Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Wednesday, November 21, 2018

মাংস তো মাংসই হয়, গরুর হউক, আর ছাগলের, বা অন্য কোন প্রানীর........। তাহলে হিন্দুরা জানোয়ারের প্রতি আলাদা আলাদা ব্যবহার করে, কেন নাটক করে যে, ছাগল কাটো, কিন্তু গরু কেটো না। এটা কি তাদের মূর্খতা নয় ???

উত্তর - ০১
একদম ঠিক বলেছেন আপনি। পুরুষ
তো পুরুষই হয়..... ভাই হউক, বা স্বামী, বা পিতা, বা
পুত্র।
তাহলে চারজনের সাথে আপনি আলাদা আলাদা ব্যবহার
কেন করেন ???
সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য, বা যৌন সুখ পাবার জন্য কি
স্বামীর প্রয়োজনীয়তা আছে ??? ভাই, পুত্র, বা
পিতার সাথেও কি এই একই ব্যবহার করা যেতে পারে,
যা আপনি আপনার স্বামীর সঙ্গে করেন।
এটা আপনার মূর্খতা আর আপনার নাটক নয়....???
উত্তর - ০২
ঘরে আপনি আপনার বাচ্চা আর আপনার স্বামী কে
খাবার জন্য দুধ নিশ্চয় দেন, বা চা কফি তো তৈরি
করেন.....
নিশ্চিত ঐ দুধ গাভী বা মহিষেরই হবে। নাকি আপনি
কুকুরের দুধ দিতে পারেন, বা কুকুরের দুধেরও চা
কফি বানাতে পারেন....???
দুধ তো দুধই, যে কোন প্রানীরই হউক....!!!
এটা আপনাদের মূর্খতা আর আপনাদের নাটক নয়....???
.
প্রশ্ন মাংসের নয়...... আস্থা আর ভাবনার...। যে
ভাবে ভাই, স্বামী, পুত্র, পুত্রী, বোন, মাঁ ইত্যাদি
সম্পর্কে পুরুষদের-মহিলাদের সাথে আমাদের
সম্বন্ধ মাত্র একজন পুরুষ বা মাত্র একজন স্ত্রী
হওয়ার আধারে না চলে ভাবনা আর আস্থার আধারে
সঞ্চালিত হয়..... ঠিক একই প্রকারে গরু, ছাগল বা অন্য
পশুও আমাদের ভাবনা আর আস্থার আধারে ব্যবহৃত
হয়।
.
জবাব - ০৩
এক ইংরেজ স্বামী বিবেকানন্দ কে জিজ্ঞেস
করল :- সবচেয়ে ভাল দুধ কোন জানোয়ারের
হয় ???
স্বামীজি :- মহিষের।
ইংরেজ :- কিন্তু আপনারা ভারতীয়রা তো গরুর দুধ
কে সর্বশ্রেষ্ঠ মানেন......???
স্বামীজি বললেন :- আপনি তো "দুধের"
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছেন সাহেব,
"অমৃতের" সম্পর্কে তো নয়। আর দ্বিতীয়ত,
আপনি জানোয়ারের সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করেছেন...... গাভী তো আমাদের মাতা, কোন
জানোয়ার নয়।
.
.
এই বিষয়ে আমার একটা প্রশ্ন :-
"Save tiger" যারা বলেন তারা সমাজসেবী হয় আর
"Save Dogs" যারা বলেন তারা পশুপ্রেমী....
তাহলে "Save Cow" যারা বলে তারা কট্টরপন্থী
কিভাবে হয়ে যায়.....????

তিলকের উৎপত্তি কিভাবে ?

★ তিলকে কে কোথায় বাস করেন ?
★ শ্রীকৃষ্ণ কেন তিলক পরেন ?
★ শ্রীরাধা কেন তিলক পরেন না ?
★ তিলক ছাড়া সন্ধ্যা-বন্দনা হবে ?
★ কেন যম পালায় তিলক দেখে ?

যজ্ঞো দানং তপো হোমঃ স্বাধ্যায়ঃ পিতৃতর্পণম্।
ব্যর্থং ভব তত্ সর্বমূর্দ্ধপূনড্রং বিনাকৃতং ॥
- পদ্ম পুরাণ
অর্থাৎ, তিলক ব্যতিরেকে যজ্ঞ, দান, তপস্যা, হোম, বেদ শাস্ত্রাদি পাঠ, পিতৃতর্পণাদি ও শুভ কর্ম যাকিছু করা হয় সে সমুদয় বৃথা হইয়া থাকে।

[এখানে অনেকেই কিন্তু তিলকের ফোঁটা দেন সেটা ঠিক নয়। উর্দ্ধপূন্ড্র করে অর্থাৎ গৌড়ীয় বৈষ্ণব যেভাবে পরেন সেইভাবে দিতে হবে।]

তিলকের মহিমা

কপালে তিলক দেখে মনে হয় দেবী,
তা নাহলে শুধু মনে হয় জল-ছবি।
তিলক আর ত্রি-লোকে গোবিন্দের বাস,
ভক্তের মাধ্যমে তাঁর মহিমা প্রকাশ।
তিলক দেখে মুখে আইসে কৃষ্ণ নাম,
মৃত্যুকালে নরকে নিতে পারেনা যম।
শাস্ত্রে আছে তিলকের কত যে মহিমা,
তিলকের মধ্যে বিষ্ণু, ডানে শিব বামে ব্রহ্মা।
তিলক না থাকে তবে কপাল শ্মষাণ,
সর্বকার্যে তিলক করে শুভ শক্তিদান।
শুভ কার্যে কপালে যদি থাকে তিলক,
সর্বলোকে গুন গায় গতি উর্ধ্ব-লোক।
তিলকের উৎপত্তি হয় গোপী পদরেনু,
গোবিন্দের কপালে তিলক বাজায় বেনু।
তিলক থাকে গোপীদের চরণ কমলে,
ভক্তের মহিমা বাড়াতে কৃষ্ণের কপালে।
গোপী পদরেনু তাই রাধার কপালে তিলক নাই,
তিলক বিনে গুরু-কৃষ্ণ সেবা বিফলে গেল ভাই।

[একবার কিছু ভক্ত সন্ধ্যা আহ্নিক করে মহাপ্রভুকে প্রণাম নিবেদন করলেন। তখন মহাপ্রভু জানতে চাইলেন সন্ধ্যা আহ্নিক করেছ ? ভক্তেরা হাঁ বলেন। প্রভু তখন বললেন, তিলক ব্যতিরেকে সন্ধ্যা আহ্নিক হয়নি যাও তিলক করে পূনরায় সন্ধ্যা আহ্নিক করে আস।]

হরে কৃষ্ণ।।

Wednesday, November 14, 2018

বেস্ট আজকের ডিল রেফার কোড - 100% Authentic AjkerDeal referral Code

বিজ্ঞাপনঃ
আজকের ডিল এপটি ব্যবহার করে প্রতিদিন সহজে আয় করুন। টাকা জমিয়ে শপিং করুন যতো খুশি! এপটি(AjkerDeal) প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে প্রথমে সাইন আপ করুন। তারপর ব্যবহার করুন এই রেফার কোডটি '1774525327' আপনি সাথে সাথে ৫০ টাকা পেয়ে যাবেন।
তাছাড়া এপটিতে প্রতিদিন একবার ঢুকলেই পাবেন ৩ টাকা বোনাস।

Thursday, August 23, 2018

প্রশ্নঃ আমরা ধান দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করি কেন?

আমরা ধান দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করি কেন?

প্রাচীন আর্যসমাজে ধান ছিল ধনের প্রতীক। অন্যদিকে দূর্বা হচ্ছে দীর্ঘায়ুর প্রতীক। দূর্বা সহজে মরে না, প্রচণ্ড রোদ বা বর্ষায় পঁচে গেলেও আবার দূর্বা বেঁচে ওঠে। আর এই কারনে দূর্বার আরেক নাম অমর। ধান-দূর্বা মস্তকে দেয়া অর্থ সম্পদশালী হও ও দীর্ঘায়ু লাভ কর।

কিন্তু যিনি আশীর্বাদ করবেন তিনি এই প্রতীকের মর্ম না বুঝলে এই আশীর্বাদ আনুষ্ঠানিকতায় পর্যবসিত হয়।।
হরে কৃষ্ণ।।

Sunday, August 12, 2018

হিন্দুদের মূর্তি পুজো কি এবং কেন---- ??? ঈশ্বর সাকার নাকি নিরাকার-----???

অনেকেই সনাতন ধর্মের মূর্তি পূজা নিয়ে প্রশ্ন করেন। এ প্রশ্ন যে শুধু অন্য ধর্মের
লোকেরা করেন তাই নয় বরং অনেক সনাতন ধর্মাবলম্বীরাও করেন। আজ
তাই আপনাদের মূর্তি পূজো কি এবং কেন করা হয় তা সনাতন দর্শনের
আলোকে তুলে ধরব।
মূর্তি পূজোর স্বরূপ জানতে হলে প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে ঈশ্বর ও দেবতা বলতে সনাতন দর্শনে কি বলা হয়েছে।
ঈশ্বর ও দেবতাঃ
প্রথমেই বলে রাখা দরকার সনাতন দর্শনে বহুঈশ্বরবাদের স্থান নাই
বরং আমরা একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী। হিন্দু শাস্ত্র মতে, ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়। সনাতন দর্শন বলে, ঈশ্বর স্বয়ম্ভূ অর্থাৎ ঈশ্বর নিজে থেকে উৎপন্ন, তার কোন
স্রষ্টা নেই, তিনি নিজেই নিজের স্রষ্টা। আমাদের প্রাচীন ঋষিগন বলে গিয়েছেন, ঈশ্বরের কোন নির্দিষ্ট রূপনেই(নিরাকার ব্রহ্ম) "না তাস্তি প্রতিমা আস্তি" তার কোন প্রতিমা,ছবি,মুর
্তি নাই। তাই তিনি অরূপ,তবে তিনি যে কোন
রূপধারন করতে পারেন কারণ তিনিই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
ঋকবেদে বলা আছে, ঈশ্বর ‘একমেবাদ্বিতীয়ম’- ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়। ঈশ্বর বা ব্রহ্ম (ব্রহ্মা নন) সম্পর্কে আরও বলা হয়,
‘অবাংমনসগোচর’ অর্থাৎ ঈশ্বরকে কথা(বাক), মন বা চোখ
দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না, তিনি বাহ্য জগতের অতীত।
ঈশ্বর সম্পর্কে ঋকবেদে বলা আছে- ‘একং সদ বিপ্রা বহুধা বদন্তি (ঋক-১/৬৪/৪৬)
অর্থাৎ সেই এক ঈশ্বরকে পণ্ডিতগণ বহুনামে বলে থাকেন।
‘একং সন্তং বহুধন কল্পায়ন্তি’ (ঋক-১/১১৪/৫) অর্থাৎ সেই এক ঈশ্বরকে বহুরূপে কল্পনা করা হয়েছে।
‘দেবানাং পূর্বে যুগে হসতঃ সদাজায়ত’ (ঋক-১০/৭২/৭) অর্থাৎ
দেবতারও পূর্বে সেই অব্যক্ত (ঈশ্বর) হতে ব্যক্ত জগত উৎপন্ন হয়েছে।
ঈশ্বর এক কিন্তু দেবদেবী অনেক।
তাহলে দেব দেবী কারা? মনে রাখতে হবে দেব দেবীগণ ঈশ্বর নন। ঈশ্বরকে বলা হয় নির্গুণ অর্থাৎ জগতের সব গুনের(quality) আধার তিনি।
আবার ঈশ্বর সগুনও কারণ সর্ব শক্তিমান ঈশ্বর চাইলেই
যে কোন গুনের অধিকারী হতে পারেন এবং সেই গুনের প্রকাশ তিনি ঘটাতে পারেন ।
দেব দেবীগন ঈশ্বরের এই সগুনের প্রকাশ।অর্থাৎ ঈশ্বরের এক একটি গুনের সাকার প্রকাশই দেবতা। ঈশ্বর নিরাকার কিন্তু তিনি যে কোন রূপে সাকার হতে পারেন আমাদের সামনে, কারণ তিনি সর্ব ক্ষমতার অধিকারী।
যদি আমরা বিশ্বাস করি ঈশ্বর সর্বশক্তিমান তাহলে নিরাকার ঈশ্বরের সাকার গুনের প্রকাশ খুবই স্বাভাবিক।তাই ঈশ্বরের শক্তির স্বগুন রূপদুর্গা, কালী, পার্বতী;বিদ্যার স্বগুন রূপসরস্বতী; ঐশ্বর্যের সগুনরূপলক্ষ্মী, মৃত্যুর রূপযম। তেমনি ঈশ্বর যখন সৃষ্টি করেন তখন ব্রহ্মা ( ব্রহ্ম নয়), যখন পালন করেন তখন বিষ্ণু আর প্রলয়রূপে শিব।এজন্য বলা হয়ে থাকে ঈশ্বরই ব্রহ্মা,তিনিই বিষ্ণু, তিনিই শিব।
তাহলে আমরা এখন বুঝতে পারছি দেব দেবী অনেক হতে পারে কিন্তু ঈশ্বর এক
এবং দেবতাগণ এই পরম ব্রহ্মেরই বিভিন্ন রূপ। তাই হিন্দুরা বহু দেবোপাসক(বস্তুত
দেবোপাসনা ঈশ্বর উপাসনাই) হতে পারে তবে বহুঈশ্বরবাদী নন।
এতক্ষন আপনাদেরকে বললাম ঈশ্বর আর দেবতার পার্থক্য। এখন বলব
তাহলে আমরা কেন এ সকল দেব দেবীগণের মূর্তি পূজা করি।
মূর্তি পূজার রহস্যঃ
মানুষের মন স্বভাবতই চঞ্চল। পার্থিব জগতে আমাদের চঞ্চল মন নানা কামনা বাসনা দিয়ে আবদ্ধ। আমরা চাইলেই এই
কামনা বাসনা বা কোন কিছু পাবার আকাংক্ষা থেকে মুক্ত
হতে পারি না। (ধরুন একজনশিক্ষার্থী তাঁর শিক্ষা জীবনের বাসনা থাকে পরীক্ষায় প্রথম হওয়া। এ জন্য সে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনা করে।)
তীব্র গতির এই মনকে সংযত করা, স্থির করার ব্যবস্থা করা হয় এই
সগুনঈশ্বরের বিভিন্ন রুপের মাধ্যমে।
মনে রাখতে হবে আমরা কখনই ঈশ্বরের বিশালতা বা অসীমতা কে আমদের
সসীম চিন্তা দিয়ে বুঝতে পারব না। বরং সর্বগুণময় ঈশ্বরের কয়েকটি বিশেষ গুনকেই
বুঝতে পারব। আর এ রকম এক একটি গুনকে বুঝতে বুঝতে হয়ত কোন
দিন সেই সর্ব গুণময়কে বুঝতে পারব।আর মূর্তি বা প্রতিমা হল এসকল গুনের
রূপকল্প বা প্রতীক।
এটা অনেকটা গনিতের সমস্যা সমাধানের জন্য ‘x’ ধরা।
আদতে x কিছুই নয় কিন্তু এক্স ধরেই হয়ত আমরা গনিতের সমস্যার উত্তর
পেয়ে যাই। অথবা ধরুন জ্যামিতির ক্ষেত্রে আমরা কোন কিছু বিন্দু
দিয়ে শুরু করি। কিন্তু বিন্দুর সংজ্ঞা হল যার দৈর্ঘ, প্রস্থ ও বেধ
নাই কিন্তু অবস্থিতি আছে –
যা আসলে কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়। অথচ এই বিন্দুকে আশ্রয় করেই
আমরা প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতা থেকে হিমালয়ের
উচ্চতা সব মাপতে পারি। আবার ধরুন ভূগোল পড়ার সময় একটি গ্লোব
রেখে কল্পনা করি এটা পৃথিবী আবার দেয়ালের ম্যাপ
টানিয়ে বলি এটা লন্ডন, এটা ঢাকা এটা জাপান। কিন্তু ঐ
গ্লোব বা ম্যাপ কি আসলে পৃথিবী? অথচ ওগুলো দেখেই আমরা পৃথিবী চিনছি।
তেমনি মূর্তির রূপ কল্পনা বা প্রতিমা স্বয়ং ঐসকল দেবতা নন তাঁদের প্রতীক, চিহ্ন
বা রূপকল্প। এগুলো রূপকল্প হতে পারে কিন্তু তা মনকে স্থির করতে সাহায্য করে এবং ঈশ্বরের বিভিন্ন গুনসম্পর্কে ধারনা দেয়, শেখায় ঈশ্বর সত্য। সব শেষে পরম ব্রহ্মের কাছে পৌছাতে সাহায্য করে। হিন্দু ধর্মে পূজা একটি বৈশিষ্ট্য।
কল্পনায় দাড়িয়ে সত্য উত্তরণই পূজার সার্থকতা। আমাদের ধর্মে ঈশ্বরের নিরাকার ও সাকারউভয় রূপের উপাসনার বিধান আছে।
নিরাকার ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নাই, থাকা সম্ভবও না।
যারা ঈশ্বরের অব্যক্ত বা নিরাকার উপাসনা করেন তাঁদের
বলে নিরাকারবাদি। আর যারা ঈশ্বরের সাকার রূপের
উপাসনা করেন তাঁরা সাকারবাদি।
এজন্য গীতায় বলা আছে, যারা নিরাকার, নির্গুণ ব্রহ্মের
উপাসনা করেন তারাও ঈশ্বর প্রাপ্ত হন।তবে নির্গুণ উপাসকদের কষ্ট বেশি। কারণ নিরাকার ব্রহ্মে মনস্থির করা মানুষের পক্ষে খুবই ক্লেশকর।
তবে কি হিন্দুরা পৌত্তলিকঃ
অন্য ধর্মের লোকেরা সনাতন দর্শন সম্পর্কে না জেনেই মূর্তি পূজা দেখে মন্তব্য করে বসেন হিন্দুরা পৌত্তলিক। কিন্তু সঠিক দর্শন জানলে তাঁদের এ ভুল ধারনা ভাঙবে।আগেই বলেছি আমাদের দেবতা অনেক কিন্তু ঈশ্বর এক। ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই। দেবতারা হলেন ঈশ্বরের এক একটি রূপের বা গুনের প্রকাশ।মূর্তি বা প্রতিমা হল সে সকল গুনের প্রতীক, চিহ্ন বা রূপকল্প। সব ধর্মেই এমন রূপকল্প, চিহ্ন বা প্রতীক আছে যা তাঁদের কাছে পবিত্র। যেমন ধরুন খৃস্টানদের গির্জায় মাতা মেরী বা ক্রুশবিদ্ধ যীশুর প্রতিমা থাকে যার সামনে তাঁরা নতজানু হয়ে প্রার্থনা করে। আবার ধরুন মুসলিমরা কাবাশরীফকে পবিত্র মনে করে চম্বন করে কিংবা কোন
কাগজে আরবিতে আল্লাহ লেখা থাকলে তাকে সম্মান দেয়, তাকে যেখানে সেখানে ফেলে দেয় না। তাহলে ঐ কাগজখানা কি আল্লাহ নিজে? না।
কিন্তু তারপরও তাকে সম্মান করে কারণ তা আল্লাহর নাম ওটা দেখে আল্লাহর কথা মনে আসে, তার প্রতি ভালবাসা প্রকাশ পায়।
কেউ কেউ শুন্যপানে চেয়ে প্রার্থনা করেন। তাহলে কি ঐ শুন্যপানে ঈশ্বরের বসতি।আসলে তা নয়।কিন্তু আমারা তো এভাবে প্রার্থনা করি। এভাবে চিন্তা করলে দেখা যায়
জগতের সবাই পৌত্তলিক। এ প্রসঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দের একটি ঘটনার
কথা বললে আপনারা বুঝতে পারবে। পরিব্রাজক স্বামী বিবেকানন্দ
তখন আলোয়ারের মহারাজের অতিথি। আলোয়ার রাজ কথাপ্রসঙ্গে স্বামীজিকে জানালেন যে মূর্তি পূজায় তিনি বিশ্বাস করেন না।
স্বামীজি একথা শুনে মহারাজার একটি চিত্র আনতে বললেন এবং রাজার দেওয়ানকে বললেন ওই ছবির উপর থুথু ফেলতে। সমস্ত রাজসভা নিঃশব্দে এই দৃশ্য
দেখতে লাগল। দেওয়ান স্বামিজির নির্দেশ পালনে অসমর্থ হলেন, তখন
স্বামী জি বললেন, 'এই ছবি তো একটি রং করা কাগজ মাত্র,
এই ছবি তো আর রাজা নয়, তাহলে এর উপর থুথু ফেলতে অসুবিধা কোথায় ? '
স্বামীজির বারংবার নির্দেশ সত্ত্বেও দেওয়ান যখন রাজার ছবিতে থুথু ফেলতে পারলেন না তখন স্বামীজি রাজাকে বুঝিয়ে বললেন, '' ফটোগ্রাফ তো একটি জড়বস্তু, একখণ্ড রং করা কাগজ মাত্র । তবু ওই ছবিটি আসল মানুষটিকে মনে করিয়ে দেয়। ছবিটির
দিকে দেখলে আমরা ভাবিনা যে নিছক কোনও রং করা কাগজ দেখছি।
ঠিক তেমনই আমরা যখন মাটির মূর্তি পূজা করি আমরা মনে করি স্বয়ং ভগবানকেই পূজা করছি। আমরা সে সময় কখনও মনে করিনা আমরা কোনও জড় মূর্তি বা খড় বা মাটির উপাসনা করছি। আমরা দেবতার মূর্তিকে শুধুমাত্র প্রতীক মনে করি এর বেশি কিছু নয়। এজন্য পূজার সময় পূজারী ব্রাহ্মণগন মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে প্রতিমায়
প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন অর্থাৎ ধরে নেয়া হয় দেবতাগন ঐ প্রতিমায় ভাস্বর হয়ে উঠবেন।
আবার কাঠমাটির প্রতিমা যে ঐ সকল দেবতা নয় তার প্রমানমেলে পূজার পর প্রতিমাগুলোকে জলে বিসর্জন দিয়ে।
যদি প্রতিমাকেই ঐ সকল দেবতা মনে করা হত তাহলে নিশ্চয় কেউ তা জলে বিসর্জন দিত না। তাই হিন্দুর দেবমূর্তি পুতুল নয়। তা চিন্ময় ভগবানেরই প্রতীক।
সনাতন ধর্মে ঈশ্বরের নিরাকার ও সাকার উভয় রূপের উপাসনার বিধান
আছে। যারা ঈশ্বরের অব্যক্ত বা নিরাকার উপাসনা করেন তাঁদের বলে নিরাকারবাদি। আর যারা ঈশ্বরের সাকার রূপের
উপাসনা করেন তাঁরা সাকারবাদি।
এজন্য স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন,
‘পুতুল পূজা করে না হিন্দু,
কাঠ মাটি দিয়ে গড়া।
মৃন্ময়ী মাঝে চিন্ময়ী হেরে,
হয়ে যাই আত্মহারা।‘
এখন প্রশ্ন আসতে পারে আমরা কেন তাহলে নিরাকার ঈশ্বরের পূজা না করে সাকার ঈশ্বরের পূজা করি? জাগতিক মোহ থেকে সাকার
পূজা করা হয়ে থাকে। আগেই বলেছি যে বিদ্যা চায় সে সরস্বতী দেবীর প্রার্থনা করে,
যে অর্থ চায় সে লক্ষ্মী দেবীর প্রার্থনা করে, তেমনি যে বিভিন্ন বাধা বিপত্তি থেকে উদ্ধার চায় সে দুর্গা পূজা করে।
এজন্য গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেন,“জড় বাসনার দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃতহয়েছে তাঁরাই অন্য দেবদেবীর পূজা করেন এবং স্বীয় স্বভাব অনুসারে নিয়ম পালন
করে দেবতাদের উপাসনা করেন”।
দেবতার রূপও গুনমানুষের বিচিত্র রুচিকে তৃপ্ত করে ও চঞ্চল
মনকে অচঞ্চল করতে সহায়তা করে।
আমাদের মন যে চঞ্চল তার উদাহরণ মন্দির বা উপাসনালয়ে গেলে মনে
পবিত্রতা আসে, মন প্রশান্ত হয়,মনে ভক্তি জেগে ওঠে। অথচ ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজমান।
তাহলে কেন শুধুমাত্র মন্দিরে গেলেই মনে বেশি ভক্তিভাব আসে।
আসলে জাগতিক মোহে আবদ্ধ হয়ে আমরা ঈশ্বরের এই সর্ববিরাজমানতা ভুলে যাই।আর যারা সবখানে ঈশ্বরের এই অস্তিত্ব অনুভব করতে পারেন তারাই নিরাকার উপাসনার যোগ্য।
তেমনি একটি ছোট বাচ্চাকে কিংবা কোন অজ্ঞ
ব্যক্তিকে নিরাকার ঈশ্বর সম্পর্কে ধারনা দেবেন, সে বুঝবে না বরং সে সহজে বুঝবে
সাকার দেবতারূপ ঈশ্বরকে। এই সাকার রূপের প্রতিমা দেখে সহজেই বুঝতে শিখবে ঈশ্বরের গুনের কথা,শক্তির স্বরূপ সম্পর্কে। এভাবে শুরুতে সাকার উপাসনার মধ্য
দিয়েই নিরাকার উপাসনার যোগ্যতা অর্জন হয় আমাদের।
তবে সব কিছুই যেহেতু সেই অসীমেরই অংশ তাই শ্রদ্ধা সহকারে দেবতার পুজাও
পরোক্ষভাবে ঈশ্বরের উপাসনা।
এজন্য সনাতন সংস্কৃতিতে দেখা যায় শুধু মাত্র দেবতা নয় উদ্ভিদ,উপকারী প্রাণী এমনকি মনুষ্য পুজাও করে থাকেন অনেকে। কুমারী পুজো এর উদাহরণ।
তবে দেবোপাসনায় কাম্য বস্তু লাভ হলেও ঈশ্বর লাভ হয় না। শুধুমাত্র
পরম ঈশ্বরের উপাসনাতেই ঈশ্বর লাভ হয়।এজন্য গীতায় শ্রীকৃষ্ণ
বলেন, ‘যন্তি মদযাজীনহপি মাম’ (গীতা-৯/২৫) অর্থাৎ একমাত্র আমার ভক্তগণই আমাকে প্রাপ্ত হন।
মূর্তি বা ভগবত বিগ্রহ প্রতীক বটে।।

Thursday, August 9, 2018

Must Watch. Iskcon Money Scam - The Real Hare Krishna - Short Film - Madhavas Rock Band

Wednesday, August 8, 2018

প্রশ্নঃ গীতায় বলা হয়েছে, মৃত্যুর সময় যদি কেউ "কৃষ্ণ পাদপদ্ম স্মরণ" করতে পারে, সে পরমগতি প্রাপ্ত হয় । তা হলে সারা জীবন পাপকর্ম করেও যদি মরণকালে কৃষ্ণ স্মরণ কেউ করে তারও উদ্ধার হবে?

উত্তরঃ হ্যাঁ, সেও পরমগতি প্রাপ্ত হবে । 
কারণ যিনি শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত হলেন, তার সমস্ত পাপ থেকে পরম নিয়ন্তা শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে উদ্ধার করবেন বলে শ্রীঅর্জুনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । 
অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ ।। ( গীতা 18/66 ) 
"আমি তাকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করব । এই বিষয়ে চিন্তা করার কিছু নেই ।"

কিন্তু বিপদটি হচ্ছে সেইখানে, যে পাপীদের কাছে মৃত্যু যখন উপস্থিত হয়, সাধারণত শ্রীকৃষ্ণকে স্মরণ করবার মানসিকতা তাদের একটুও থাকে না । বিষয় ভোগ চিন্তায় অভ্যস্ত ব্যক্তির "শ্রীকৃষ্ণপাদপদ্মে মতি" স্থির হয় না । তার হৃদয়ে ভোগবাসনা জমা থাকার জন্য জন্ম- জন্মান্তর ধরে পশু,পাখি, কীট,পতঙ্গাদি হয়ে এই জড় জগতে তাকে বদ্ধ থাকতে হয় ।

শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ উল্লেখ করেছেন...... 
"মৃত্যুর সময়ে আমাদের শেষ চিন্তাটি কি হবে তা নির্ভর করছে আমাদের জীবদ্দশায় আমরা কিভাবে কর্ম করছি তার উপর।"
( আত্মজ্ঞান লাভের পন্থা, 207 পৃঃ )

অর্থাৎ বুঝে নেওয়া উচিত এই যে, "জীবদ্দশায়" যদি আমরা "ভগবদ-কর্মে" নিয়োজিত না হই, "কৃষ্ণভাবনার" অনুশীলন না করি, তা হলে অবশ্যম্ভাবী আসন্ন মৃত্যু কখনই আমাদের পরমধামে উন্নীত হতে "কৃষ্ণস্মরণের সুযোগ" দেবে না ।

তাই বুদ্ধিমান ব্যক্তি জীবনের প্রথম থেকেই "কৃষ্ণভজন" করেন । শৈশব থেকেই "হরিভজন" কর উচিৎ। সব সময়ই "শ্রীকৃষ্ণকে স্মরন" করা উচিৎ এবং কখনই শ্রীকৃষ্ণকে বিস্মৃত হওয়া উচিৎ নয় ।
------হরে কৃষ্ণ

Monday, May 7, 2018

রামের অস্তিত্ব নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলতেন তাদের মুখ পুড়লো।রাম সেতুর নিয়ে ভাইরাল নাসার ভিডিও

See the Video:--- 

https://m.youtube.com/watch?v=2AYTyk0spfc

রামসেতু অর্থাৎ যে  সেতু দ্বারা রামায়ণকালে দক্ষিণ ভারত থেকে শ্রীলঙ্কাকে যুক্ত করা হয়েছিল।মহাকাব্য অনুসারে এই সেতু নির্মাণ করেছিলেন হনুমান এবং ভগবান রামের বিশাল সেনা সীতামাকে সমুদ্র পেরিয়ে উদ্ধার করে আনার জন্য।

যদিও এই বিষয় নিয়ে তর্ক হয়েছে বহুবার ,কিছু বিশেষ রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক ফায়দা উঠবার জন্য সরাসরি তো এমনও মন্তব্য করেছেন যে রাম সেতু কেন রামেরও কোনো অস্তিত্ব ছিল না।কিন্তু হিন্দুত্ববাদীরা বরাবরই মনে প্রাণে বিশ্বাস করেএসেছেন যে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরানো ধর্ম তথা হিন্দু ধর্মে রামের ভগবান অস্তিত ছিল।যাইহোক রামভক্তরাই জয়ী হলেন আরো একবার প্রমান করে যে হিন্দু ধর্ম যতটাই পুরানো ততটাই বিজ্ঞানসম্মত ।আসলে NASA এর তরফে জানানো হয়েছে রাম সেতুর অস্তিত্ব কোনো মিথ্যা নয় এটা ধ্রুব সত্য।এই সম্পর্কিত একটা ভিডিও প্রকাশ করেছে তারা।নাসা এটাও নিশ্চিত করেছে যে রামসেতু হাতে তৈরীকরা এবং সেতুটি কোনো মহামানবের দ্বারা তৈরি ।সবচেয়ে আশ্চর্যকর বিষয় সেতু নির্মাণে ব্যাবহৃত ই ধরণের পাথর ওই এলাকায় পাওয়া যাই না এবং পাথর গুলির বয়স পাথরের নিচে থাকা বালির থেকে বেশি অর্থাৎ পাথর গুলির বয়স ৭০০০ বয়স যেখানে তার নিচে থাকা বালির বয়স ৫০০০ বছর। এমনকি নাসা এটাও অনুমান করেছে যে, পাথরগুলি অতীতে ভাসমান অবস্থাতেই ছিল।

আসুন স্বরবর্ণের অক্ষরগুলো ভক্তিরসে ছন্দে ছন্দে মনে রাখি

অ= অন্তর হোক ভক্তিময়
আ= আরাধনায় পাপক্ষয়

ই= ইন্দ্র হলেন স্বর্গের রাজা
ঈ= ঈশ্বর প্রাপ্তি নয়কো সোজা

উ= উত্তম ভক্তের সঙ্গ কর
ঊ= ঊষাকালে শয্যা ছাড়

ঋ= ঋষি যত ধ্যানে রত
এ= একাদশী মহাব্রত

ঐ= ঐরাবত স্বর্গের হস্তি
ও= ওহে বৈষ্ণব দাও শক্তি
ঔ= ঔদার্য বাড়ায় কৃষ্ণভক্তি।।

Friday, May 4, 2018

সনাতন ধর্মের মাহাত্ম্য (পর্ব ৭) About Sanatan Dharma - the prime religion over the time.

আমাদের পারমার্থিক কর্মে বা শাস্ত্র পাঠে একটি বিষয় আলোচিত হয় যে, এখানে তোমার অধিকার নেই ওখানে আছে! কেন এমন? কি ছিল বৈদিক ঋষিদের উদ্দেশ্য ?
আজকের বিষয় অধিকারীঃ ‘অধিকারী’ বলতে এখানে বেদান্তশাস্ত্রের তাৎপর্য অনুধাবনের অধিকারসম্পন্ন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে। যিনি বেদান্তশাস্ত্রের বিষয় বুঝতে, শাস্ত্রের নির্দেশ যত্নসহকারে পালন করতে এবং সদা সৎকর্মে ব্যাপৃত থাকতে সক্ষম, তিনিই বেদান্ত দর্শনের মর্মকথা অনুধাবনের অধিকারী। এজন্যেই অধিকারীকে প্রথমত ব্রহ্মচর্যাদির অনুষ্ঠানপূর্বক শিক্ষা, কল্প, ব্যাকরণ, নিরুক্ত, জ্যোতিঃশাস্ত্র এবং ছন্দঃশাস্ত্র, এই ছয়টি অঙ্গের সাথে বেদ অধ্যয়ন করবে। এভাবে বেদ অধীত হলে আপাতত বেদার্থের অবগতি হবে। কাম্যকর্ম ও নিষিদ্ধকর্মের অনুষ্ঠান করলে অনুষ্ঠিত কর্মের ফলভোগের জন্য শরীর-পরিগ্রহ বা জন্ম অবশ্যম্ভাবী। শরীরপরিগ্রহ এবং কর্মফলভোগ, উভয়ই বন্ধনের হেতু বা বন্ধন। বন্ধনাবস্থায় মুক্তি অসম্ভব। কারণ, বন্ধন ও মুক্তি পরস্পরবিরুদ্ধ। অতএব কাম্য ও নিষিদ্ধ কর্ম বর্জন করবে। এবং নিত্য, নৈমিত্তিক ও প্রায়শ্চিত্তের অনুষ্ঠান করবে। তাই ‘বেদান্তসার’ গ্রন্থে বলা হয়েছে, যিনি বিধিপূর্বক বেদ-বেদান্ত অধ্যয়ন করে তার মূলমর্ম গ্রহণ করেছেন এবং ইহজন্মে বা জন্মান্তরে কাম্য কর্ম ও শাস্ত্রনিষিদ্ধ কর্ম ত্যাগপূর্বক কেবল নিত্য কর্ম, নৈমিত্তিক কর্ম ও প্রায়শ্চিত্তের অনুষ্ঠানের দ্বারা নিষ্পাপ ও নির্মলচিত্ত হয়েছেন, তিনিই বেদান্ত পাঠের অধিকারী। বেদান্তের অধিকারী সাধন-চতুষ্টয়ের অনুসরণ করে থাকেন। এই সাধন-চতুষ্টয় হলো- (১) বিবেক, (২) বৈরাগ্য, (৩) সাধন-সম্পত্তি ও (৪) মুমুক্ষুত্ব।

‘বিবেক’ বলতে বোঝায় নিত্যানিত্যবস্তুবিবেক। অর্থাৎ কোন্ বস্তু নিত্য, কোন্ বস্তু অনিত্য, নিত্য ও অনিত্য বস্তুর ভেদ কী প্রভৃতি বিষয়ের জ্ঞানই হলো বিবেকজ্ঞান। এই জ্ঞানের দ্বারাই কোন্ বস্তু গ্রহণীয় এবং কোন্ বস্তু বর্জনীয়, তা নির্ধারণ করা সম্ভব। ‘বৈরাগ্য’ বলতে বোঝায় ঐহিক ও পারলৌকিক সকল প্রকার সুখের প্রতি বিরাগ। ‘সাধনসম্পত্তি’ বলতে বোঝায় শম্, দম্, উপরতি, তিতিক্ষা, সমাধান ও শ্রদ্ধা। ‘মুমুক্ষুত্ব’ বলতে বোঝায় ব্রহ্মোপলব্ধি তথা মোক্ষলাভের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা বা ইচ্ছা।

এখানে উল্লেখ্য, আত্মসাক্ষাৎকারের উপযোগী শ্রবণ, মনন ও নিদিধ্যাসন এবং তার অনুকুল বিষয় ছাড়া অন্যান্য সমস্ত বিষয় থেকে অন্তঃকরণের নিয়ন্ত্রণ বা নিগ্রহের নাম শম, এবং এসব বিষয় থেকে বাহ্যকরণ অর্থাৎ চক্ষু, কর্ণ ইত্যাদি ইন্দ্রিয়ের নিগ্রহকে দম বলা হয়। উপরতি হলো সন্ন্যাসাশ্রম গ্রহণপূর্বক শাস্ত্রবিহিত কার্যকলাপ পরিত্যাগ। তিতিক্ষা হলো শীত-তাপ, সুখ-দুঃখ, মান-অপমান ইত্যাদি পরস্পরবিরুদ্ধ প্রতিকুল অবস্থার মধ্যেও কষ্টসহিষ্ণু থাকা। দর্শন, শ্রবণ ইত্যাদি এবং তার অনুকুল বিষয়ে মনের সমাধি বা একাগ্রতা অর্থাৎ তৎপরতার নাম সমাধান। আর গুরুবাক্য এবং বেদান্তবাক্যে বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা বলা হয়।
ক্রমশঃ

নিবেদনে - শ্রীমদ্ভগবদগীতা স্কুল।