ত্রেতাযুগে রাম অবতারের সময়ে জরা ব্যাধ ছিলেন বালিপুত্র অঙ্গদ । রামচন্দ্র বালি কে বধ করেছিলেন । অঙ্গদ পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন ।
পরবর্তীতে ভগবান রামচন্দ্রের শরণাগত হয়ে পরম ভক্ততে পরিনত হন । ত্রেতাযুগে সেই প্রতিজ্ঞা পূর্ণ না হওয়ায় দ্বাপর যুগে স্বয়ং ভগবান ভক্তের এই প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেন ।
বিশ্রামরত অবস্থায় যখন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার ডান চরণ কমল নাড়াচ্ছিলেন তখন ব্যধ হরিণ ভেবে তীর নিক্ষেপ করেন ।জরা যখন বুঝতে পারেন যে তিনি স্বয়ং ভগবানকে ভুলে তীর নিক্ষেপ করেন তত্ক্ষনাত্ তিনি ভগবানের চরনে দন্ডবতত্পূর্বক ক্ষমা প্রার্থনা করেন । এর পর জরা ভগবানের ডান পায়ের তীর অপসারন করেন এবং নিকটস্থ পুকুরে সেই চরণ ধৌত করলেন যা বর্তমানে প্রবাস তীর্থক্ষেত্র নামে পরিচিত ।এখনো সেই পুকুর রয়েছে যেখানের জল পবিত্ররূপে গণ্য করা হয় । এরপর পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জরাকে দুঃখিত না হওয়ার জন্য বললেন এবং পূর্বজন্মের প্রতিজ্ঞার কথা জরাকে স্মরণ করিয়ে দেন । ঠিক যেন রঙ্গমঞ্চে অভিনয়ের মত ঘটনা ।এরপর ভগবান জরাকে কৃপা করেন এবং তত্ক্ষনাত্ জরার বৈকুন্ঠ গতিপ্রাপ্ত হয় । এবার শ্রীকৃষ্ণ চর্তভুজ রূপে পরিগ্রহ করে সেই স্থান থেকে কিছু দূর হেঁটে হিরণ নদীর তীরে গেলেন এবং স্বীয় দেহে বৈকুন্ঠে প্রত্যাবর্তন করলেন । অমল পুরাণ শ্রীমদ্ভাগবতে এই লীলার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া রয়েছে ।
আমাদের সমাজে একটি ভুল ধারনা রয়েছে যে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যু হয়েছিল বা নশ্বর দেহ পোড়ানো হয়েছিল ইত্যাদি । কিন্তু এই তথ্য আদৌ সত্য নয় । শ্রীমদ্ভগবদগীতায় স্বয়ং ভগবান উল্লেখ করেছেন যে , "জন্ম কর্ম চ মে দিব্যম " -আমার জন্ম কর্ম দিব্য । এখানে স্পষ্টত ভগবানের সব লীলাই দিব্য এবং তার দেহ সচ্চিদানন্দময় যা কোন জড় নশ্বর দেহ নয় । ভগবানের জন্মকর্ম যেখানে বড় বড় সাধু যোগী এবং দেবতারাও বুঝতে সক্ষম নয় সেখানে সাধারন মানুষের আর কি কথা । তাই পরিপূর্ণ হ্বদয়াঙ্গম না করে ভগবানের লীলা বিষয় কোন মন্তব্য করা উচিত নয় ।
No comments:
Post a Comment