Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Saturday, March 25, 2017

শ্রীকৃষ্ণ উবাচঃ

চৈতন্য চরিতামৃত আদি ১/৪

পবিত্র বেদবাক্য

Friday, March 24, 2017

পাপমোচনী একাদশীর মাহাত্ম্য

যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণকে বললেন ----হে জনার্দন! চৈএ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশীর নাম ও মাহাত্ম্য কৃপা করে আমাকে বলুন।শ্রীকৃষ্ণ বললেন —হে ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির! আপনি ধর্মবিষয়ক প্রশ্ন করেছেন।
এই একাদশী সকল সুখের আধার, সিদ্বি প্রদানকারী ও পরম মঙ্গলময়। সমস্ত পাপ থেকে নিস্তার বা মোচন করে বলে এই পবিত্র একাদশী তিথি ‘পাপমোচনী’ নামে প্রসিদ্ধ। রাজা মান্ধাতা একবার লোমশ মুনিকে এই কথা জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তার বর্নিত সেই বিচিএ উপাখ্যানটি আপনার কাছে বলছি। আপনি মনোযোগ দিয়ে তা শ্রবন করুন।প্রাচীনকালে অতি মনোরম ‘চৈএরথ’ পুষ্প উদ্যান মুনিগন বহু বছর ধরে তপস্যা করতেন। একসময় মেধাবী নামে এক ঋষিকুমার সেখানে তপস্যা করছিলেন। মঞ্জুঘোষা নামে এক সুন্দরী অস্পরা তাঁকে বশীভূত করতে চাইল। কিন্তুু ঋষির অভিশাপের ভয়ে সে আশ্রমের দুই মাইল দূরে অবস্থান করতে লাগল । বীনা বাজিয়ে মধুর স্বরে সে গান করত । এক দিন মঞ্জুঘোষা মেধাবীকে দেখে কামবাণে পীড়িতা হয়ে পড়ে। এদিকে ঋষি মেধাবীও অস্পরার অনুপম সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন। তখন সেই অস্পরা মুনিকে নানা হাব-ভাব ও কটাক্ষ দ্বারা বশীভূত করে। ক্রমে কামপরবশ মুনি সাধন-ভজন বিসর্জন দিয়ে তার আরাধ্য দেবকে বিস্মৃত হন। এইভাবে অস্পরার সাথে কামক্রীড়ায় মুনির বহু বছর অতিক্রান্ত হল।মুনিকে আচার-ভ্রষ্ট দেখে সেই অস্পরা দেবলোকে ফিরে যেতে মনস্থ করল।একদিন মঞ্জুঘোষা মেধাবী মুনিকে বলতে লাগল—হে প্রভু, এখন আমাকে নিজ গৃহে ফিরে যাবার অনুমতি প্রধান করুন। কিন্তুু মেধাবী বললেন —হে সুন্দরী! তুমি তো এখন সন্ধ্যাকালে আমার কাছে এসেছ,প্রাতঃকাল পর্যন্ত আমার কাছে থেকে যাও মুনির কথা শুনে অভিশাপ ভয়ে সেই অস্পরা আরও কয়েক বছর তার সাথে বাস করল।এইভাবে বহুবছর (৫৫ বছর ৯ মাস ৭ দিন)অতিবাহিত হল।দীর্ঘককাল অস্পরার সহবাসে থাকলেও মেধাবীর কাছে তা অর্ধরাত্রি বলে মনে হল।মঞ্জুঘোষা পুনরায় নিজস্থানে গমনের প্রার্থনা জানালে মুনি বললেন —এখন প্রাতঃকাল, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি সন্ধ্যাবন্দনা না সমাপ্ত করি, ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি এখানে থাক।মুনির কথা শুনে ঈষৎ হেসে মঞ্জুঘোষা তাকে বলল—হে মুনিবর! আমার সহবাসে আপনার যে কত বৎসর অতিবাহিত হয়ছে, তা এক বার বিচার করে দেখুন। এই কথা শুনে মুনি স্থির হয়ে চিন্তা করে দেখলেন যে তাঁর ছাপ্পান্ন বৎছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। মুনি তখন মঞ্জুঘোষার প্রতি ক্রোধ পরবশ হয়ে বললেন --রে পাপীষ্ঠে, দুরাচারিণী, তপস্যার ক্ষয়কারিনী,তোমাকে ধিক্! তুমি পিশাচী হও। মেধাবীর শাপে অস্পরার শরীর বিরূপ প্রাপ্ত হল।তখন সে অবনতমস্তকে মুনির কাছে শাপমোচনের উপায় জিঞ্জাসা করল। মেধাবী বলেলেন —হে সুন্দরী! চৈএ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া পাপমোচনী একাদশী,সর্বপাপ ক্ষয়কারিনী। সেই ব্রত পালনে তোমার পিশাচত্ব দূর হবে।পিতার আশ্রমে ফিরে গিয়ে মেধাবী বলেলেন —হে পিতা! এক অস্পরার সঙ্গদোষে আমি মহাপাপ করেছি, এর প্রায়শ্চিত্ত কি? তা কৃপা করে আমায় বলুন।
উওরে চ্যবন মুনি বললেন —চৈএ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয় পাপমোচনী একাদশী ব্রতের প্রভাবে তোমার পাপ দূর হবে।পিতার উপদেশ শুনে মেধাবী সেই ব্রত ভক্তিভরে পালন করল।তার সমস্ত পাপ দূর হল।পুনরায় তিনি তপস্যার ফল লাভ করলেন। মঞ্জুঘোষাও ঐব্রত পালনের ফলে পিশাচত্ব থেকে মুক্ত হয়ে দিব্য দেহে স্বর্গে গমন করল।হে মহারাজ! যারা এই পাপমোচনী একাদশী পালন করেন, তাদের পূর্বকৃত সমস্ত পাপই ক্ষয় হয়।এই ব্রতকথা পাঠ ও শ্রবণে সহস্র গো-দানের ফল লাভ হয়।

মুন্ডক উপনিষদ ২মুন্ডক ১খন্ড ৫ শ্লোক

প্রশ্নঃ সৃষ্টির আদিতে কি এক অথবা বহু মানুষের উৎপত্তি হইয়াছিল?
উত্তরঃ আদি সৃষ্টিতে পরমাত্মা বহু যুবক যুবতী উৎপন্ন করেছিল! দেখুন......
" মনুষ্যা ঋষয়শ্চয়ে, ততো মনুষ্যা অজায়ন্ত"
অনুবাদঃ আদিতে অনেক অর্থাত শত শত, সহস্র মনুষ্য উৎপন্ন হয়েছিল।
শতপথ ব্রাহ্মণ ১৪কান্ড, ৩প্রপাটক, ২ব্রাহ্মণ, ৫ কনিকা।
তৎ যজ্ঞং বর্হিষি প্রৌক্ষন্ পুরুষং জাতমগ্রতঃ।
তেন দেবা অযজন্ত সাধ্যা ঋষয়শ্চ।।
অনুবাদঃ সবার প্রথমে প্রকট হয়ে সেই পূজনীয় পুরুষকে হৃদয়ন্তরিক্ষের মধ্যে অভিষিক্ত করে। বিদ্যান লোক, সাধনাকারী এবং যে ঋষি সকল সেই পুরুষ দ্বারা (প্ররিত হয়ে) যজ্ঞদ্বারা উপাসনা করে।
যজুর্বেদ ৩১ অধ্যায়, মন্ত্র ৯।
তস্মাদগ্নিঃ সমিধো যস্য সূর্যঃ সোমাৎ পর্জন্য ওষধয়ঃ পৃথিব্যাম্।
পুমান্ রেতঃ সিঞ্চতি যোষিতায়ং বহ্বীঃ প্রজাঃ পুরুষাৎ সম্প্রসূতাঃ।।
অনুবাদঃ সূর্য যাহার কাষ্টস্থানীয় সেই অগ্নি (দ্যুলোক) এই পুরুষ হইতে জাত। দ্যুলোকরূপ অগ্নিদ্বারা নিষ্পন্ন সোমরস হইতে অথবা দ্যুলোক সম্ভূত চন্দ্র হইতে মেঘ এবং মেঘ হইতে পৃথিবীতে শস্যাদি জন্মে। অনন্তর প্রাণিদেহের উপাদানভূত সেই শস্য দ্বারা পুষ্ট হইয়া পুরুষ স্ত্রীতে বীর্য সিঞ্চন করে। এইরূপে ক্রমানুসারে পরমপুরুষ হইতে বহু প্রজা উৎপন্ন হয়।

Thursday, March 23, 2017

শ্রীমদ্ভগবদগীতা অঃ৪/শঃ১৮

শ্রীমদ্ভগবদগীতা অঃ৪/শঃ৩৫

পবিত্র বেদবাক্য

আনন্দ মার্গ

মানবদেহের প্রতিটি চক্রে প্রধান স্নায়ুকেন্দ্রগুলি অবস্থিত। মানবদেহ পাঞ্চভৌতিক (ক্ষিতি-অপ-তেজ-মরুৎ-ব্যোম) উপাদানে নির্মিত। এই পাঞ্চভৌতিক তত্ত্বসমূহ প্রাণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এই প্রাণকে আবার নিয়ন্ত্রণ করছে মন। অর্থাৎ মন পরোক্ষভাবে আর প্রাণ প্রত্যক্ষভাবে ভূত সমূহের নিয়ন্ত্রক। বিভিন্ন ভূতকে পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্যে মনের যে সকল দৈশিক অধিষ্ঠান আছে সেগুলাকে বলা হয় চক্র।
চক্র শব্দটি একটি সংস্কৃত শব্দ। আর প্লেক্সাস একটি ল্যাটিন শব্দ। মানব দেহের মেরুদণ্ডের শেষ কশেরুকার মধ্যবিন্দুর স্নায়ুসমষ্টির একটি কেন্দ্র। এটি মূলাধারচক্রের কেন্দ্রবিন্দু। এই চক্রটি সম্পূর্ণ মানবদেহের সাম্যবস্থা বজায় রাখে। এই চক্রে চারটি বৃত্তির অধিষ্টান-
★ধর্ম (মানস-আধ্যাত্মিক এষণা)
★অর্থ (মানসিক এষণা)
★কাম (দৈহিক বা মানসিক এষণা)
★মোক্ষ (আধ্যাত্মিক এষণা)
মেরুদণ্ডের পেছনে জনন অঙ্গের মূলদেশে স্বাধিষ্ঠান চক্রের অবস্থান। এই চক্রটি ছয়টি বৃত্তির অধিষ্ঠান কেন্দ্র-
★অবজ্ঞা (অন্যকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা)
★মূর্চ্ছা (মানসিক অসাড়তা, সাধারণ বুদ্ধির অভাব)
★প্রশ্রয় (নিজেকে সংযত না করা)
★অবিশ্বাস (বিশ্বাসের অভাব)
★সর্বনাশ (মৃত্যু নিশ্চিত বারবার এই চিন্তা)
ক্রুরতা (নৃশংসতা)
এরপর রয়েছে মণিপুর চক্র। মানবদেহের নাভিকেন্দ্রে এই চক্রের অধিষ্ঠান। এই চক্রটি দশটি বৃত্তিকে নিয়ন্ত্রিত করে-
★লজ্জা
★পিশুনতা
★ঈর্ষা (পরশ্রীকাতরতা)
★সুষুপ্তি (জড়তা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা)
★বিষাদ (বিষন্নতা)
★কষায় (খিটখিটে মেজাজ)
★তৃষ্ণা ( কোনকিছু প্রাপ্তির জন্যে আকুল আকাঙ্ক্ষা)
★মোহ (বুদ্ধিচ্ছন্নতা)
★ঘৃণা
★ভয়
এর পরের চক্রটি অনাহত চক্র। অধিষ্ঠান বক্ষদেশের কেন্দ্রবিন্দুতে। এই চক্রটি বারোটি বৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে-
★আশা
★চিন্তা( দুশ্চিন্তা)
★চেষ্টা
★মমতা
★দম্ভ
★বিবেক
★বিকলতা (ভয়সঞ্জাত মনসিক জড়তা)
অহংকার
★লোলুপতা (লালসা)
কপটতা
★বিতর্ক( অসংযত, অতিরিক্ত তর্ক প্রবণতা)
অনুতাপ
পরের চক্রটি বিশুদ্ধ চক্র। এটির অধিষ্ঠান কণ্ঠনালিতে। এই চক্রটি ষোলটি বৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে-
★ষড়জ (ময়ূরের আবাজ)
★ঋষভ (ষাড়ের আবাজ)
★গান্ধার (ছাগলের আবাজ)
★মধ্যম (হরিণের আবাজ)
★পঞ্চম (কোকিলের আবাজ)
★ধৈবত (গর্দভের আবাজ)
★নিষাদ (হাতির আবাজ)
★ওং (সৃষ্টি-স্থিতি-লয়ের বীজমন্ত্র)
★হুং (কুলকুণ্ডলিনী শক্তির উত্থানের বীজমন্ত্র)
★ফট (কোন তত্ত্বকে বাস্তবায়িত করা)
★বৌষট (জাগতিক জ্ঞানের অভিব্যাক্তি)
★বষট ( সূক্ষ স্তরে কল্যাণ)
★স্বাহা (মহৎ কার্য সম্পাদন করা)
★নম: (পরমপুরুষের কাছে আত্মসমর্পণ)
★বিষ (বিকর্ষণমূলক বা ঋণাত্মক মানসিকতার প্রকাশ)
★অমৃত (মধুরতার অভিপ্রকাশ)
সর্বশেষ চক্রটি আজ্ঞা চক্র। এটির অধিষ্ঠান দু'টি ভ্রুর মধ্যবিন্দুতে। এই চক্রটি দুটি বৃত্তিকে নিয়ন্ত্রিত করে-
★অপরা (জাগতিক জ্ঞান)
★পরা ( আধ্যাত্মিক জ্ঞান)
এই চক্রগুলোতেই উপগ্রন্থি সমূহের (পঞ্চাশটি) উপকেন্দ্র গুলোও অবস্থিত। চক্রের সঙ্গে সংযুক্ত উপগ্রন্থিরাই মনের বৃত্তিসমূহকে ( বৃত্তির সংখ্যাও পঞ্চাশ) প্রভাবিত তথা নিয়ন্ত্রণ করে। এই বিজ্ঞানটি (জৈব-মনস্তত্ত্ব) এখনও মানুষের কাছে অধরাই রয়ে গেছে।
শরীর ও মনের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। মনের অভিপ্রকাশ বৃত্তির মাধ্যমে হয়, আর বৃত্তির প্রাবল্য শরীরের গ্রন্থির ওপর নির্ভর করে। প্রতিটি গ্রন্থি থেকে বিশেষ বিশেষ রস ক্ষরিত হয়। রসক্ষরণে কোন গোলযোগ থাকলে কিংবা গ্রন্থির স্থানে কোন ত্রুটি থাকলে বিশেষ বিশেষ বৃত্তির প্রাবল্য দেখা দেয়। এই কারণেই দেখা যায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে নীতিজ্ঞান মেনে চলতে পারে না। সাধনা করা উচিত বোঝে কিন্তু সাধনায় মন একাগ্র করতে পারে না। বৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে তার গ্রন্থির ত্রুটি দূর করতে হবে। *আসন বহুল পরিমাপে এই কাজে সাধককে সাহায্য করে। তাই আসন- সাধনার একটা বড় অঙ্গ।
-শ্রী শ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর প্রবচন থেকে

শ্রীমদ্ভগবদগীতা অঃ২/শঃ১৭

পবিত্র বেদবাক্য

কলিকালে নামরূপে কৃষ্ণ অবতার

আমাদের চারটি যুগ রয়েছে যথাঃ- সত্যযুগ, ত্রেতাযুগ, দ্বাপরযুগ ও কলিযুগ। বর্তমান সময় কলিযুগের অর্ন্তভুক্ত । প্রত্যেক যুগে ভগবানকে সন্তুষ্টি বিধানের জন্য আলাদা ভাবে ধর্মানুষ্ঠান করা হত। এ সম্ভন্ধে শ্রীমদ্ভাগবতের (১২/৩/৫২ শ্লোকে) শুকদেব গোস্বামী পরিক্ষিত মহারাজকে বলেন -
“ কৃতে যদ্ধ্যায়তো বিষ্ণুং ত্রেতায়াং ঘজতো মখৈঃ।
দ্বাপরে পরিচর্যায়াং কলৌ তদ্ধরিকীর্তনাৎ ।। ”
অথাৎ, সত্যযুগে বিষ্ণুকে ধ্যান করে, ত্রেতাযুগে যজ্ঞের মাধ্যমে যজন করে এবং দ্বাপর যুগে অর্চন আদি করে যে ফল লাভ হত, কলিযুগে কেবলমাত্র “ হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র” কীর্তনে সেই সকল ফল লাভ হয়।
অথাৎ, সত্যযুগে যুগধর্ম ছিল ভগবান বিষ্ণুর ধ্যান করা। ধ্যানের মাধ্যমে ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের প্রয়াস করা হত। বৈদিক শাস্ত্রমতে ধর্মের চারটি স্তম্ভ যথাঃ- সত্য, দয়া, তপ ও শৌচ।
সত্যযুুগে এই চারটি স্তম্ভই বর্তমান ছিল। তখন চারভাগ ধর্ম ছিল এবং মানুষের আয়ুষ্কাল ছিল ১ (এক) লক্ষ বছর। ভগবানকে সন্তুষ্টি করার জন্য হাজার হাজার বছর ধ্যান (তপস্যা) করা হত। ভগবানকে লাভ করা খুবই কষ্ঠসাধ্য ছিল।
ত্রেতাযুগে যুগধর্ম ছিল যজ্ঞের মাধ্যমে ভগবানের সন্তুষ্টি বিধান করা। বিভিন্ন রকমের উপাদান যজ্ঞের অগ্নিতে আহুতির মাধ্যমে ভগবানকে আহবান করা হত। যজ্ঞে বিভিন্ন প্রকার বৈদিক মন্ত্র উচ্চারিত হত। এই যুগে তিন ভাগ ধর্ম এবং এক ভাগ অধর্ম ছিল। মানুষের আয়ু ছিল ১০ (দশ) হাজার বছর।
দ্বাপর যুগে যুগধর্ম ছিল অর্চন। এ যুগে দুই ভাগ ধর্ম ও দুই ভাগ অধর্ম ছিল। মানুষের আয়ুস্কাল ছিল ১ (এক) হাজার বছর। মানুষ অর্চনের মাধ্যমে ভগবানকে সন্তুষ্ট করার জন্য চেষ্টা করত।
কলিযুগের যুগধর্ম হচ্ছে নাম সংকীর্তন করা। কলিযুগে তিন ভাগ অধর্ম এবং এক ভাগ ধর্ম। মানুষ অল্প আয়ূ, অল্প মেধা,কলহ প্রিয়, এবং অধার্মিক। কিন্তু কলি যুগে সবচেয়ে বড় আশীবাদ হল খুব অল্পতেই হরিনাম সংকীর্তন করার মাধ্যমে ভগবানকে লাভ করতে পারা যায়। চৈতন্যচরিত্রামৃতে বর্ণনা হয়েছে -
“ কলিকালে নামরূপে কৃষ্ণ অবতার।
নাম হৈতে হয় সর্বজগৎ নিস্তার ।।”
এই কলিযুগে ভগবানের দিব্যনাম “ হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র ” হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের অবতার। কেবলমাত্র এই দিব্যনাম গ্রহন করার ফলে, যে কোন মানুষ সরাসরিভাবে ভগবানের সঙ্গ লাভ করতে পারেন। যিনি তা করেন তিনি অবশ্যই জড় জগত থেকে উদ্ধার লাভ করেন। এই নামের প্রভাবেই কেবল সমস্ত জগৎ নিস্তার পেতে পারে।
অন্যান্য যুগে অনেক বছর সাধনার ফলে যা লাভ হতো না, কলিযুগে শুধুমাত্র নিরন্তন হরিনামের মাধ্যমে তা অতি সহজেই লাভ হয়।
--শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর

কর্মযোগ

ঈশ্বরে কর্মার্পণ তত্ত্ব

সর্বেন্দ্রিয় দ্বারা যা কিছু কর্ম কর, সকলই আমাতে অর্পণ কর। শ্রীমদ্ভাগবতেও ঠিক এই কথাই আছে-
“কায়েন বাচা মনসেন্দ্রিয়ৈর্বা বুদ্ধ্যাত্মনা বাহনুসৃতস্বভাবাৎ।
করোতি যদ্যৎ সকলং পরস্মৈ নারায়ণায়েতি সমর্পয়েত্তৎ।।
“কায়, মন, বাক্য, ইন্দ্রিয়, বুদ্ধি, আত্মা দ্বারা বা স্বভাববশতঃ যে কোন কর্ম করা হয়, তাহা সমস্তই পরাৎপর নারায়ণে সমর্পণ করিবে”।-ভাগবত (১১/২/৩৬)
এস্থলে কেবল পূজার্চনা, দান, তপস্যাদির কথা বলা হয় নাই, আহার-বিহারাদি সমস্ত লৌকিক কর্মও ঈশ্বরার্পণ-বুদ্ধিতে করিতে হইবে, ইহাই বলা হইতেছে। এই ঈশ্বরার্পণ-বুদ্
ধি কিরূপ?-ঈশ্বরের সঙ্গে সাধক যে ভাব স্থাপন করেন তদনুসারেই তাঁহার কর্মার্পণ-বুদ্ধিও নিয়মিত হয়।
ভক্তিমার্গের প্রথম সোপানই হইতেছে দাস্যভাব। তুমি প্রভু, আমি দাস। তুমি যন্ত্রী, আমি যন্ত্র। তুমি কর্তা, আমি নিমিত্তমাত্র। এই ভাবটি গ্রহণ করিয়া সমস্ত কর্ম করিতে পারিলেই কর্ম ঈশ্বরে অর্পিত হয়। আমি আহার-পানাদি করি, সংসার কর্ম করি, যাহা কিছু করি, তুমিই করাও, তোমার ইচ্ছা পূর্ণ হউক, তোমার কর্ম সার্থক হউক, আমি আর কিছু জানি না, চাহি না- “ত্বয়া হৃষীকেশ হৃদিস্থিতেন যথা নিযুক্তোহস্মি তথা করোমি’’।
এই অবস্থায় ‘আমি তোমার’ এই দাস্যভাবটি নিত্য বিদ্যমান থাকে। ভক্তিমার্গের আর একটি উচ্চতর অবস্থা হইতেছে, ‘তুমি আমার’ এই ভাব; সুতরাং আমার যাহা কিছু কর্ম তোমার প্রীতি-সম্পাদনার্থ; এই অবস্থায় সাধকের অন্য কর্ম থাকে না। শ্রবণ- স্মরণ- কীর্তন, পূজার্চনা ইত্যাদি ভগবৎ-সেবা-বিষয়ক কর্মই তাঁহার কর্ম হইয়া উঠে। অধিকতর উচ্চাবস্থায় ভগবান্ জগৎময়, সর্বভূতে অধিষ্ঠিত, সুতরাং ভূত বা মানব সেবাই তাঁহার সেবা, এই জ্ঞান জন্মিলে নিষ্কামভাবে সাধক লোক-সেবায়ই নিযুক্ত হন।
“এই কর্মার্পণের মূলে কর্মফলের আশা ত্যাগ করিয়া কর্ম করিবার তত্ত্ব আছে। জীবনের সমস্ত কর্ম, এমন কি জীবন ধারণ পর্যন্ত এইরূপ কৃষ্ণার্পণ-বুদ্ধিতে অথবা ফলাশা ত্যাগ করিয়া করিতে পারিলে, পাপ-বাসনা কোথায় থাকিবে এবং কু-কর্মই বা কিরূপে ঘটিবে? কিংবা, “লোকোপযোগার্থ কর্ম কর”, “লোকহিতার্থ আত্মসমর্পণ কর”, এরূপ উপদেশেরও আর দরকার কেন হইবে? তখন তো ‘আমি’ ও ‘লোক’ এই দুইয়েরই সমাবেশ পরমেশ্বরে। এই দুইয়েই পরমেশ্বরের সমাবেশ হওয়ায় স্বার্থ ও পরার্থ এই দুই-ই কৃষ্ণার্পণরূপ পরমার্থের মধ্যে নিমগ্ন হইয়া যায়। কৃষ্ণার্পণ বুদ্ধিতে সমস্ত কর্ম করিলে নিজের যোগক্ষেমেও বাঁধা পড়ে না, স্বয়ং ভগবান্ই এ আশ্বাস দিয়াছেন”।
-:গীতারহস্য, লোকমান্য তিলক:-
(বিঃদ্রঃ):- ভক্তিশাস্ত্র যাহাকে শ্রীকৃষ্ণার্পণ-পূর্বক কর্ম বলেন, অধ্যাত্মতত্ত্বে জ্ঞানমার্গে উহাই ব্রহ্মার্পণপূর্বক কর্ম । ভক্তিমার্গে দ্বৈতভাব থাকে, ‘আমি’ জ্ঞান থাকে, যদিও উহা ‘পাকা’ আমি; কিন্তু জ্ঞানমার্গে ‘সমস্তই ব্রহ্ম’- এই ভাব বলবান্ থাকে, সাধক ব্রহ্মভূত হন, তাঁহার সমস্ত কর্ম ব্রহ্মকর্ম হয়।
“জয় রাধেশ্যাম”

Wednesday, March 22, 2017

মহাভারতের তথ্যপ্রমাণ

মহাকাব্যের ঐতিহাসিকতা নিয়ে বিতর্ক কোনো নতুন বিষয় নয়।
ইউরোপে মহাকবি হোমারের লেখা ইলিয়াড,
ওডেসি নিয়ে যেমন
ইতিহাসবিদ-প্রত্নতাত্ত্বিকরা
যুগে যুগে মাথা ঘামিয়েছেন,
তেমনই আমাদের দেশের
রামায়ণ ও মহাভারত নিয়েও কম গবেষণা হয়নি।
বহুকাল ধরে চর্চা বহমান রয়েছে
মহাভারতের ঐতিহাসিকতা নিয়ে।
সত্যিই কি ঘটেছিল কুকক্ষেত্র যুদ্ধ?
কৃষ্ণ নামে সত্যিই কি কেউ রাজত্ব করতেন দ্বারকায়?
কৌরব আর পাণ্ডবদের কথা কি পুরোটাই বানানো?
নাকি সত্যই এই দুই কুল পরস্পরের সঙ্গে সংঘাতে
ধ্বংস করে ফেলেছিল নিজেদের?
এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে
বিশেষজ্ঞরা কখনও প্রবেশ করেছেন
ইতিহাসের আঙিনায়, কখনও প্রমাণ খুঁজেছেন
জ্যোতির্বিজ্ঞানে,
কখনও বা ভাষাতত্ত্বের সড়ক বয়ে অগ্রসর হয়েছেন।
কী বলছে এই সব প্রমাণ? নিচে তার মধ্যে থেকে কয়েকটি উল্লিখিত হলো।• মহাভারতকার বেদব্যাস স্বয়ং তাঁর রচনাকে ইতিহাস বলেছেন। এখানে ইতিহাস-এর অর্থ- এইসব ঘটেছিল। যদি মাহাভারত কপোলকল্পনা হতো, বেদব্যাস একে মহাকাব্য বা কথা বলে উল্লেখ করতেন।• মহাভারতের আদিপর্বের ৬২তম অধ্যায়ে ভারত-রাজবংশ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উল্লিখিত হয়েছে। মনু থেকে ৫০ পুরুষ সেখানে উল্লিখিত। যদি মহাভারত কল্প-কথাই হতো, তা হলে এত বিস্তরিত উল্লেখের কী প্রয়োজন ছিল?• প্রত্নত্ত্বের সাক্ষ্যও মহাভারতের ঐতিহাসিকতাকে সমর্থন করছে। গুজরাটের সমুদ্রতলে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রাচীন দ্বারকা নগরীর ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। পৌরাণিক বর্ণনার সঙ্গে সেই ধ্বংসাবশেষের মিল যথেষ্ট।• মৌষল পর্বে দ্বারকা নগরীর সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার বর্ণনা রয়েছে। প্রাচীন দ্বারকা আজ সমুদ্রে নিমজ্জিত।• এমন ৩৫টিরও বেশি ভারতীয় নগরীর কথা মহাভারতে রয়েছে, যাদের অস্তিত্ব ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে আরও বেশ কিছু জনপদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।• মহাভারতের উদ্যোগ পর্বে লিখিত রয়েছে, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শুরুর অব্যবহিত পূর্বে কৃষ্ণ হস্তিনাপুরে গমন করেন কার্তিক মাসের সেই তিথিতে, যে দিন চন্দ্র রোহিনী নক্ষত্রে অবস্থান করছিলেন। পথে কৃষ্ণ বৃকস্থল নামে একটি জায়গায় বিশ্রাম নিতে থামেন। চন্দ্র তখন ভরণী নক্ষত্রে বিরাজ করছেন। যেদিন দুর্যোধনের পতন ঘটে, সেদিন চন্দ্র পূষা নক্ষত্রে অবস্থান করছেন। জ্যোতির্বদরা মহাভারতের আনুমানিক কালের সঙ্গে এই সব উল্লিখিত তিথির সাযুজ্য পেয়েছেন।• পুরাণগুলিতে মৌর্য্য, গুপ্ত এবং ইন্দো-গ্রিক রাজবংশগুলির স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। এই রাজবংশগুলির ঐতিহাসিকতা মেনে নেওয়া হয় এই কারণেই যে, পুরাণের পাশাপাশি সমকালীন গ্রিক ঐতিহাসিকরা এই সমর্থন করেছেন। গ্রিক আগমনের আগেকার রাজবংশগুলি সেই যুক্তিতে কি 'অনৈতিহাসিক'? এই রাজবংশগুলিই মহাভারতে উল্লিখিত হয়েছে বার বার।

হিন্দু মেয়েদের মুসলিম আসক্তিঃ তার কারণ ও পরিণাম

উপমহাদেশে ইসলাম ধর্ম বিস্তারের প্রধান হাতিয়ার হিন্দু মেয়ে বিবাহ। ছলে-বলে-কৌশলে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা তাদের সকল উদ্দেশ্য সাধনের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। অতীতে রাজ্যহারা পরাধীন হিন্দুগণ জান-মালের ভয়ে, অস্ত্বিত্ব ও জীবন রার্থে ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য হত অথবা নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন বা মৃত্যুকে স্বীকার করে নিত। বর্তমানে দ্বিতীয় ঘটনাটার পুনরাবৃত্তি মাঝে মাঝেই ঘটে। কিন্তু অবাক হতে হয়, হিন্দু ছেলে-মেয়েরা তাদের নিজেদের ধর্ম বা ইসলাম ধর্ম কোনটা সম্পর্কেই সুস্পষ্ট ধারণা না রেখেই স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হচ্ছে। কি সেই আকর্ষণ আর কেনই বা হিন্দু মেয়েরা মুসলিম ছেলেদের প্রতি এত আকৃষ্ট হচ্ছে?

কারণঃ কেন আসক্ত হচ্ছে?

.

১. সনাতন ধর্মীয় মূল্যবোধ ও জ্ঞান শূন্যতা

নিজের ধর্ম সম্পর্কে হিন্দু যুবক-যুবতীগণ একেবারেই অজ্ঞ। তাদের পরিবার থেকে যথাযথ ধর্মীয় জ্ঞান তাদের দেওয়া হয় না। সনাতন ধর্মীয় শুদ্ধ জ্ঞান লাভের উৎসেরও অভাব রয়েছে। নিজের ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে বিধর্মীদের সমালোচনার কোন সদুত্তর তারা দিতে পারে না। একসময় সত্যিই নিজের ধর্মকে ভ্রান্ত বা অর্থহীন মনে করতে দ্বিধা করে না।

.

২. মানসিক ধর্ষনের স্বীকারঃ একটি হিন্দু ছেলে কিংবা মেয়ে নিজ পরিবারের মা-বাবা সহ পরিবারের সকল বয়েজ্যৈষ্ঠদের কাছ থেকে শিখে ভাল আর মন্দের পার্থক্য গুলি, যেমন ভাল মানুষ ও মন্দ মানুষ। শিখে সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। কিন্তু শিখে না যেটা বেশী দরকার তাহল এরা প্রথমে হিন্দু ও তারপর মানুষ। শিখে না এরা সংখ্যা লগু সম্প্রদায়ে জন্ম এবং বড় হয়ে প্রতিটি পদে পদে বঞ্চনা ও বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে। অপর দিকে একটি মুসলিম সম্প্রদায়ের শিশু শিখে সে প্রথমে মুসুলমান পরে মানুষ। সে আরো শিখে সে নিজে মুসুলমান আর অন্যেরা বিধর্মী এ ধরনের পার্থক্যগুলি। ফলে যে কোন হিন্দু শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে সহসাথীদের নিকট শুনতে হয় ঐ হিন্দু, শিকদের নিকট শুনতে হয় তোমরা হিন্দু এবং হিন্দুদের কোন ধর্ম নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। এভাবে হিন্দু শিশুরা মানসিক ধর্ষনের শিকার হতে থাকে এবং ধর্ষনের এধারা কোন হিন্দু শিশুর বয়ঃ বৃদ্ধির সাথে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। পাশাপাশি পাঠ্য বইয়ে হিন্দু রাজা মহারাজা ও বীরদের কর্তৃত্ব খর্ব করে প্রকারান্তরে মুসলিম রাজা বাদশা ও লুটেরাদেরকে বীর হিসাবে উল্লেখ্য করায় এগুলো পড়ে হীনমন্যতায় ভোগে। একই সাথে তাবলীগ জামাত ও ইসলাম ধর্মের দাওয়াতকারীদের গুনকীর্তন হিন্দু শিক্ষার্থীদের মানসিক ধর্ষনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। একসময় হিন্দু ছেলে মেয়েরা ভুলে যায়ে।

.

৩. মিডিয়ার প্রভাবঃ হিন্দুদের কাছে মুসলিম সংস্কৃতি একেবারেই ভিন্নতর ও অজানা। অজানার বাহ্যিক চাকচিক্যের আকর্ষণ রয়েছে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কারণে পাশাপাশি বাস করা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের একটা প্রভাব তৈরি হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সেক্যুলারবাদী খুল্লাম খুল্লা টিভি চ্যানেল ও ইসলামপন্থী টিভি চ্যানেল, সংবাদপত্র ও চলচ্চিত্রের কাহিনীতে মুসলমান চরিত্রগুলোকে বীর ও মহৎ গুণের অধিকারী রূপে দেখানো হয়। সাধারণ হিন্দুদের সাধারণ হিসেবেই দেখানো হয়। এই মিডিয়াগুলো উঠতি বয়সী যুবক-যুবতীদের মনে দারুন প্রভাব ফেলে। মুসলিমদের মানবাধিকারের কথা যতটা ফলাও করে প্রচার করা হয় হিন্দুদের সেই সাপেে উল্লেখ নেই বললেই চলে।

.

৪. যৌন চাহিদাঃ হিন্দু মেয়েরা বিশেষত: টিনেজারদের কাছে সাধারণত সেক্স একটা অজানা জগত। আমাদের দেশে কিশোর-কিশোরীদের যৌন শিক্ষা প্রচলিত না থাকায় তারা এই অজানা বিষয়ে খুবই আকর্ষণ বোধ করে। মুসলমান পরিবারে একটি মেয়ে অল্প বয়স থেকেই খুব ভালভাবে বুঝতে শেখে যে- সে একটা মেয়ে। তার কাছের ও দূরের আত্মীয় সম্পর্কের পুরুষদের কাছ থেকে পুরুষ মানুষ কি জিনিস তার খুব ভাল পরিচয় পেয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় চাচাতো, খালাতো, মামাতো, ফুফাতো ভাই অথবা কাছের বা দূরের সম্পর্কের আত্মীয়ের সাথে সেক্স করার সুযোগ তাদের ঘটে। তাদের রাজসিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবন প্রণালী এই কর্মে উৎসাহী করে। অন্যদিকে সাধারণত হিন্দু সমাজে দূর সম্পর্কের ভাই হলেও সে একটা মেয়েকে আপন বোনের মতই দেখে ও শ্রদ্ধা করে। হিন্দু ছেলে ও মেয়ে উভয়ের মধ্যেই তুলনামূলক বেশি নৈতিক মূল্যবোধ কাজ করে। ফলে হিন্দু পরিবারের মেয়েগুলো সেক্স বিষয়ে মুসলিমদের তুলনায় অজ্ঞ থাকে। আর কোন মেয়ে যদি তার উঠতি বয়সে বা যৌবনে বিবাহের পূর্বে সেক্স বিষয়ে আগ্রহী হয়, তবে তার চাহিদা পূরণের জন্য সাধারণত কোন সুযোগ থাকে না। এই সুযোগটা অনেকেত্রেই গ্রহণ করে মুসলিম যুবকগণ। আর যেখানে মুসলিমদের সংখ্যাই অধিক সেখানে এই ঘটনা আরও বেশি ঘটে।

.

৫. প্রেম মরণ ফাঁদঃ হিন্দুদের ধর্মান্তরের প্রধান মাধ্যম হলো প্রেম। মুসলিম যুবকগণ হিন্দু মেয়েদের প্রতি যেন একটু বেশিই আকর্ষণ বোধ করে। আর অজ্ঞান মেয়েগুলোও খুব সহজেই এই মোহে আক্রান্ত হয়। তাছাড়া মুসলিম বন্ধুর সাথে মিশতে মিশতে ভাল সম্পর্ক তৈরী হয়ে গেলে বা কারও প্রতি মুগ্ধ হয়ে গেলে মেয়েরা ফাঁদে পড়ে যায়। এই সুযোগের অপেক্ষায় থাকা যুবকের অনুরোধ উপেক্ষা করা অনেক ক্ষেত্রেই আর সম্ভব হয়ে ওঠে না।

.

৬. খৎনাকরণ: লেজকাটা শিয়ালের দর্শন অনেকের ধারণা খৎনা করলে পুরুষাঙ্গের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও অনেক মরণঘাতী রোগ হতে সুরক্ষা হয়। এ বিষয়ে হিন্দু মেয়েরা অনেকেই আকর্ষণ বোধ করে। মুসলিম পরিবারের এত বেশি ভাঙন কেন? খৎনা করা পুরুষের যদি এতই ক্ষমতা থাকে তবে মুসলিম স্ত্রীদের অভিসার ও ব্যভিচারের কেন এই আধিক্য? পরপুরুষের হাত ধরে স্বামীসন্তানের মায়া ফেলে পালায় কেন? এ সংক্রান্ত প্রশ্ন গুলি উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেনা।

.

৭. পবিত্রতাঃ হিন্দু মেয়েরা নিজেদের দেহকে পবিত্র মনে করে। একবার মোহবশত: কোন মুসলিম ছেলের সাথে শারীরিক মিলন হলে তারা আর ফিরে আসতে চায় না। তারা নিজেদের তখন অপবিত্র মনে করে।

.

৮. প্রলোভনঃ পুণ্য ও বেহেশ্ত প্রাপ্তির আশায় মুসলিম নারী ও পুরুষ উভয়েই উদগ্রীব থাকে। যে কোন মুসলিম ছেলে অন্যধর্মের মেয়েকে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত করলে পরিবারের সবাইতে তাকে এ কাজে সহায়তা করে এজন্যে যে এর সওয়াব পরিবারের সকলে ভোগ করবে। ফলে মুসলিম ছেলেটি উৎসাহ পায়। একই ভাবে মুসলিম মেয়ে হিন্দু ছেলে শিকার করতে উৎসাহী ও উদ্ধগ্রীব হয় । ফলে মুসলিম ছেলে ও মেয়েদের কুমন্ত্রণা ও প্রলোভনে হিন্দু মেয়ে ছেলেদের ধর্মান্তরের জন্য যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।

.

৯. পারিবারিক হুমকি ও নীরব অত্যাচার

বিশেষত মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দুদের জমি, সম্পত্তি ও নারীদের ওপর দুর্বৃত্তদের নজর পড়ে বেশি। হিন্দুদের ওপরে নীরব অত্যাচার একটি সাধারণ ঘটনা। জীবন, সম্পত্তি, সুখ-শান্তি ও সম্মান রার্থে অনেক সময়ই হিন্দু মেয়েদের উৎসর্গ করতে হয় মুসলিমের হাতে।

.

১০. সেক্যুলারইজমঃ হিন্দুদের জন্য অভিশাপ এই শব্দটা যেন ব্যবহারিকভাবে হিন্দুদের জন্যই একমাত্র প্রযোজ্য। সবাই এর কথা বলে কিন্তু এর বলি হয় শুধুমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়। হিন্দু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবীগণ নিজেদের সেক্যুলার, উদার ও ধর্মনিরপে হিসেবে প্রমাণ করতে মুসলিম তোষণ ও বিবাহকে উৎসাহিত করেন। যদিও তাতে ইসলামেরই জয় হয়। কারণ হিন্দুকেই তার ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করতে হয়। বিপরীতটা ঘটতে দেখা যায় না। এরই নাম তথাকথিত সেক্যুলারইজম।

.

১১. শিক্ষিত মেয়েদের অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চ শিক্ষালয়ের হিন্দু ছাত্রীগণ প্রথমত কাসমেট হিন্দু ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব করতে বিব্রত বোধ করে। মনে করে, যদি প্রেম হয়ে যায়? হয়ত বর্ণবৈষম্যের কারণে মা-বাবা মেনে নেবেন না- এই ভয় কাজ করে। ফলে অন্যান্য ছেলেদের সাথে ভাল বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। একসময় নিজের অজ্ঞাতেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে; মনে করে, এই সম্পর্ক হতে সে বেরিয়ে আসতে পারবে এবং বিয়ে পর্যন্ত গড়াবে না। কিন্তু যখন বর্বরতা বুঝতে পারে তখন অনেক দেরি হয়ে যায়, ফেরার উপায় থাকে না। আর মুসলিম বন্ধুর উদার বাণীগুলোও তাকে মুগ্ধ করে রাখে। তাদের অভিসন্ধি বোঝার মতা থাকে না। তখন মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন কারোর বন্ধনই আর আটকে রাখতে পারে না।

.

১১. তথাকথিত স্মার্টনেস: স্মার্ট ও সুন্দরী হিন্দু মেয়েগুলো তাদের যোগ্য হিন্দু বন্ধু অনেক ক্ষেত্রেই খুঁজে পায় না। মুসলিম ছেলেদের মধ্যে তাদের স্বপরে স্মার্ট গুণগুলোর উপস্থিতি দেখে তাদের চাকচিক্যের প্রতিই এরা বেশি আসক্ত হয়ে পড়ে। মুসলিম যুবকরাও এই সুযোগটার সদ্ব্যবহার করে।

.

.

. লাভ জিহাদের পরিণতিঃ-

.

বিবাহের সুখ ও যৌনতার মোহ খুব বেশিদিন থাকে না। প্রেমঘটিত বিয়ের পর মুসলিম পরিবারে হিন্দু স্ত্রীগণকে বাস্তবব জীবনের কষাঘাতে পদে পদে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হতে হয়। সঙ্গী হয় সারা জীবনের কানড়বা।

.

• মুসলমানের হিন্দু স্ত্রীদেরকে প্রথমত সাদরে গ্রহণ করা হলেও খুব শীঘ্রই তাদের উপর ইসলামী বিধানগুলো কাল হয়ে আসে। একাকী বের হওয়া যাবে না, ছবি তোলা ও চলচ্চিত্র নিষিদ্ধ, বোরখা পরতে বাধ্য হওয়া, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, ব্যক্তি-স্বাধীন

তার অনুপস্থিতি, পূর্বে নিরামিষ আহারী হলেও পিয়াজ-রসুন ও গরুর মাংসের নিয়মিত বিড়ম্বনা তখন নিত্য সঙ্গী হয়। শাশুড়ি বা ননদের এমনকি স্বামীর অত্যাচারের স্বীকার হলেও প্রতিবাদ করার উপায় থাকে না। কারণ স্বামী খুব সহজেই তাকে ‘তালাক’ দিতে পারে। এমনকি সন্তানসহ তালাকও দিতে পারে। তখন হিন্দু স্ত্রীর পায়ের নিচে আর কোন মাটি থাকে না। এককথায় স্বামীর সংসারে তাকে দাসী হয়ে জীবনটা কাটাতে হয়।

.

• হিন্দু মেয়েরা মুসলিম পুরুষ বিয়ে করলে সাধারণত তার নিজের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন হতে ত্যাজ্য হয়ে যায়। একমাত্র স্বামী ছাড়া সে নিরাশ্রয় হয়ে পড়ে। তাই বাধ্য হয়ে সকল অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করতে হয়।

.

• মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি এসে বাবার বাড়ির অহংকার করে থাকে। গল্প করে থাকে। তার বিপদে-আপদে বাবা-ভাইয়েরা এগিয়ে আসবে -এই বিশ্বাসটুকু তাদের থাকে। কোন কারণে শ্বশুরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হলে মাথা গোঁজার ঠাই বা আশ্রয়টুকু তার থাকবে- এই ভরসা থাকে। কিন্তু কেউ ধর্মান্তরিত হলে তার পরিণতি সরস্বতী দাসের মতই হতে পারে।

.

• শ্বশুরবাড়িতে শ্বশুর-শাশুরি, ননদ, জা এবং আত্মীয়-স্বজন কর্তৃক প্রায়শ: ‘মালাউনের মেয়ে’ বলে গালি শুনতে হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী সে ‘মালাউনের মেয়ে’ গালী শুনতে হয়। দুঃখের বিষয় মাঝে মাঝে আদরের সন্তানই ‘মালাউন মাগী’ বলে গালি দেয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। আমি যে মুসলমান বন্ধুর সাথে একটু আগে হাসিমুখে কথা বললাম, আড়ালে হয়ত সেও আমাকে মালাউনের বাচ্চা বলে গালি দেয়।

.

• মুসলিম মতে তিন তালাক বললেই সম্পর্ক শেষ। যৌন আকর্ষণ বিয়ের পর খুব বেশিদিন থাকে না। তারপর শুরু হয় বাস্তÍবতা। একজন পুরুষের একইসাথে চারটি পর্যন্ত বিয়ে করা বৈধ। একজন স্ত্রীর প্রতি মোহ কমে গেলে বা নতুন কোন নারীর প্রতি আসক্ত হলে খুব সহজেই তিন তালাক দিয়ে নতুন বিয়ে করতে ইসলামে কোন বাধা নেই। মুসলিম পরিবারে নিজের পুত্রবধু থেকে শুরু করে দাসী পর্যন্ত যথাক্রমে নিকাহ্ বা ভোগ করা বৈধ। ইসলামে স্ত্রীদের শষ্যেক্ষেত্রের সাথে তুলনা করা হয় এবং পুরুষ সেখানে স্বেচ্ছাচারী যেমন খুশি গমন করতে পারে এবং স্ত্রীরা এক্ষেত্রে বাধ্য। প্রয়োজনে প্রহার করাও বৈধ। এক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় কি না?

.

• গ্রামের দিকে খোঁজ নিয়ে দেখুন, যে সকল মেয়ে মুসলিম হয়েছে, যৌবনের জৌলুস কমার সাথে সাথে তালাক হয়ে গেছে, ফলে ভিক্ষা করতে হয়। গ্রামের যথেষ্ট ভিক্ষুকের মধ্যে অনেক গুলিই কনভার্ট হওয়া হিন্দু মেয়ে পাওয়া যাবে। পতিতালয়ে গিয়ে দেখুন, ওখানে পাবেন কনভার্ট হয়ে যাওয়া হিন্দু মেয়ে যে যৌবনের প্রথম প্রতুষ্যে সুখের লাগিয়া বাঁধিয়াছে ঘর মুসলিম প্রেমিকের তরে, ঠাঁই হইয়াছে শেষে পতিতালের অন্ধকার ঘরে।

.

• সবচেয়ে বড় সত্য হলো মুসলিম পরিবারে ধর্মান্তরিত হিন্দু স্ত্রীগণ কেউই প্রকৃতপক্ষে সুখে নেই।

.

সুতরাং প্রত্যেক অবিবাহিত হিন্দু যুবক যুবতী ও নারী পূরুষের সর্তক হওয়া উচিত এবং পরিবারের সকল শিশু কিশোর কিশোরী সদস্যাদের প্রতিদিনই এতদ বিষয়ে সর্তক করা উচিত।

Sourch:- 

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=274858152935450&id=100012338012360&refid=18&_ft_=qid.6400346981324182768%3Amf_story_key.1910545705827845%3Atop_level_post_id.1910545705827845%3Atl_objid.1910545705827845&__tn__=%2As