Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Sunday, March 12, 2017

দোল পূর্ণিমা, হোলি উৎসব এবং শ্রী গৌর পূর্ণিমা কি ??

প্রথমে বলি দোল পূর্ণিমার কথা। আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে বৃন্দাবন লীলায় ব্রজবাসীগণ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং তাঁর অন্তরঙ্গা শক্তি রাধা রানীকে একত্রে পেয়ে সীমাহীন আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে তাঁদের চরণে আবির ঢেলে রঞ্জিত করে দেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধা রানীও এ আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন।
কিন্তু, ঐ দিনটি ছিল ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথি। ঐ দিনটিতে এতোটাই আনন্দ উৎসব যে পরবর্তীতে বৃন্দাবন বাসীরা আর ঐ দিনটিকে ভুলতে পারেন নি। যা আজও মানুষ পালন করে চলেছে। এই দিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আর রাধা রানীকে বৃন্দাবন বাসীরা প্রেমানন্দে দোলনায় দোল দিয়েছিল বলে এই উৎসবটিকে দোল উৎসবও বলা হয়। আর ফাল্গুন মাসের এই পূর্ণিমাকে বলা হয় দোল পূর্ণিমা।
এই উৎসবটি পরবর্তীতে সমগ্র ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। এই উৎসবটি পরে হোলি নামে খ্যাতি পায়। ধরে নেওয়া হয় অত্যাচারী রাজার হিরণ্যকশিপুর দানবী বোন হোলিকা থেকে এই নামের উৎপত্তি। সকল প্রকার দানবীর ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে জয়লাভের প্রতীক-ই হলো এই রঙিন আনন্দ উৎসব। এখন সমগ্র বিশ্বের মানুষ আজ এই উৎসব পালন করছে, কেউ বলছে ফেস্টিভাল অফ কালারস।
এবার আসি গৌর পুর্নিমার কথায়। শ্রী গৌর সুন্দর হলেন কলি যুগের সাক্ষাৎ কৃষ্ণ অবতার।। কলির অধঃপতিত জীবদের করুনা করতে তিনি আবির্ভূত হলেন শ্রীধাম নবদ্বীপে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে তিনি বেছে নিলেন ইংরেজি 1486 সালের ফাল্গুন মাসের এই পূর্ণিমা তিথি তথা দোল পূর্ণিমার এই পুন্য তিথিকে। যেন আনন্দ উৎসবে এক নতুন মাত্রা যোগ করলেন। আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয়টি হচ্ছে ঐদিন সন্ধ্যায় মহাপ্রভুর আবির্ভাবের সময় হঠাৎ করে চন্দ্র গ্রহণ শুরু হয়ে যায়। অর্থাৎ পূর্ণিমার মাঝে চন্দ্র গ্রহণ। যাকে বলা হয় eclipse of full moon যা জোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল একটি সন্ধিক্ষণ। শত বছরে এক দুইবার খুবই অল্প সময়ের জন্য এই সন্ধিক্ষণগুলো আসে। তাই মহাপ্রভুর জন্মের এই সময়কে বলা হয় Auspicious সময়। এই রহস্যময় সময়েই দিক বিদিক আলো করে উলুধ্বনি আর শঙ্খনাদের গর্জনে শচীমাতা আর জগন্নাথ মিশ্রের ঘরে আবির্ভূত হলেন শ্রীম্মন মহাপ্রভু। মহাপ্রভুর জয় হোক।
তাই এই পবিত্র তিথি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। এই দিনই সকল কৃষ্ণ ভক্ত মানুষের নয়নের মনি শচীনন্দন শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাব তিথি।
সে কারনেই আজকের এই পুন্য তিথিটি সকল বৈষ্ণব তথা সকল কৃষ্ণ ভক্ত মানুষদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। আসুন, সবাই আবির ছুঁয়ে দেখি, রাধা গোবিন্দের শ্রী চরণের আবিরে নিজেদের রঞ্জিত করি আর সেই সাথে গৌর বন্দনা করে হই পুলকিত।।
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

No comments:

Post a Comment