Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Thursday, April 27, 2017

কর্ম আর ভক্তির পার্থক্য আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের প্রতিষ্ঠাতা-আচার্য কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ (১৯৬৮ সালের ৯ মার্চ আমেরিকায় সান ফ্রান্সিসকো শহরের শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে জনৈক সাক্ষাৎকারীর সাথে সংলাপের সারমর্ম) 

সাক্ষাৎকারী: কৃষ্ণভাবনামৃত আস্বাদনের অনুশীলনে নামতে হলে কোনও পরীক্ষাধীন স্তর অতিক্রম করতে হয়, না কি, যে-যার চিন্তা-ভাবনার বিকাশ অনুসারেই জ্ঞান-উপলব্ধি অর্জন করতে পারে? 
শ্রীল প্রভুপাদ: হ্যাঁ, সব কিছুতেই উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকা চাই বৈকি! যেমন, একটা ছেলে কোনও উৎসাহ-উদ্দীপনা ছাড়াই স্কুলে যাচ্ছে, আর একটি ছেলে বেশ উৎসাহের সঙ্গেই স্কুলে রোজ যাচ্ছে। একটি ছেলে পরীক্ষায় প্রথম হচ্ছে, অন্য ছেলেটি ব্যর্থ হচ্ছে কিংবা ক্লাশে সবার নিচে থাকছে। তাই আমি আগেও বলেছি পরীক্ষাধীন সময়- কৃষ্ণভাবনা অনুশীলনের ক্ষেত্রেও উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকা চাই। মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনার ওপরেই তার উন্নতি বা বিকাশের সম্ভাবনা নির্ভর করে থাকে। কে কতটা গুরুত্ব দিয়ে শিখছে। প্রত্যেককে বেশ গুরুত্ব সহকারে শিখতে হয় সব কিছু। সিদ্ধি সাফল্যের ক্ষেত্রে সর্বত্রই এই নিয়ম। সুতরাং কৃষ্ণভাবনা অনুশীলনের ক্ষেত্রে সার্থক সিদ্ধিলাভের জন্য খুব বেশি উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকা চাই। হ্যাঁ, তা ছাড়া উন্নতি সম্ভব নয়। জীবনের সকল ক্ষেত্রেই সেই একই কথা। আর মানুষকে ধীরস্থির হতে হবে। ধৈর্য ধারণ করে সিদ্ধিলাভের জন্য প্রতীক্ষা করে থাকতে হবে। উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকার মানে এই নয় যে, আমি এখনই কোনও বিষয়ে উৎসাহ নিয়ে কাজে লাগি তো এখনি তার সুফল হাতেনাতে পেয়ে যাব। না। ফল লাভে দেরি হতেই পারে। কিন্তু তা হলে আমাদের বিচলিত হওয়া চলবে না। তা সত্ত্বেও সমানভাবে উৎসাহ আর উদ্দীপনা বজায় রেখে আমাদের কাজ করে চলতে হবে। একেই বলা হয় ধৈর্য, অধ্যবসায়। উৎসাহ, উদ্দীপনা, ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং আত্মবিশ্বাস, নিজের ওপরে ভরসা। যেহেতু, আমরা শ্রীকৃষ্ণে বিশ্বাস রেখে চলি, তাই জানি, শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, তুমি এই কাজটি করলে এই ফল লাভ করবে। অতএব আমার নিজের ওপরে ভরসা থাকা চাই। ঠিক যেমন শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, শুধুমাত্র তাঁকে উপলব্ধির মাধ্যমে, তিনি কে, কিভাবে তিনি এলেন, কিভাবে চলেন, এই সমস্ত উপলব্ধির দ্বারা অচিরেই মানুষ তাঁর চিন্ময় ধামে প্রবেশ লাভের পাসপোর্ট পেয়ে যেতে পারে। অতএব ভগবদ্ধামে, আমাদের নিজধামে ফিরে যেতেই হবে এইভাবে। এটাই হল আত্মবিশ্বাস। সুতরাং উৎসাহ-উদ্দীপনা, ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস। আর……উৎসাহাৎ নিশ্চয়াদ্…….তৎ তৎ কর্ম প্রবর্তনাৎ। শুধু চাই উদ্দীপনা, আর কোনও কিছু নয়। তবে কৃষ্ণভাবনাময় নির্ধারিত কর্তব্যকর্মে লেগে থাকাও চাই। আর সকল সময়ে ভক্তদের সান্নিধ্যে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে হবে। আমি বলতে চাই, এই জিনিসগুলিই কৃষ্ণভাবনামৃত আস্বাদনের পথে প্রেরণা জাগায়। অতএব, যতই বেশি করে এই ছয়টি নীতি মেনে চলার ব্যাপারে নিজেকে অনুপ্রাণিত করে রাখা যাবে- ধৈর্য, উৎসাহ-উদ্দীপনা, তার পরে আত্মবিশ্বাস, তার পরে ভক্তিমূলক কাজকর্মে আত্মনিয়োগ করে থাকা, ভক্তদের সঙ্গ-সান্নিধ্য লাভ করা আর অভক্তদের সঙ্গ বর্জন করা- ততই লাভ। এটাও একটা মনে রাখার মতো ব্যাপার। ঠিক যেমন আগুন জ্বালাতে হলে, কাঠ যত শুকনো হবে, তত ভাল আগুন পাওয়া যাবে। যদি ভিজে কাঠ আনা হয় তো জ্বলতে খুব কষ্ট। তাই অভক্তদের সান্নিধ্যে গিয়ে ভিজে না যাই, সেদিকে খেয়াল রেখে, নিজেদের শুকনো অর্থাৎ শুদ্ধ রাখতে হবে। এটাও একটা পন্থা। এদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। যদি আপনারা গীতা-ভাগবতের ক্লাসে আসেন, আর অন্য সব ক্লাসেও যান, কোনও নাইট ক্লাবের আড্ডায় যান, তা হলে তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া হয়ে সব বরবাদ হয়ে যাবে। বুঝেছেন? অতএব এটা করতেই হবে- যদি আপনি আগুন জ্বালাতে চান ঠিকমতো, তা হলে জল থেকে সেটিকে বাঁচাতেই হবে। আর যদি আগুন জ্বালিয়ে তাতে জল ঢালেন, তা হলে কি লাভ হল? কিছুই না। সুতরাং, কৃষ্ণভাবনা অনুশীলনে উন্নতি লাভ করতে হলে অভক্তদের সঙ্গে আপনাদের সান্নিধ্য বর্জন করতে হবে। এই ছয়টি নিয়মনীতি মেনে চলতে পারলে তবেই কৃষ্ণভাবনামৃতের প্রকৃত আস্বাদন-মাধুর্য লাভ করা সম্ভব হবে। 
সাক্ষাৎকারী: কর্মজীবনের কাজের মধ্যে যে-বিশ্বাস সক্রিয় থাকে তার মধ্যে কৃষ্ণভাবনার ভূমিকা কিছু থাকে কি? 
শ্রীল প্রভুপাদ: হ্যাঁ, থাকে। কৃষ্ণভাবনাময় কাজকর্ম আপাতদৃষ্টিতে কর্মজীবনের মতো কাজের ধারা বলেই বোধ হয়। বুঝতে হবে কর্ম আর ভক্তির মাঝে পার্থক্যটা কি? যেমন, আমরা এই টেপ রেকর্ডার, এই মাইক্রোফোন ব্যবহার করছি। কোনও রাজনৈতিক নেতার কাছে গেলেও আপনারা একই সামগ্রী দেখতে পাবেন। আমিও এই সবের মাধ্যমে কথা বলছি, তিনিও দেখা-সাক্ষাতের সময় এতেই কথা বলছেন। তা হলে আপাতদৃষ্টিতে আমরা সবাই সমান। কিন্তু এটা হল ভক্তি আর ওটা হল কর্ম। ভক্তি আর কর্মের মাঝে কিসের তফাৎ? কর্ম মানে আপনি কিছু করছেন এবং আপনি যা কিছুই করছেন, তার একটা ফল হচ্ছে। অতএব, ফলটাও আপনি গ্রহণ করছেন। মনে করুন, আপনি কোনও ব্যবসা করেন। তা থেকে লক্ষ টাকা লাভ হল। তা হলে সেটা আপনি নিলেন। আর তা থেকে লক্ষ টাকা লোকসান হল। আপনি লোকসান মেনে নিলেন। এই হচ্ছে কর্ম। নিজের হিসাব মতো কাজ করছেন আর তার ফল পাচ্ছেন। পরিষ্কার হল? একে বলে কর্ম। কিন্তু আমাদের কাজকর্ম হল শ্রীকৃষ্ণের সেবার উদ্দেশ্যে। তাই আমরা কাজ করি। কোনও লাভ হলে সেটা কৃষ্ণের। কোনও লোকসান হলে, সেটা কৃষ্ণের। আমাদের কিছুই হয় না। আমরা কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচারের জন্য কাজ করে চলেছি। কেউ যদি আসেন তো তিনি কৃষ্ণেরই, আমার নন। এই সব ছেলেরা আমার সেবা করছে, আমার ইন্দ্রিয় পরিতৃপ্তির জন্যে নয়, এরা কাজ করছে কৃষ্ণভাবনার অনুশীলন বাড়িয়ে তোলার জন্য। এই সব কথা ভগবদ্গীতায় চমৎকারভাবে বোঝানো হয়েছে। ভাগবতেও বোঝানো হয়েছে। কৃষ্ণসেবার পরিকল্পনাটি খুবই বিরাট। মানুষকে এটা বোঝাবার চেষ্টা করতে হবে। কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনটা কোনও অন্ধ বিশ্বাসের ব্যাপার নয়। আমাদের পদ্ধতি অবশ্য খুবই সহজ-সরল। আমরা ছোট-বড় সকলকে বলি, “এসো বসো, হরেকৃষ্ণ নাম জপ কর।” ক্রমে মানুষ বুঝতে পারে। এই বিষয়ে পড়াশুনা করতে থাকে। শিক্ষিত না হলেও কেবল কৃষ্ণনাম জপ করার মাধ্যমেও সেই তত্ত্ব ক্রমে উপলব্ধি হতে পারে। কত সুন্দর পন্থা! এই পন্থা বিদ্বানের জন্যেও যা, বাচ্চা শিশুর জন্যেও তাই।

Wednesday, April 26, 2017

সনাতন ধর্মে নারী (নিয়মিত পর্ব-৬)

গর্ব করে বলুন "আমি সনাতন"

গৌতম বুদ্ধের পূর্বে কোন বুদ্ধিস্ট
ছিল না ... যীশু খ্রিস্টের পূর্বে কোন খ্রিস্টান
ছিল না ...
মহম্মদের পূর্বে কোন মুসলমান ছিল না
...
মহাবীরের পূর্বে কোন জৈন ছিল না ...
গুরু নানকের পূর্বে কোন শিখ ছিল না ...
কিন্তু .....
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূর্বে , শ্রী রামের
পূর্বে ,
বৈশিষ্ঠ মুনির পূর্বে , গৌতম মুনির
পূর্বে , কপিল ,
ভরদ্বাজ , কর্ণাদ , বিশ্বামিত্র ,
অত্রী , গুরু
দ্রোনাচার্য , রাজা হরিশ্চন্দ্রের
পূর্বে
সনাতন
বৈদিক ধর্ম ছিল । কেননা ....
ধর্ম কোন ব্যক্তি বিশেষের দ্বারা
আরম্ভ হয় না ,
ধর্ম তো ঈশ্বরের দ্বারা সরাসরি
বেদের মাধ্যমে
মানবমাত্রকে সমানরুপে সংবিধান
দেওয়া হয়েছিল

ব্যক্তি বিশেষের দ্বারা তো কেবল মত
, পথ ,
সম্প্রদায় ইত্যাদি চলে থাকে ।
তাই একটু ভেবে দেখুন ... আর সনাতন
ধর্মের লোক
হিসাবে নিজেকে নিয়ে গর্ব করে
বলুন....
" হ্যাঁ আমি হিন্দু ...
" জয় হিন্দ "....

যে ভাবে কৃষ্ণ নাম (মালা) জপ করবেন

হাতের তালুতে দু-এক ফোঁটা জল নিয়ে ‘ওঁ বিষ্ণু’ মন্ত্রে পান করবেন। মোট তিন বার এইভাবে জল পান করতে হবে। তারপর করজোড়ে বলবেন—
ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্।
ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোঽপি বা।
যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।।
‘ওঁ বিষ্ণু’‘ওঁ বিষ্ণু’‘ওঁ বিষ্ণু’
....
মস্তকে তুলসী রেখে বলবেন :
নমঃ তুলসী দর্শনে পুণ্য
স্পর্শনে পাপ নাশন
স্মরণে তির্থানি
ভক্তিমে মুক্তি লক্ষণ নমঃ
.......
গুরু প্রনামঃ
ঔঁ অখণ্ডমণ্ডালাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্।
তৎপদং দশি‘তং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।১
অঞ্জানতিমিরান্ধস্য ঞ্জানাঞ্জন শলাকায়া।
চক্ষু রুল্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।২. গুরু ব্রক্ষা
গুরু বিষ্ণু গুরুদেবো মহেশ্বরঃ। গুরুঃ সাক্ষাৎ পরং ব্রক্ষ
তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।
....
শ্রী কৃষ্ণ প্রনামঃ
হে কৃষ্ণ করুণা সিন্ধু দীনবন্ধু জগৎপতে।
গোপেশ গোপীকা কান্ত রাধা কান্ত নমহঃস্তুতে ।।
....
শ্রী রাধারানী প্রণামঃ
তপ্ত কাঞ্চন গৌরাঙ্গীং রাধে বৃন্দাবনেশ্বরী।
বৃষভানু সূতে দেবী প্রণমামি হরি-প্রিয়ে।।
....
মালা জপ আরম্ভের মন্ত্রঃ-
অবিঘ্ন করু মালে, ত্বং হরি নাম-জপেষু চ।
শ্রীরাধা কৃষ্ণয়োর্দাস্যং দেহি মালে, তু প্রার্থয়ে।।
অর্থঃ- হে মালে তোমাতে হরি নাম জপ করিতেছি আমার সর্ব্ব বিঘ্ন দূরকর এবং শ্রীরাধা কৃষ্ণের দাস্য দান কর, এই প্রার্থনা করিতেছি।
....
মন্ত্র জপ ১০৮ বার
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ।।
.....
মালা জপান্তে নিন্মরুপ জপ সমর্পণ করিতে হয়ঃ-
গুহাতিগুহ গোপ্তা ত্বং গৃহাণাস্মং কৃতং জপং ।
সিদ্বি ভবতু-মে দেব ত্বৎ প্রসাদাৎ জনার্দ্দন।।
অর্থঃ হে পরম দেব, পরম অভিষ্্‌ পরমপ্রিয় শ্রীকৃষ্ণ তুমি গুহ্য ও অতি গুহ্য বস্তুকে রক্ষা কর। অতএব আমার এই নাম জপ তুমি গ্রহন কর। হে দেব তোমার প্রসাদে আমার সর্বসিন্ধ লাভ।
....
গীতায় স্মরণীয় নামগুলি জপ করিবেনঃ
ঔঁ গঙ্গা, গীতা, সাবিত্রী,সীতা, সত্ত্বা, পতিব্রতা,
ব্রহ্মবলি, ব্রহ্মবিদ্যা,ত্রিসন্ধ্যা, মুক্তি-গেহেনী,
অর্ধমাত্রা, চিদানন্দা,ভবঘ্নী, ভ্রান্তী নাশিনী,
বেদত্রয়ী, পরানন্দা,তত্ত্বার্থ, জ্ঞানমঞ্জরী।।
....
সব শেষে ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রাথনা :
পাপহং পাপকর্মাহং পাপাত্মাহ পাপসম্ভবো
ত্রাহিমাং পুন্ডরিকাক্ষং সর্ব পাপ হর হরি।।
ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন , নিতাই গৌর হরিবল।।

সনাতন ধর্মে নারী (নিয়মিত পর্ব-৫)

শ্রীগীতা মাহাত্ম্য

কথা অমৃত

একটি শিক্ষনীয় গল্প

একদিন এক ব্যক্তি পরমেশ্বর ভগবান
শ্রীকৃষ্ণের শক্তি পরীক্ষা করার
জন্য
তিনি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে
দিলেন। তিনি বললেন দেখি কৃষ্ণ
কিভাবে আমাকে খাওয়াতে
পারেন? তার ছেলে মেয়েরা
এতো
আকুতি মিনতি করছে তারপরেও সে
কিছুতেই খাবে না। তার মুখে
একটাই
কথা দেখি কৃষ্ণ কিভাবে আমাকে
খাওয়াতে পারে? বাড়ি ছেড়ে
জঙ্গলে এক জায়গায় বসে বসে
বলছে
আমি খাবো না খাবো না। হঠাত্
এক
বাঘ এসে এমন তারা দিলো এক
দৌড়ে
একদম এক গাছের উপর উঠে পড়লো।
সেখানে বসেও একই কথা আমি
খাবো
না খাবো না। হঠাত্ খেয়াল
করলেন
একদল লোক পিকনিক করতে এলো
সেই
জায়গায়, আর ভালো ভালো
সুস্বাদু
খাবারের হাড়িগুলো রাখে সেই
গাছটিরই নিচে। তারপরেও তার
মুখে
একটাই কথা আমি খাবো না
খাবো
না। হঠাত্ ডাকাতের আক্রমন হলো
ওখানে। প্রান ভয়ে সবাই
পালালো
সেখান থেকে। ডাকাত দলের
একজন
বলছে - বাহ কি সুস্বাদু খাবার, আজ
একেবারে পেট ভরে খাওয়া
যাবে।
সরদার: আরে থাম। এই খাবারে
অবশ্যই
বিষ মেশানো আছে, আমাদের
মারার
জন্য কেউ এই ফাঁদ পেতেছে। ও
আশে
পাশেই আমাদের লুকিয়ে দেখছে,
হঠাত্ চোখ গেলো গাছের ওপর।
সরদার: ও তাহলে তুই সেই লোক।
ওকে গাছ থেকে জোড় করে
নামিয়ে
বলা হলো তুই আগে খাবি, তারপর
আমরা
খাবো, মরলে তুই মরবি। তারপরেও
তার
মুখে একই কথা আমি খাবো না
খাবো
না। এটা শুনে ডাকাতদের সন্দেহ
গেলো আরো বেড়ে। তারপর
চললো
তার ওপর কিছুক্ষন গনধোলাই -
ধিপধাপ..
ধিরিম ধারুম।
তখন সে খেতে বাধ্য হলেন আর
বললেন -
হে কৃষ্ণ তুমি তুমি চাইলে কত দিক
দিয়ে খাওয়াতে পারো আজ
জানলাম।
আজ ডানে খেলাম , বায়ে
খেলাম,
পেটে খেলাম, পিঠে খেলাম,
খেলাম
আর খেলাম। হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ॥
বি:দ্র: ভগবানের দয়া অসীম। তার
লীলা বোঝা বড় দায়। তিনি
কাউকে
অভুক্ত রাখেন না। তাকে জানতে
হলে
জ্ঞানের প্রয়োজন আর তা
আমাদের
ধর্মীয় পুস্তকে আছে। তাই জানতে
হলে
পড়তে হবে। তাই গীতা স্কুলের
পাশাপাশি ধর্মীয় পাঠাগার
অবশ্যই
দরকার।
হরে কৃষ্ণ হরি বল॥

Tuesday, April 25, 2017

এই পৃথিবী কি পূর্বে ভারতবর্ষ ছিল ??

কখনো কি প্রশ্ন জাগে না যে, বিচিত্র রকমের স্থান বা দেশ কেন হল । কেনই বা প্রতিটি দেশ ইউরোপ আফ্রিকার মত প্রাচুর্যময় নয় । কোথাও সমৃদ্ধশালী কোথাও কোন প্রাচুর্যের ছোঁয়া নেই । এর পেছনে কিই বা কারণ থাকতে পারে । আরও একটা প্রশ্ন থাকতে পারে তা হল এসমস্ত বিচিত্র দেশের নামকরণ নিয়ে ।

তাই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর বৈদিক শাস্ত্র থেকে এর সঠিক রহস্য গ্রুপের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল । বৈদিক শাস্ত্র মতে এক সময় সমগ্র পৃথিবীকেই ইলাবৃত বর্ষ বা ভারতবর্ষ নামে ডাকা হত । এই পৃথিবীর শাসনভারের দায়িত্ব ছিল ইতিহাস বিখ্যাত অনেক অনেক রাজাদের হাতে ।

এক সময় ধীরে ধীরে সেই ভারতবর্ষ ভেঙ্গে গড়ে সাতটি পৃথক মহাদেশ এবং বহু দেশ । মূলত, ককেশাস নামক স্থানকে বলা হয় শ্বেত মানবদের উৎপত্তি উৎস হিসেবে । বর্তমান বিশ্বের পশ্চিমা জগতের যেসব সাদা লোকদের দেখতে পাওয়া যায় তাদের উত্তরসূরীদের বসতি ছিল এই ককেশাস (coucasus) নামক স্থানে ।

জিউস, মোসলেম এবং খ্রিষ্টানদের মতে এ স্থানেই ছিল স্বর্গের উদ্যান এটি হল আব্রাহামের বসতভূমি । যেটিকে ইন্দো ইউরোপীয়ান ককেশিয়ানদের পিতৃভূমি হিসেবে মনে করা হয় । তৈত্তিরীয় (Aitareya) উপনিষদে এ বিষয়ে বলা হয়েছে । ব্রহ্মার পুত্র মরিচীর পুত্র ছিল কশ্যপ মুনি । ১২০ মিলিয়ন বছর পূর্বে কশ্যপ মুনি ইন্দো-ইউরোপীয়ানদের পিতা হয়েছিলেন ।

এসমস্ত ইন্দো-ইউরোপীয়ানদের কিছু পৃথিবীর পশ্চিমে গেল আর কিছু গেল পূর্বে । কশ্যপ মুনি স্বয়ং ক্যাসপিয়ান সাগরের নিকটে ধ্যান মগ্ন হয়ছিল । যার বর্তমান নামকরণ অর্থাৎ ক্যাসপিয়ান সাগর ঐ কশ্যপ মুনির নামেই নামকরণকৃত । সূর্যদেব বিবস্বান ছিলেন কশ্যপ মুনির পুত্র যার স্ত্রী ছিলেন অদিতি । সূর্যদেবের অস্থিত্ব যে পশ্চিমা দেশেও ছিল তার প্রমাণ এখন পৃথিবীর অনেক স্থানে সূর্যদেবতাকে পূজার প্রচলন ।

কশ্যপ মুনি এবং দিতি থেকে সৃষ্ট দৈত্যরা তখন ইউরোপ জুড়ে বিস্তার লাভ করেছিল । বর্তমানের টাইটানস (Titans) এবং টিউটনস (Teutons) ডাচ এবং ডিউটস্চল্যান্ড (Deutschland) এ নামগুলো দেয়া হয়েছে ‘দৈত্য’ শব্দ থেকে । এ থেকে দৈত্যদের অবস্থান যে একসময় ছিল তার প্রমাণ মেলে । ব্রহ্মার আরেক পুত্র অত্রি থেকে সোম বা চন্দ্র হয় । চন্দ্রের পুত্র বুদ্ধের পুত্র ছিল পুরুরভ ।

এভাবে বংশানুক্রমে আয়ু নহুম এবং পরে যথাতির জন্ম হয় । যথাতির পাঁচ সন্তান ছিল । ‘যদু’ থেকে বেড়ে উঠে যদুবংশ যেখানে কৃষ্ণ বলরাম আবির্ভূত হয় এবং পুরু থেকে বেড়ে উঠে পুরুবংশ (যে বংশে কৌরব এবং পান্ডবরা জন্মেছিল) যারা হল ভীষ্ম, ধৃতরাষ্ট্র, অর্জুন, যুদিষ্টির, ভীম, দূর্যোধন এবং মহারাজ পরিক্ষিত জন্ম নেয় । পুরু তখন বর্তমান মিশর স্থানটি পেয়েছিলেন তার রাজ্যের শাসনভার হিসেবে । পুরুর পুত্র ছিল প্রভির এবং প্রভিরের পুত্র ছিল মানুষ্য (Manasyu) যাকে মেনেস নামে ডাকা হত । যিনি পশ্চিমা ইতিহাসবিদদের মতে মিশরের প্রথম বংশের প্রতিষ্ঠাতা । পুরুর বংশ এভাবে ফারাও রাজা পর্যন্ত অতিবাহিত হয়েছিল ।

(বিঃ দ্রঃ- এই প্রতিবেদনটি ছাপা হয় টাইম ম্যাগাজিন ও হিন্দু নিউসে……… তার বঙ্গানুবাদটি এখানে সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হল)

চিন্ময় জগতের দূত -শ্রীল প্রভুপাদ

পৃথিবী যখন দ্বন্দ্ব, সংঘাত, যুদ্ধ, সন্ত্রাসে বিক্ষুদ্ধ, তিমির রাত্রির অবসানে প্রভাতকিরণছটার প্রকাশের মতো অপ্রাকৃত জগতের বাণী বহন করে নিয়ে এলেন চিন্ময় জগতের দূত শ্রীল প্রভুপাদ । ভগদ্বিমুখ অন্ধ জড়বাদী মানবসমাজের সৃষ্টি করলেন এক পারমার্থিক নবজাগরণের ইতিহাস ।
গুরুদেবের আদেশ লাভ

শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ ১৮৯৬ সালে কোলকাতায় আবির্ভূত হয়েছিলেন । ১৯২২ সালে কোলকাতায় তিনি তাঁর গুরুদেব শ্রীল ভক্তিসিধান্ত সরস্বতী গোস্বামী প্রভুপাদের সাক্ষাৎ লাভ করেন । শ্রীল ভক্তিসিধান্ত সরস্বতী ঠাকুর ছিলেন ভক্তিমার্গের বিদগ্ধ পন্ডিত এবং ৬৪ টি গৌড়ীয় মঠের (বৈদিক সংঘের) প্রতিষ্ঠাতা । তিনি এই বুদ্ধিদীপ্ত, তেজস্বী ও শিক্ষিত যুবকটি সারা বিশ্বে ইংরেজী ভাষায় বৈদিক জ্ঞান প্রচারের কাজে জীবন উৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেন । শ্রীল প্রভুপাদ এগার বছর ধরে তাঁর আনুগত্যে বৈদিক শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরে ১৯৩৩ সালে এলাহবাদে তাঁর কাছে দীক্ষা পাপ্ত হন ।

১৯২২ সালে শ্রীল ভক্তিসিধান্ত সরস্বতী ঠাকুর শ্রীল প্রভুপাদকে ইংরেজী ভাষার মাধ্যমে বৈদিক জ্ঞান প্রচার করতে নির্দেশ দেন । পরবর্তীকালে শ্রীল প্রভুপাদ ভগবদগীতার ভাষ্য লিখে গৌড়ীয় মঠের প্রচারের কাজে সহায়তা করেছিলেন । ১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তিনি এককভাবে একটি ইংরেজী পাক্ষিক পত্রিকা ‘Back To Godhead’ প্রকাশ করতে শুরু করেন । এমনকি তিনি নিজের হাতে পত্রিকাটি বিতরণও করতেন । পত্রিকাটি এখনও সারা পৃথিবীতে নানা ভাষায় তাঁর শিষ্যবৃন্দ কর্তৃক মুদ্রিত ও প্রকাশিত হচ্ছে ।
জীবনব্রত সাধনের প্রস্তুতি

১৯৪৭ সালে শ্রীল প্রভুপাদের দার্শনিক জ্ঞান ও ভক্তির উৎকর্ষতার স্বীকৃতিরূপে ‘গৌড়িয় বৈষ্ণব সমাজ’ তাঁকে “ভক্তিবেদান্ত” উপাধিতে ভূষিত করেন । ১৯৫০ সালে তাঁর ৫৪ বছর বয়সে শ্রীল প্রভুপাদ সংসার জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করে চার বছর পর ১৯৫৪ সালে বাণপ্রস্থ আশ্রম গ্রহণ করেন এবং শাস্ত্র অধ্যয়ন, প্রচার ও গ্রন্থ রচনার কাজে মনোনিবেশ করেন । তিনি বৃন্দাবনে শ্রীশ্রীরাধা-দামোদর মন্দিরে বসবাস করতে থাকেন এবং অতি সাধারণভাবে জীবনযাপন করতে শুরু করেন । ১৯৫৯ সালে তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করেন ।

তাঁর গুরুদেবের আদেশ পালন-----

শ্রীশ্রীরাধা-দামোদর মন্দিরেই শ্রীল প্রভুপাদের শ্রেষ্ঠ অবদানের সূত্রপাত হয় । এখানে বসেই তিনি অপ্রাকৃত মহাগ্রন্থ শ্রীমদভাগবতের অনুবাদ কর্মের সূচনা করেন । এখন সেটি ১৮ টি বিপুলায়তন খন্ডে প্রকাশিত হয়ে সারা পৃথিবীতে বিতরিত হচ্ছে ও কৃষ্ণ চেতনার উন্মেষ সাধন করছে ।

১৯৬০ সালে দিল্লীতে ‘পরলোকে সুগম যাত্রা’ নামক প্রথম গ্রন্থ প্রকাশ ।
১৯৬২ সালে দিল্লীতে শ্রীমদভাগবতের ১ম স্কন্ধের ১ম খন্ড ইংরেজীতে প্রকাশ ।

১৯৬৫ সালে ৭০ বছর বয়সে তিনি প্রায় সম্পূর্ণ কপর্দকহীন অবস্থায় আমেরিকায় নিউইয়র্ক শহরে পৌছান । প্রায় এক বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করার পর তিনি ১৯৬৬ সালের জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠা করেন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণাবনামৃত সংঘ বা ইসকন । তাঁর সযত্ন নির্দেশনায় এক দশকের মধ্যে গড়ে ওঠে বিশ্বব্যাপী শতাধিক আশ্রম, বিদ্যালয়, মন্দির ও পল্লী-আশ্রম । বিশ্বের সমস্ত দেশের বুদ্ধিশীল মেধাবী তরুন তরুনীরা এই আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করতে থাকেন ।

১৯৬৬ সালের শেষে ইসকনের ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা ।
১৯৬৭ সালে ৯ জুলাই পাশ্চাত্যে (সানফ্রান্সিসকো) প্রথম রথযাত্রা উৎসব পালন ।

১৯৬৮ সালে শ্রীল প্রভুপাদ পশ্চিম ভার্জিনিয়ার পার্বত্য-ভূমিতে গড়ে তোলেন নব বৃন্দাবন, যা হল বৈদিক সমাজের প্রতীক । এই সফলতায় উদ্ধুব্ধ হয়ে তাঁর শিষ্যবৃন্দ পরবর্তীকালে ইউরোপ ও আমেরিকায় আরও অনেক পল্লী-আশ্রম গড়ে তোলেন ।

১৯৬৯ সালে ২৩ জুন লস এঞ্জেলেসে ১ম রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা, যা কয়েকটি টিভি চ্যান্যালে সরাসরি দেখানো হয় যার মধ্যে অন্যতম বি.বি.সি ।

১৯৬৯ সালে ১৪ ডিসেম্বর লন্ডনে শ্রীশ্রী রাধা-লন্ডনেশ্বর বিগ্রহ স্থাপন ও মন্দির উদ্বোধন ।
১৯৭০ সালে সমগ্র বিশ্বের ইসকন পরিচালনার জন্য গভর্নিং বডি কমিশন (জিবিসি) গঠন ।
১৯৭১ সালে জুনে মস্কো পরিদর্শন এবং সেখানে কৃষ্ণভাবনার বীজ রোপন ।

শ্রীল প্রভুপাদের অনবদ্য অবদান হল তাঁর গ্রন্থাবলী । তাঁর রচনাশৈলী আধুনিক, কিন্তু গাম্ভীর্যপূর্ণ ও প্রাঞ্জল এবং শাস্ত্রানুমোদিত । সেই কারনে বিদগ্ধ সমাজের তাঁর রচনাবলী অত্যন্ত সমাদৃত এবং বহু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে আজ সেগুলি পাঠ্যরূপে ব্যবহৃত হচ্ছে । বৈদিক দর্শনের এই গ্রন্থাবলী প্রকাশ করছেন তাঁরই প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গ্রন্থ প্রকাশনী সংস্থা ‘ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট’ । শ্রীল প্রভুপাদ শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের সপ্তদশ খন্ডের তাৎপর্যসহ ইংরেজী অনুবাদ আঠার মাসে সম্পূর্ণ করেছিলেন । বিশ্বের নানা ভাষায় তা অনূদিত হয়েছে ।

১৯৭২ সালে আমেরিকার ডালাসে গুরুকুল বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শ্রীল প্রভুপাদ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বৈদিক শিক্ষা-ব্যবস্থায় প্রচলন করেন । ১৯৭২ সালে মাত্র তিনজন ছাত্র নিয়ে এই গুরুকুলের সূত্রপাত হয় এবং আজ সারা পৃথিবীর ১৫ টি গুরুকূল বিদ্যালয় ছাত্রের সংখ্যা প্রায় ২০০০ জন ।

পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শ্রীধাম মায়াপুরে শ্রীল প্রভুপাদ সংস্থার বিশ্ব-মুখ্য কেন্দ্রটি স্থাপন করেন ১৯৭২ সালে । এখানে ৫০ হাজার ভক্ত সমন্বিত এক বৈদিক নগরীর তিনি সূচনা করেন । এখানে বৈদিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য একটি বর্ণাশ্রম কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনাও তিনি দিয়ে গেছেন । শ্রীল প্রভুপাদের নির্দেশে বৈদিক ভাবধারার উপর প্রতিষ্ঠিত এই রকম আর একটি আশ্রম গড়ে উঠেছে বৃন্দাবনের শ্রীশ্রীকৃষ্ণ-বলরাম মন্দিরে, যেখানে আজ দেশ-দেশান্তর থেকে আগত বহু পরমার্থী বৈদিক সংস্কৃতির অনুশীলন করেছেন । তাঁর সবচেয়ে বিস্ময়কর পরিকল্পনা রূপায়িত হতে চলছে শ্রীমায়াপুরে । ৩৬ তলা সমান উঁচু বৈদিক গ্রহমন্ডল মন্দির (বিশ্বের সবচেয়ে বড় মন্দির) হবে পৃথিবীর এক আশ্চর্য স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন, (যা এখন কাজ চলছে শেষ হবে ২০১৫-১৬ সালে) এবং পৃথিবীর মানুষকে মহাপ্রভুর বাণী গ্রহনে আকৃষ্ট করবে ।

১৯৭৫ সালে ইসকনের বিজ্ঞান গবেষণামূলক শাখা ‘ভক্তিবেদান্ত ইনিস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করেন ।

১৯৭৭ সালে এই ধরাধাম থেকে অপ্রকট হওয়ার পূর্বে শ্রীল প্রভুপাদ সমগ্র জগতের কাছে ভগবানের বাণী পৌছে দেবার জন্য তাঁর বৃ্দ্ধাবস্থাতেও সমগ্র পৃথিবী ১৪ বার পরিক্রমা করেন । মানুষের মঙ্গলার্থে এই প্রচার-সূচীর পূর্ণতা সাধন করেও তিনি বৈদিক দর্শন, সাহিত্য ধর্ম ও সংস্কৃতি সমন্বিত ৮০ টি গ্রন্থাবলী রচনা করে গেছেন, যার মাধ্যমে এ জগতের মানুষ পূর্ণ আনন্দময় এক দিব্য জগতের সন্ধান লাভ করবে । তিনি এই জড়বাদী ইন্দ্রিয়তৃপ্তি কেন্দ্রিক সভ্যতায় এক নতুন জীবন-প্রণালী, এক পরিশুদ্ধ সুন্দর পবিত্র জীবনধারা সারা পৃথিবীতে প্রবর্তন করে গিয়েছেন, যা আধুনিক বিশ্বে এক নতুন পারমার্থিক রেনেসাঁ বা নবজাগরনের সূত্রপাত করেছে । এটি মহীরূহের আকার গ্রহণ করে পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত হবে, পৃথিবীর মানুষ হবে প্রকৃতই সুখী – শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু স্বয়ং এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন ।

শ্রীল প্রভুপাদের অবিস্মরণীয় অবদানের কিছু দৃষ্টান্ত------

# সারা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশের প্রধান প্রধান শহর-সহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫০০ এর বেশি কেন্দ্র, মন্দির, কৃষি খামার ।

# পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মানুষ কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন গ্রহণ করেছেন; কদাভ্যাস ত্যাগ করে ভক্তিযোগ অনুশীলন করছেন । (আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি তথ্য অনুসারে শুধু আমেরিকাতেই এই সংখ্যা কয়েক লক্ষ, আর এখন সবচেয়ে বেশি প্রচার ও ভক্ত হচ্ছে রাশিয়াতে) ।

# নিউইয়র্কের ‘ভক্তিবেদান্ত আর্কাইভ্স’-এ সংগ্রহীত হয়েছে শ্রীল প্রভুপাদের নানা সময় নানা দেশে প্রদত্ত ২৫০০ ঘন্টারও বেশি ইংরেজী অডিও ভাষণ, ৫০ ঘন্টা ভিডিও, ৩০ হাজারেরও বেশি নানা শিল্পীর অংকিত কৃষ্ণভাবনাময় চিত্রকর্ম ছবি ।

# শ্রীল প্রভুপাদের অনবদ্য ভাষা-সমন্বিত ইংরেজী ভগবদগীতা অ্যাজ ইট ইজ এখন ১০৫ টির বেশি ভাষায় অনূদিত হয়ে সারা পৃথিবীর প্রত্যেক অঞ্চলে পৌছাচ্ছে । ১৯৯৬ সালের পূর্বেই পাঁচ কোটিরও বেশি সংখ্যায় বিতরিত হয়ে ইতিমধ্যেই 'ভগবদগীতা অ্যাজ ইট ইজ' পৃথিবীর বেস্
ট সেলার হিসেবে গিনেস বুকে স্থান করে নিয়েছে । পৃথিবীর বহু নামী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বইটি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ।

# শ্রীল প্রভুপাদের গ্রন্থাবলী প্রকাশিত হয় ‘ভক্তি বেদান্ত বুক ট্রাস্ট’ বা বি. বি. টি থেকে, সেটি এখন পৃথিবীর বৃহত্তম প্রকাশনা সংস্থা । যা প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭০ সালে ।

সারা পৃথিবীতে ইসকন মন্দির, কেন্দ্র, কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের সাম্প্রতিকতম খবরাখবর, তথ্যাদি জানতে ইন্টারনেটে ইসকনের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট www.krishna.com   দেখুন । এর থেকে ইসকনের আরও অনেক আকর্ষণীয় ওয়েবসাইটর ঠিকানা পাওয়া যাবে ।

তাছাড়া ইসকন চট্টগ্রামের ওয়েবসাইটর ঠিকানা www.iskconctg.org

ইসকন বাংলাদেশ www.iskconbd.org

ইসকন সিলেট www.iskconsylhet.com

আর এই প্রথম ই-পারমার্থিক পত্রিকা পড়তে পারেন সম্পূর্ণ বাংলায় www.caitanyasandesh.com

আর google এ iskcon দিয়ে সার্চ দিলে হাজার হাজার ওয়েবসাইটর ঠিকানা বের হবে ।

শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান হওয়া সত্ত্বেও কেন একজন জরা নামক সাধারন মানুষ দ্বারা শরবিদ্ধ হলেন ?

ত্রেতাযুগে রাম অবতারের সময়ে জরা ব্যাধ ছিলেন বালিপুত্র অঙ্গদ । রামচন্দ্র বালি কে বধ করেছিলেন । অঙ্গদ পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন ।
পরবর্তীতে ভগবান রামচন্দ্রের শরণাগ হয়ে পরম ভক্ততে পরিনত হন । ত্রেতাযুগে সেই প্রতিজ্ঞা পূর্ণ না হওয়ায় দ্বাপর যুগে স্বয়ং ভগবান ভক্তের এই প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেন ।

বিশ্রামরত অবস্থায় যখন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার ডান চরণ কমল নাড়াচ্ছিলেন তখন ব্যধ হরিণ ভেবে তীর নিক্ষেপ করেন ।জরা যখন বুঝতে পারেন যে তিনি স্বয়ং ভগবানকে ভুলে তীর নিক্ষেপ করেন তত্‍ক্ষনাত্‍ তিনি ভগবানের চরনে দন্ডবতত্‍পূর্বক ক্ষমা প্রার্থনা করেন । এর পর জরা ভগবানের ডান পায়ের তীর অপসারন করেন এবং নিকটস্থ পুকুরে সেই চরণ ধৌত করলেন যা বর্তমানে প্রবাস তীর্থক্ষেত্র নামে পরিচিত ।এখনো সেই পুকুর রয়েছে যেখানের জল পবিত্ররূপে গণ্য করা হয় । এরপর পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জরাকে দুঃখিত না হওয়ার জন্য বললেন এবং পূর্বজন্মের প্রতিজ্ঞার কথা জরাকে স্মরণ করিয়ে দেন । ঠিক যেন রঙ্গমঞ্চে অভিনয়ের মত ঘটনা ।এরপর ভগবান জরাকে কৃপা করেন এবং তত্‍ক্ষনাত্‍ জরার বৈকুন্ঠ গতিপ্রাপ্ত হয় । এবার শ্রীকৃষ্ণ চর্তভুজ রূপে পরিগ্রহ করে সেই স্থান থেকে কিছু দূর হেঁটে হিরণ নদীর তীরে গেলেন এবং স্বীয় দেহে বৈকুন্ঠে প্রত্যাবর্তন করলেন । অমল পুরাণ শ্রীমদ্ভাগবতে এই লীলার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া রয়েছে ।

আমাদের সমাজে একটি ভুল ধারনা রয়েছে যে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যু হয়েছিল বা নশ্বর দেহ পোড়ানো হয়েছিল ইত্যাদি । কিন্তু এই তথ্য আদৌ সত্য নয় । শ্রীমদ্ভগবদগীতায় স্বয়ং ভগবান উল্লেখ করেছেন যে , "জন্ম কর্ম চ মে দিব্যম " -আমার জন্ম কর্ম দিব্য । এখানে স্পষ্টত ভগবানের সব লীলাই দিব্য এবং তার দেহ সচ্চিদানন্দময় যা কোন জড় নশ্বর দেহ নয় । ভগবানের জন্মকর্ম যেখানে বড় বড় সাধু যোগী এবং দেবতারাও বুঝতে সক্ষম নয় সেখানে সাধারন মানুষের আর কি কথা । তাই পরিপূর্ণ হ্বদয়াঙ্গম না করে ভগবানের লীলা বিষয় কোন মন্তব্য করা উচিত নয় ।

সনাতন ধর্ম মতে কিভাবে সৃষ্টি হয়েছিল এ পৃথিবী?

আদিকাল থেকে এখনো পর্যন্ত এ যেন মানুষের এক অনন্ত জিজ্ঞাসা।
সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে বেদ এর বিখ্যাত নাসাদিয় সুক্ত এবং হিরন্যগর্ভ সুক্ত এর কথা অনেকেই জানেন।ধর্মবিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানী মহলে বহুল আলোচিত এই দুটি সুক্তের আলোকে সৃষ্টিতত্ত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করা হল-
ঋগবেদ ১০/১২৯/১
"নাসাদাসিস নঃ সদাসিত্ তদানীম নাসিদ রজ ন ব্যামাপ্রো যৎ..."
"শুরুতে কোন অস্তিত্ব(সৎ) বা অনস্তিত্ব(অসৎ) ছিলনা।সেখানে ছিলনা কোন বায়ুমন্ডল"
ঋগবেদ ১০/১২৯/৩
"তম অসিৎ তমস... তপসস্তন্মহিনাজায়াতৈকম”
"চারদিক ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন। সমস্ত জিনিস একত্রে পুন্জীভুত ছিল।সেখান থেকে প্রচন্ড তাপের সৃষ্টি হল"
একইভাবে
ঋগবেদ ১০/১২১/১
"হিরন্যগর্ভ সামাভরতাগ্রে.."
"প্রথমেই হিরন্যগর্ভ সৃষ্টি হল"
ঋগবেদ ১০/১২১/৭
"আপ হ য়দ বৃহাতিরিবিশ্বমা য়ান গর্ভম..."
"সেই হিরন্যগের্ভ ছিল উত্তপ্ত তরল যাতে ছিল সৃষ্টির সমস্ত বীজ"
একই ধরনের কথা বলছে শতপথ ব্রাক্ষ্মন ১১.১.৬.১
"হিরন্যগর্ভানি অপঃ তে সলিলা..."
"প্রথমে হিরন্যগর্ভ সৃষ্টিহল।সেখানে ছিল উত্তপ্ত গলিত তরল।এটি ছিল মহাশুন্যে ভাসমান।বছরের পরবছর এই অবস্থায় অতিক্রান্ত হয়।"
ঋগবেদ ১০.৭২.২
"তারপর যেখানে বিস্ফোরন ঘটল গলিত পদার্থ থেকে,বিন্দু থেকে যেন সব প্রসারিত হতে শুরু হল"
ঋগবেদ ১০.৭২.৩
"সেই বিস্ফোরিত অংশসমূহ থেকে বিভিন্ন গ্রহ,নক্ষত্র তৈরী হল"
ঋগবেদ ১০.৭২.৪
"তার এক জীবনপ্রদ অংশ থেকে পৃথিবী সৃষ্টি হল"
ঋগবেদ ১০.৭২.৮-৯
"তারপর সৃষ্ট ক্ষেত্রে সাতধাপে সংকোচন-প্রসারন সম্পন্ন হল।তারপর সৃষ্টি হল ভারসাম্যের।"
এই অংশটুকু পরলেই স্পষ্ট বোঝা যায় বেদের সৃষ্টিতত্ত আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ।সৃষ্টিতত্তের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মডেল “Lambda-CDM Concordance Model” অনুযায়ী “the evolution of the universe from a very uniform, hot, dense primordial state to its present অর্থাৎ একটি উত্তপ্ত, কেন্দ্রীভূত আদি অবস্থা থেকেই বর্তমান অবস্থার উত্থান।”এছাড়া বেদ এ উল্লেখিত বিস্ফোরণ বর্তমান বিশ্বের বহুল আলোচিত বিগ ব্যাংগ তত্তের সাথে প্রায় পুরোপুরি মিলে যায়।
আশ্চর্যের এখানেই শেষ নয়।বেদ এর মতে সৃষ্টির শুরুতেই ওঁম উচ্চারিত হয় আর এর প্রভাবেই হয় বিস্ফোরন ।
বেদান্ত সূত্র(4/22)
"অনাবৃতিঃ শব্দহম"
অর্থাৎ শব্দের মাধ্যমেই সৃষ্টির শুরু যা মাত্র দুই বছর আগে বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করেছেন।
বিজ্ঞানীদের দেয়া নতুন STRING THEORY অনুযায়ী প্রথমেই একটা অতি নিম্ন তড়ঙ্গ দৈর্ঘ্য এর শব্দ তড়ঙ্গ তৈরী হয় যার ধাক্কায় বিস্ফোরণ শুরু হয়!
তাই বেদের সৃষ্টিতত্ত পড়ে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর Dr. Kevin Hurley বলেছিলেন
"How could Aryan sages have known all this 6000 years ago, when scientists have only recently discovered this using advanced equipments which didn't exist that time!"
তথ্যসূত্র VEDA, The infallible word of GOD