে থাকা বর্ণবাদ আদতে কিছু স্বার্থ সন্ধানী মানুষের কল্পনা প্রসূত বেদোক্ত বর্ণবাদের বিকৃতরূপ মাত্র।
বৈদিক বর্ণবাদ কর্মের দ্বারা বিভাজিত সমাঞ্জস্যপূর্ণ সামাজিক ব্যবস্থা, যে সমাজে জন্মগত কেউ ক্ষুদ্র বা বৃহৎ নয়, মানুষ তাঁর নিজের কর্মের দ্বারা মহান বা অধম হয়।
কিন্তু স্বার্থ সন্ধানী ক্ষমতাশীল মানুষরা বৈদিক যুগের শেষ সময়ে নিজেদের ক্ষমতা এবং সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য বেদ নীতিকে বিকৃত করে অসাধু বর্ণবাদের প্রতিষ্ঠা করেন, কেবল স্বার্থ সিদ্ধির জন্য।
যেহেতু আমরা সারাজীবন ভুলের পিছনে ঘুরে চলেছি, সেই কারণে বেদ আমাদের কাছে অজ্ঞাত, এবং একটি কাল্পনিক বিভেদরেখা আমরা একে অপরের জন্য টেনে রেখেছি।
যদি বেদ মন্ত্র আমাদের জ্ঞাত থাকত, তবে অসাধু বর্ণবাদ কবেই অবলুপ্ত হয়ে যেত, আমাদের মধ্যেকার অনৈক্য, মতপার্থক্য পরিবেশ আর থাকতনা।
ঋগ্বেদের ৫/৫৯/৬ এবং ৫/৬০/৫ মন্ত্র গুলিতে সকলে সমান এবং সমত্বের কথা উল্লেখ আছে যা মানব সভ্যতাকে ঈশ্বরনিষ্ঠ একাত্মা হবার শিক্ষা দেয়, মন্ত্র গুলি এইরকম।
★সকলে সমান:- তে অজ্যেষ্ঠা অকনিষ্ঠাস উদ্ভিদো হমধ্যমাসো মহসা বি বাবৃধুঃ। সুজাতাসো জনুষা পৃশ্নি মাতরো দিবো মর্য্যা আ নো অচ্ছা জিগাতন।।
শব্দার্থ- তে- তাহারা/ অজ্যেষ্ঠা - বড় নয়/অকনিষ্ঠাস-ছোট নয়/
অমধ্যমাস-মধ্যম নয়/ উৎ ভিদ-উন্নত/ মহসা- উৎসাহের সঙ্গে/বি-বিশেষভাবে/ বাবৃধুঃ -ক্রমোন্নতি জন্য প্রযত্ন করে /জনুষা -জন্ম হইতেই/ সুজাতাস- উত্তম কুলীন/ পৃশ্নি মাতার- জন্মভূমির সন্তান/দিব-দিব্য/ মর্য্যা- দিব্য মনুষ্য/নঃ অচ্ছা- আমার নিকট ভালভাবে /আ জিগাতন -আসুক।
*অনুবাদ:- মানবের মধ্যে কেহ বড় নয় কেহ ছোট নয় এবং কেহ মধ্যম নয়, তাহার সকলেই উন্নতি লাভ করিতেছে।উৎসাহের সঙ্গে বিশেষভাবে ক্রমোন্নতি প্রযত্ন করিতেছে।জন্ম হইতেই তাহারা কুলীন।তাহারা জন্মভূমির সন্তান দিব্য মনুষ্য। তাহারা আমার নিকট সত্য পথে আগমন করুক।(ঋগ্বেদ ৫/৫৩/১১/)
★অজ্যেষ্ঠাস অকনিষ্ঠাস এতে সংভ্রাতরো বাবৃধুঃ সৌভগায়।যুবা পিতা স্বপা রুদ্র এষাং সুদুঘা পৃশ্নিঃ সুদিনা মরুদ্ভ্যঃ।।
শব্দার্থ- অজ্যেষ্ঠা - যাহাদের মধ্যে কেহ বড় নাই এবং /অকনিষ্ঠ সঃ-যাহাদের মধ্যে কেহ ছোট নাই/এতে- ইহারা/ভ্রাতর -ভাইভাই /সৌভগায় -সৌভাগ্য লাভের জন্য/সংবাবৃধু- মিলিয়া প্রযত্ন করিতেছে (যুবা পিতা) তরুণ পিতা/ স্বপা রুদ্রঃ-শুভকর্মা ঈশ্বর /এষাম- ইহাদের জন্য /সু দুঘা- পয়স্বিনী মাতা/ পৃশ্নিঃ- প্রকৃতি / ম-রুদ্ভ্যঃ- ক্রন্দনহীন জীবের জন্য / সুদিনা- উত্তম দিন প্রদান করেন।
*অনুবাদঃ- মনুষ্যের মধ্যে কেহ বড় নয় বা কেহ ছোট নয়।ইহারা ভাই ভাই।সৌভাগ্য লাভের জন্য ইহারা প্রযত্ন করে।ইহাদের পিতা তরুণ শুভকর্মা ঈশ্বর এবং মাতা দুগ্ধবতী প্রকৃতি।প্রকৃতি মাতা ক্রন্দনহীন পুরুষার্থী সন্তানকেই সুদিন প্রদান করেন।
Thursday, March 9, 2017
বর্ণবাদ ও হিন্দু ধর্ম
Hey visitor! I'm Satyajit Roy holding a big name of famous indian film director! but not for nothing at all ��. Trying to write something about something.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment