Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Saturday, March 18, 2017

পবিত্র বেদবাক্য

সনাতন ধর্ম কি বলে?

★“জীবে প্রেম করে যেই জন, সেইজন
সেবিছে ঈশ্বর”-স্বামী বিবেকানন্দ।
★“সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে
নাই”-চন্ডীদাস।
★“মানুষ আপন টাকা পর, যত পারিস মানুষ
ধর”-শ্রী শ্রী ঠাকুর অনকুলচন্দ্র।

=>উপরের বাক্য তিনটি হিন্দু ধর্মের তিনজন
মাহামানবের বলা। হিন্দু ধর্মের অসংখ্য
মহামানব এরকম হাজার হাজার বানী
দিয়ে গেছেন যা কোন বিশেষ ধর্মের
মানুষের জন্য নয় বরং সমগ্র মানব
জাতিকে উদ্দেশ্য করে। হিন্দুরা সত্যই
বিশ্বাস করে প্রত্যেক জীবের মধ্যে
ঈশ্বর আছেন আর তাই তারা যখন কারো
সাথে পরিচিত হয় তাকে মাথা নিচু করে
নমষ্কার জানায় কারণ প্রত্যেকের
ভিতরে থাকা ঈশ্বরকে তারা শ্রদ্ধা
করে। হিন্দু ধর্মের উদারতার একটি বড়
প্রমান হিন্দুরা কখনই বলে না তাদের ধর্ম
অন্য ধর্ম থেকে শ্রেষ্ঠ। কারণ তারা
বিশ্বাস করে “আপনাকে যে বড় বলে বড়
সে নয়, লোকে যারে বড় বলে বড় সেই হয়”।
হিন্দুরা প্রত্যেক মানুষকে সমানভাবে
শ্রদ্ধা করে বলেই কোন হিন্দু মহামানব
কখনই অন্য ধর্মের কোন মানুষকে হিন্দু
ধর্ম গ্রহনের জন্য প্রভাবিত করে না বা
এই রকম প্রলভন দেখায় না যে হিন্দু ধর্ম
গ্রহন করলে তার জন্য স্বর্গ নিশ্চিত।
হিন্দু ধর্মের মহামানবরা বলেন না যে,
“একজন হিন্দু আরেকজন হিন্দুর ভাই” বরং
হিন্দুরা প্রার্থনার শুরুতে বলে,
“সর্বে ভবন্ত সুখিন,
সর্বে সন্ত নিরাময়া,
সর্বে ভদ্রানি পশ্যন্ত,
মা কশ্চিদ দুঃখভোগে ভবেত।।
অর্থাৎ জগতের সকলেই সুখি হউক, সকলেই
নিরাময় লাভ করুক, সকলেই মঙ্গল লাভ
করুক, কেহ যেন দুঃখ ভোগ না করে।
এই ভাবেই হিন্দুরা পৃথিবীর সকল মানুষ
এবং জীবের মঙ্গল কামনা করে। হিন্দু
ধর্মে এই উদারতা আছে বলেই একে বলা
হয় সনাতন ধর্ম যার অর্থ এটি সৃষ্টির শুরু
থেকে ছিল, আছে এবং থাকবে। হিন্দু
ধর্মের মানুষের মাঝে উদারতা আছে
বলেই তাদের মন্দিরে যে কোন মানুষের
অবাধ বিচরণ করার অধিকার রাখে।

সনাতন ধর্মের বিবাহঃ পদ্ধতি

“বিবাহ” শব্দটি বি-পূর্বক বহ্ ধাতু ও ঘঞ্ প্রত্যয়যোগে গঠিত। বহ্ধাতুর অর্থ বহন করা এবং “বি” উপসর্গের অর্থ বিশেষরুপে।সুতরাং বিবাহ শব্দের অর্থ বিষেশ রুপে বহন করা। বিবাহের ফলে পুরুষ স্ত্রীর ভরণ-পোষণ এবং মানসম্ভ্রমরক্ষার সার্বিক ভার বহন করতে হয়।
স্মৃতি শাস্ত্রের বিখ্যাত গ্রন্থ মনুসংহিতায় আট প্রকার বিবাহের কথা বলা আছে।
সেগুলো হল:-
(১) ব্রাহ্ম
(২) আর্য
(৩) প্রাজাপত্য
(৪) আসুর
(৫) গান্ধর্ব
(৬) রাক্ষস
(৭) দৈব
(৮) পৈশাচ
জাতি এবং শ্রেণী বিভাগে এই বিবাহ গুলো হয়ে থাকে তবে ব্রাহ্ম, দৈব, আর্য, প্রাজাপত্য বিবাহ রীতি গুলোই প্রচলিত।
বর্তমান মানব সমাজে ব্রাহ্ম বিবাহই স্বীকৃত এবং পালনীয়।
ব্রাহ্ম বিবাহ ঃ– কন্যাকে বস্ত্র এবং অলংকার দ্বারা আচ্ছাদন করে বিদ্বান ও সদাচারী বরকে স্বয়ং আমন্ত্রন করে যে কন্যা দান করা হয়তাকে ব্রাহ্মবিবাহ বলে।
বর্তমানে কেউ না মানলেও সমাজে গান্ধর্ব বিবাহের প্রচলন আছে। নারী-পুরুষ পরস্পর শপথ করে মাল্যবিনিময়ের মাধ্যমে যে বিবাহ করে তার নাম গান্ধর্ব বিবাহ। এর উদাহরণ, মহাভারতে দুষ্মন্ত ও শকুন্তলার বিবাহ গাদ্ধর্ব বিবাহ ছিল।
বেদে খুব পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছেঃ
উদীর্স্বাতো বিশ্বাবাসো নমসেলামহে ত্বা ।
অন্যামিচ্ছ প্রফর্ব্যং সং জায়াং পত্যা সৃজ ।।১০/৮৫/২২।।
—অর্থাত্ তুমি যাও ও অবিবাহিত নারীকে তোমার অর্ধাঙ্গিণী কর এবং তাকে সমান অধিকার প্রদান কর।
আমাদের সনাতন বিবাহে কত গুলো বিধিবিধান শাস্ত্রীয়, কিছু অনুষ্ঠান আচার রয়েছে। শুভলগ্নে নারায়ণ, অগ্নি, শিব, দূর্গা, গুরু ইত্যাদি দেবতাকে আহবান করে এবং পুরোহিত আত্মীয় স্বজনদের সাক্ষী করে মঙ্গল মন্ত্রের উচ্চারণ, উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে বিবাহনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বিয়ের মন্ত্রের শেষ হয় যজ্ঞের মাধ্যমে।
বিবাহের মূল মন্ত্র যা স্বামী স্ত্রীরা প্রতিজ্ঞা করে থাকে :
“যদেতত্ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম ।
যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব ।।”
—তোমার এই হৃদয় আমার হোক আমার এইহৃদয় তোমার হোক।
বিবাহের মাধ্যমে একজন নারীপুরুষ চিরজীবন একসাথে সুখে দুঃখে থাকবার প্রতিজ্ঞা করে। বিবাহ আমাদের সনাতন ধর্মের একটি অন্যতম অংশ। প্রত্যেকেরই জীবনকে পরিপূর্ণ করতে বিবাহ করা আবশ্যক।

সনাতন ধর্মের বিবাহঃ পদ্ধতি

“বিবাহ” শব্দটি বি-পূর্বক বহ্ ধাতু ও ঘঞ্ প্রত্যয়যোগে গঠিত। বহ্ধাতুর অর্থ বহন করা এবং “বি” উপসর্গের অর্থ বিশেষরুপে।সুতরাং বিবাহ শব্দের অর্থ বিষেশ রুপে বহন করা। বিবাহের ফলে পুরুষ স্ত্রীর ভরণ-পোষণ এবং মানসম্ভ্রমরক্ষার সার্বিক ভার বহন করতে হয়।
স্মৃতি শাস্ত্রের বিখ্যাত গ্রন্থ মনুসংহিতায় আট প্রকার বিবাহের কথা বলা আছে।
সেগুলো হল:-
(১) ব্রাহ্ম
(২) আর্য
(৩) প্রাজাপত্য
(৪) আসুর
(৫) গান্ধর্ব
(৬) রাক্ষস
(৭) দৈব
(৮) পৈশাচ
জাতি এবং শ্রেণী বিভাগে এই বিবাহ গুলো হয়ে থাকে তবে ব্রাহ্ম, দৈব, আর্য, প্রাজাপত্য বিবাহ রীতি গুলোই প্রচলিত।
বর্তমান মানব সমাজে ব্রাহ্ম বিবাহই স্বীকৃত এবং পালনীয়।
ব্রাহ্ম বিবাহ ঃ– কন্যাকে বস্ত্র এবং অলংকার দ্বারা আচ্ছাদন করে বিদ্বান ও সদাচারী বরকে স্বয়ং আমন্ত্রন করে যে কন্যা দান করা হয়তাকে ব্রাহ্মবিবাহ বলে।
বর্তমানে কেউ না মানলেও সমাজে গান্ধর্ব বিবাহের প্রচলন আছে। নারী-পুরুষ পরস্পর শপথ করে মাল্যবিনিময়ের মাধ্যমে যে বিবাহ করে তার নাম গান্ধর্ব বিবাহ। এর উদাহরণ, মহাভারতে দুষ্মন্ত ও শকুন্তলার বিবাহ গাদ্ধর্ব বিবাহ ছিল।
বেদে খুব পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছেঃ
উদীর্স্বাতো বিশ্বাবাসো নমসেলামহে ত্বা ।
অন্যামিচ্ছ প্রফর্ব্যং সং জায়াং পত্যা সৃজ ।।১০/৮৫/২২।।
—অর্থাত্ তুমি যাও ও অবিবাহিত নারীকে তোমার অর্ধাঙ্গিণী কর এবং তাকে সমান অধিকার প্রদান কর।
আমাদের সনাতন বিবাহে কত গুলো বিধিবিধান শাস্ত্রীয়, কিছু অনুষ্ঠান আচার রয়েছে। শুভলগ্নে নারায়ণ, অগ্নি, শিব, দূর্গা, গুরু ইত্যাদি দেবতাকে আহবান করে এবং পুরোহিত আত্মীয় স্বজনদের সাক্ষী করে মঙ্গল মন্ত্রের উচ্চারণ, উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে বিবাহনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বিয়ের মন্ত্রের শেষ হয় যজ্ঞের মাধ্যমে।
বিবাহের মূল মন্ত্র যা স্বামী স্ত্রীরা প্রতিজ্ঞা করে থাকে :
“যদেতত্ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম ।
যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব ।।”
—তোমার এই হৃদয় আমার হোক আমার এইহৃদয় তোমার হোক।
বিবাহের মাধ্যমে একজন নারীপুরুষ চিরজীবন একসাথে সুখে দুঃখে থাকবার প্রতিজ্ঞা করে। বিবাহ আমাদের সনাতন ধর্মের একটি অন্যতম অংশ। প্রত্যেকেরই জীবনকে পরিপূর্ণ করতে বিবাহ করা আবশ্যক।

শুক্ল যজুর্বেদ ৫।১৯

দিবো বা বিষ্ণ উত বা পৃথিব্যা মহো বা বিষ্ণ উরোরন্তরিক্ষাত।
উভো হি হস্তা বসুনা পৃনস্বা প্রযচ্ছ দক্ষিণাদোত সব্যাদ্বিষ্ণবে ত্ব।।
সরলার্থঃ
হে (বিষ্ণু)-=পরমেশ্বর (দিব) =দ্যুলোক হইতে (উত বা মহো)= অনেক মহৎ। (পৃথিব্যা)=ভূলোক হইতে হে (বিষ্ণু)=পরমেশ্বর (উরো)=অনন্ত প্রসারী (অন্তঃরিক্ষাত্)=অন্তরিক্ষ হইতে আপনি (উভা হস্তা)=উভয় হস্তে (বসুনা)=পরম ধন দ্বারা (আ পৃণস্ব)=পূর্ণ করুন আর (দক্ষিণাত)=ডান (উত) এবং (সব্যদ)=বাম উভয় হস্ত দ্বারা সেই পরমধন (আ প্রযচ্ছ)=প্রদান করেন (ত্বা)=আপনি আমাদিগকে (বিষ্ণবে) প্রাপ্তি হেতু আপনাকে।
ভাবানুবাদঃ
হে পরমেশ্বর ভগবান আপনি দ্যুলোক হইতে কি ভূলোক হইতে কিংবা অনন্ত প্রসারী অন্তরিক্ষলোক হইতে পরমধন লইয়া আপনার উভয় হস্ত পূর্ণ করুন,,,এবং দক্ষিণ ও বাম হস্ত ( উভ হস্ত) দিয়াই অবাধে অবিচারে আমাদিগকে সেই পরমধন প্রদান করুন।।।

Friday, March 17, 2017

শ্রীমদ্ভগবদগীতা অঃ১২ শঃ১৬

পবিত্র বেদবাক্য

হরিনাম মহামন্ত্র কিভাবে প্রচার হলো?

হরিনাম মহামন্ত্র প্রচার করিবার জন্য শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু আদেশ করিয়া ছিলেন নিত্যানন্দ আর হরিদাস ঠাকুরকে এভাবে…..
শোন শোন নিত্যানন্দ,শোন হরিদাস।
সর্বত্র আমার আজ্ঞা করহ প্রকাশ।
প্রতি ঘরে ঘরে গিয়া কর এই ভিক্ষা।
বল কৃষ্ণ, ভজ কৃষ্ণ, কর কৃষ্ণ শিক্ষা।
বল কৃষ্ণ, ভজ কৃষ্ণ, কহ কৃষ্ণ নাম।
কৃষ্ণ মাতা কৃষ্ণ পিতা কৃষ্ণ ধন প্রাণ।
তোমা সব লাগিয়া কৃষ্ণের অবতার।
হেন কৃষ্ণ ভজ সবে ছাড় অনাচার ।।
(চৈতন্য-ভাগবত)।।

ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ

সর্বসর্বেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপাসনা করলেই সবার উপাসনা হয়ে যাবে
হরিভজন করলে শরীর মন আত্মা-- তিনটি ভালো থাকবে, আর হরিভজন বিমুখ হলে তিনটিই প্রতিকূল হয়ে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি কপটতা যুক্ত হয়ে বাইরে কৃষ্ণভজনের অভিনয় দেখায়, অন্তরে কৃষ্ণের কাছে ধর্ম-অর্থ-কাম-মোক্ষ-- এই কৈতবগুলি বাঞ্ছা করে, কৃষ্ণ তার অভিলষিত এই সমস্ত কৈতব দিয়ে তাকে বঞ্চনা করেন, তাঁকে কখনও প্রেমভক্তি প্রদান করেন না। কিন্তু যে ব্যক্তি নিষ্কপটভাবে কৃষ্ণের ভজন করতে করতে অজ্ঞানতাবশত কৃষ্ণের নিকট বিষয়সুখ প্রার্থনা করে থাকে, কৃষ্ণ কৃপাপরশ হয়ে সেই নিষ্কপট অজ্ঞ ব্যক্তিকে যথার্থ সাধুদের কাছে হরিকথা শ্রবণের সুযোগ দান করে অজ্ঞের তুচ্ছ বিষয়সুখ বাসনা নিরস্ত করে দেন। যেমন ধ্র“বকে কৃষ্ণ নারদের মাধ্যমে কৃপা করেছিলেন।
জড়বুদ্ধি সহজিয়াদের কপটভাবে আছে বলে তারা প্রকৃত নিষ্কপট ও অকৃত্রিম সাধুর দর্শন ও তাঁদের বাণী শ্রবণ করতে পারে না। অর্থাৎ, কৃষ্ণ কৃপা করে তাদের বিষয় বাসনা ভুলিয়ে দেন না। তারা কৃষ্ণের মায়ার চাতরে পড়ে থাকে। মোট কথা এই যে, কৃষ্ণভজনের অভিনয়কারী কপট ব্যক্তিকে কৃষ্ণ কখনও সুদুর্লভ প্রেমভক্তি প্রদান করেন না। কেবল নিষ্কপট ভজনকারী অজ্ঞ ব্যক্তিকে দয়াপরবশ হয়ে সদ্গুরুর মাধ্যমে শুদ্ধভক্তি বা প্রেমভক্তি প্রদান করেন।
যে সব মানুষ হরিভজন করে না, যারা হরি সম্বন্ধহীন, তাদের জীবিত থেকে দৌরাত্ম্য করা অপেক্ষা জীবন ধারণ না করাই ভালো। মানুষ ও দেবতা প্রভৃতি যদি শ্রীহরির উপাসনা না করেন, তবে তাঁরা কেবলমাত্র জগতে জঞ্জাল আনয়ন করেন। দেবতাদের উপাস্য যে কৃষ্ণ, মানুষেরও উপাস্য সেই কৃষ্ণ। সুতরাং অন্যান্য দেবতার উপাসনা না করে সর্বসর্বেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপাসনা করলেই সবার উপাসনা হয়ে যাবে।
----শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর

Thursday, March 16, 2017

গীতা অঃ৫ শঃ২৩

পবিত্র বেদবাক্য

বৈষ্ণব লক্ষণ

বানি চিরন্তন

Wednesday, March 15, 2017

পবিত্র বেদবাক্য

ব্রহ্মসংহিতা ৫/১

ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ ।
অনাদিরাদির্গোবিন্দঃ সর্ব্বকারণকারণম্।।

বৈষ্ণব লক্ষণ

অনিয়ন্ত্রিত মন আপনার কি ক্ষতি করতে পারে?

অনিয়ন্ত্রিত মন আপনার কি কি ক্ষতি করেঃ একজন ব্যক্তি যার মন এবং ইন্দ্রিয়সমূহ অনিয়ন্ত্রিত অচিরেই তাকে করুণ অবস্থায় পড়তে হয়। একদিকে জিহ্বা সুস্বাদু খাবারের জন্য তাকেঁ টানতে থাকে, তারপর তৃষ্ণা প্রয়োজনীয় পানীয়ের ব্যবস্থা করতে বলে, একই সাথে উপস্থ (ইন্দ্রিয়) যৌন-তৃপ্তির জন্য লালায়িত হয় এবং সে কোমল অনুভূতি সুখস্পর্শ পেতে চায়। উদর অতৃপ্ত থাকে যতক্ষণ না তার পুর্তি হয়, কান দাবী করে মধুর শব্দ শোনার, নাসিকাও সুগন্ধের জন্য উৎকন্ঠিত আর চোখ জগতের সৌন্দর্যকে ভোগ করতে চায়। এইভাবে ইন্দ্রিয়সমূহ সন্তোষ বা তৃপ্তির আশায় জীবকে বিভিন্ন দিকে টানতে থাকে।
অনিয়ন্ত্রিত মনের জন্যই এই সমস্ত ইন্দ্রিয়গুলি পথভ্রষ্ট হয়ে সব দিক থেকে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে।
মূর্খ মানুষ জানে না কিভাবে এর সমাধান করতে হয়। যখন জীবনে কোনো বিপদ আসে, সে তখন হতাশায় ধুমপান, মদ্যপান অথবা আত্মহত্যা করে বসে ঐ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। কিন্তু পরিণতি স্বরূপ পূর্বাপেক্ষা আরো যন্ত্রণাকে সে আহ্বান করে। আধুনিককালে আমরা ব্যবহারিক ভাবে দেখতে পাই মানুষের মানসিক ভাবে চাপগ্রস্থ অবস্থা, বিশ্বস্ততার অভাব, দৃঢ়তার অভাব ইত্যাদি সবই অনিয়ন্ত্রিত মনের জন্যই হয়ে থাকে। ‘সমস্ত বিশ্বকে প্রাপ্ত হয়েও যদি কেই নিজের আত্মাকেই হারিয়ে ফেলে তাহলে কি লাভ?- নিশ্চিতরূপে এটা অনুভূতির প্রশ্ন’। অনেক অর্থ, প্রতিপত্তি, দৈহিক সৌন্দর্য বা শক্তি থাকা সত্ত্বেও সুখ নেই। সুখলাভের প্রকৃত রহস্য হচ্ছে- ‘নিয়ন্ত্রিত মন’, যা ক্রমে ক্রমে ভগবদ্ভাবনাময় জীবন ধারার মাধ্যমে অর্জিত হয়।
(সংকলনঃ মন নিয়ন্ত্রণের কৌশল)
“জয় রাধেশ্যাম”

Tuesday, March 14, 2017

নারদ ভক্তিসূত্র

“হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য

“হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্যঃ ভাবের মাঝে কৃষ্ণ কথা হবে যে আলাপন। কৃষ্ণ বিনে কি আছে এ ভবে-সবই কৃষ্ণময় জেনে রেখো ভবে। উচ্চ স্তরে করেছে যাকে প্রতিষ্ঠা তিনি আর কেহ নন কৃষ্ণ বিনে। তাই মনুষ্য লোকের উচিত “হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে পারমার্থিক জীবনে উন্নয়ণ ঘটানো। নিম্নে “হরে কৃষ্ণ” মহামন্ত্রের তাৎপর্য কি তা বর্ণিত হলঃ
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
ষোল সখা ষোল সখী বত্রিশ অক্ষর ।
হরিনাম তত্ত্ব ধর্ম অতি গূঢ়তর।।
মাধুর্য মহিমা তত্ত্ব যে জন জানয়।
রাধাকৃষ্ণ নিত্যধামে গমন করয়।।
‘হরে কৃষ্ণ’ ‘হরে রাম’ এই মন্ত্র ষড়ক্ষর।
এই তিন নাম তন্ত্রে সূত্র কৈল হর।।
তিন নামে ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর।
বৃত্তি করি কৈলা গৌর জগত গোচর।।
নাম রূপে প্রেম দিলা আপনি যাচিয়া।
নামে মত্ত ভক্ত চিত্ত বেড়ায় নাচিয়া।।
করুণার কল্পতরু এই হরিনাম।
কামনায় হবে মুক্তি প্রেম ব্রজধাম।।
সংক্ষেপে কহিনু এই হরিনাম তত্ত্ব।
জীবের দুর্লভ এই প্রেমের মহত্ত্ব।।
অষ্ট ‘হরে’ নামের তাৎপর্য
প্রথমত, ‘হরে’- চন্দ্রাবলী
দ্বিতীয়ত, ‘হরে’- প্রেমময়ী শ্রীরাধা
তৃতীয়ত, ‘হরে’- সুভাষিণী
চতুর্থত, ‘হরে’- সিংহাসন
পঞ্চমত, ‘হরে’- সুদর্শন
ষষ্ঠত, ‘হরে’- শেষ দেব
সপ্তমত, ‘হরে’- সাবিত্রী
অষ্টমত, ‘হরে’- রেবতী
চারি ‘কৃষ্ণ’ নামের তাৎপর্য
প্রথমত, ‘কৃষ্ণ’- পরম ব্রহ্ম শ্রীগোবিন্দ
দ্বিতীয়ত, ‘কৃষ্ণ’- বাসুদেব
তৃতীয়ত, ‘কৃষ্ণ’- জগন্নাথ
চতুর্থত, ‘কৃষ্ণ’- বলভদ্র
চারি ‘রাম’ নামের তাৎপর্য
প্রথমত, ‘রাম’- শ্রীরাধিকা
দ্বিতীয়ত, ‘রাম’- লক্ষ্মী
তৃতীয়ত, ‘রাম’- সরস্বতী
চতুর্থত, ‘রাম’- সুভদ্রা
হরিনাম মহামন্ত্রের বত্রিশ অক্ষরের তাৎপর্য
‘হ’- অক্ষরে শ্রীললিতা সখী মস্তকেতে।
‘রে’- অক্ষরে শ্রীবিশাখা দক্ষিণ বাহুতে।।
‘কৃ’-অক্ষরে চম্পকলতা সখীকন্ঠে রয়।
‘ষ্ণ’- অক্ষরেচিত্রা সখী বাহুতে শোভয়।।
‘হ’- অক্ষরে রঙ্গদেবী সখী থাকে হাতে।
‘রে’- অক্ষরে সুদেবী যে থাকয়ে পৃষ্ঠেতে।।
‘কৃ’- অক্ষরে তুঙ্গবিদ্যা বদন উপরে।
‘ষ্ণ’- অক্ষরে ইন্দুরেখা শ্রবণ বিবরে।।
‘কৃ’- অক্ষরে শশীরেখা রহে ভুরুযুগে।
‘ষ্ণ’- অক্ষরে বিমলা সখী ভ্রুর ডান ভাগে।।
‘কৃ’- অক্ষরে পালিকা সখী ভ্রুর বামে রয়।
‘ষ্ণ’- অক্ষরে লবঙ্গমঞ্জরী থাকয়ে হৃদয়।।
‘হ’- অক্ষরে শ্যামলা সখী নাভীতে থাকয়।
‘রে’- অক্ষরে মধুমতী নাভি মধ্যে রয়।।
‘হ’- অক্ষরে ধন্যা সখী করাঙ্গুলি রয়।
‘রে’- অক্ষরে মঙ্গলা কর অধোমুখী হয়।।
‘হ’- অক্ষরে শ্রীদাম সখা জঙ্ঘায় থাকয়।
‘রে’- অক্ষরে সুদাম সখা জানু নিবসয়।।
‘রা’- অক্ষরে বসুদাম সাখা থাকে ভুরু অঙ্গে।
‘ম’- অক্ষরে অর্জুন সখা সদা থাকে লিঙ্গে।।
‘হ’- অক্ষরে সুবল সখা দক্ষিণ পদেতে।
‘রে’- অক্ষরে কিঙ্কিণী সখা আছয়ে বামেতে।।
‘রা’- অক্ষরে চাতক সখা পূর্বে নিবসয়।
‘ম’- অক্ষরে মধুমঙ্গল অগ্নিকোণে রয়।।
‘রা’- অক্ষরে শুক সখা থাকয়ে দক্ষিণে।।
‘ম’-অক্ষরে বিশাল সখা রয় নৈঋর্ত কোণে।
‘রা’- অক্ষরে মহাবল সখা পশ্চিমে থাকয়।।
‘ম’- অক্ষরে বৃষভ সখা বায়ুকোণে রয়।
‘হ’- অক্ষরে দেবপ্রস্থ সখা উত্তরেতে।।
‘রে’- অক্ষরে উদ্ভব সখা আছে ঈশানেতে।।
‘হ’- অক্ষরে মহাবাহু ঊর্ধ্বে রয় সুখে।
‘রে’- অক্ষরে ঈশান সখা আছে অধোমুখে।।
এই ত কহিনু ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর তাৎপর্য ।
যেই জন জানে ইহা ভব ত্রাণ হয়। —

Monday, March 13, 2017

পেঁচার দৃষ্টি ও অন্তর্নিহিত তথ্য

একটি বিশাল গাছ ছিল । গাছের মধ্যে কতকগুলো কোটর বা গর্ত ছিলো । কোনও কোটরে টিয়াপাখি বাস করতো । অন্য কোটরে পেঁচা বাস করতো । রাতিবেলায় পেঁচা বের হতো খাবারের খোঁজে । টিয়াপাখিরা রাত্রে কোটর মধ্যে ঘুমিয়ে থাকতো । দিনের বেলায় খাবারের খোঁজে বের হতো ।
একদিন রাত শেষে যেই পূর্ব আকাশ ফর্সা হলো, অমনি টিয়াপাখিরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলো, আজ আমরা নদীর ওপারে যাবো । সেখানে বিশাল পেয়ারা বাগান আছে । বাগানে অনেক সুমিষ্ট পেয়ারা খেতে পারবো । চলো যাই সেখানে । টিয়াপাখিদের কলরব পেঁচারাও শুনতে পেলো । পেঁচাদের মধ্যে একে অন্যকে বলতে লাগলো, আচ্ছা, নদীর ওপারে কি আছে? অন্য পেঁচা উত্তর দিল, জানি না । এক পেঁচা জানতে চাইলো, পেয়ারা বাগানে অনেক পেয়ারা আছে । সেই পেয়ারা আবার কি জিনিস? অন্য পেঁচা উত্তর দিলো, হয়তো কোনও পোকামাকড় হবে । এক পেঁচা জানতে চাইলো, সে পেয়ারা নাকি খুব সুমিষ্ট । অন্য পেঁচা বললো, নিশ্চয়ই ইঁদুরগুলোর মতো সুমিষ্ট নয় । তা হলে এই টিয়ারা সেই সুমিষ্ট বস্তু লাভের জন্য এত উৎসাহী কেন? সহজ কথা হলো, ওরা পাগল । এখন না ঘুমিয়ে ওরা কোথাও পাগলামি করতে যাচ্ছে । সত্যি? ওই টিয়াগুলো এত খারাপ যে, ওরা ইঁদুর, ছুঁচো, আরশোলা, গিরগিটি, ফড়িং এত চমৎকার খাবার থাকতেও নদীর ওপারে যাচ্ছে? আরে, পেয়ারা না ছাই । পেয়ারা বলে কোনও বস্তুই নাই । ওরা সব রূপকথার গল্প বলে । তারপর সূর্যোদয় হলে পেঁচারা ঘুমিয়ে পড়লো । কিন্তু কোনও টিয়াপাখি চেঁচিয়ে বলতে লাগলো, সূর্য উঠেছে । যাই চলো পেয়ারা বাগানে । সেই চিৎকার শুনে পেঁচারা একে অপরকে জিজ্ঞেস করলো, সূর্য আবার কি? অন্য পেঁচা উত্তর দিলো, ওসব রূপকথা । সূর্য বলে কোনও কিছু নেই । সূর্যকে কেউ দেখেনি । ওরা সব কল্পনা করে কিছু বলছে । ওসব কথায় কান না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়া ভালো । তারপর পেঁচারা ঘুমিয়ে পড়লো ।
হিতোপদেশ
পেঁচারা ইঁদুর খায় । পেয়ারা খায় না । তাই ইঁদুরের প্রতি নজর, পেয়ারার প্রতি উদাসীন । টিয়া পেয়ারা খায়, তাই সে পেয়ারার বিষয়ে আগ্রহী । সূর্য থাকলেও সূর্যের কিরণ চোখে পড়া মাত্রই পেঁচার চোখ বন্ধ হয়ে যায় । সে আঁধারের পাখি । রাত্রে বিচরণ করে । দিনের আলোতে কিছু দেখতে পায় না । তাই বলা হয়, উলুকে না দেখে কভু সূর্যের কিরণ । তেমনই মনুষ্য সমাজের যারা জড়জাগতিক চেতনায় বদ্ধ, তাদের কাছে ভগবান, বৈকুন্ঠধাম সবকিছু রূপকথা বা কাল্পনিক বলে মনে হয় । যদিও মহাত্মারা সবকিছু বর্ণনা করেছেন, তবুও অভক্ত লোক সেসব বিষয়ে কোনও আগ্রহাম্বিত থাকে না । এমনকি পারমার্থিক বিষয়টির অস্তিত্ব পর্যন্ত মানতে চায় না ।

ঋগবেদঃ ৮.৪৮.১৪

বৈষ্ণব লক্ষণ

গীতা অঃ১১/শঃ১৮

Sunday, March 12, 2017

বৈদিক সনাতন ধর্মাবলম্বী বৈষ্ণব সম্প্রদায় দোলযাত্রা কিভাবে উৎযাপন করেন?

বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের দোলযাত্রা উৎযাপনের ৫ টি কারনঃ
১) ভগবানের ভক্ত বৎসল্যতার প্রতীক হিসেবে
২) ভগবানের অচিরেই ভক্ত রক্ষতার প্রতীক হিসেবে
৩) ভগবানের ঐশ্বর্যের প্রতীক হিসেবে
৪) ভগবানের ধর্ম স্হাপনের প্রতীক হিসেবে
৫) ভগবানের স্বয়ং অবতরণের দিবস হিসেবে।
ভগবান ভক্তপ্রিয়-
দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির বা গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপী,গোপগণের সহিত রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। ভগবানও, তার ভক্তের সাথে আনন্দ বিলিয়ে দেন,অর্থ্যাৎ ভগবানের প্রেমভাব কে নির্দেশ হেতু উদযাপন। তাই দোলযাত্রার দিন সকালে রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে অর্চনা করা হয়।।
ভগবান ভক্ত রক্ষক-
স্কন্দপুরাণ গ্রন্থের ফাল্গুনমাহাত্ম্য গ্রন্থাংশে হোলিকা ও প্রহ্লাদের উপাখ্যান বর্ণিত হয়েছে। হোলিকা ছিলেন মহর্ষি কশ্যপ ও তাঁর পত্নী দিতির পুত্র হিরণ্যকশিপুর ভগিনী। ব্রহ্মার বরে হিরণ্যকশিপু দেব ও মানব বিজয়ী হয়ে দেবতাদের অবজ্ঞা করতে শুরু করেন। কিন্তু তাঁর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত।প্রহ্লাদ বিষ্ণুকে নিজ পিতার উপরে স্থান দেওয়ায় ক্রুদ্ধ হয়ে হিরণ্যকশিপু নিজের পুত্রকে পুড়িয়ে মারার আদেশ দেন। দাদার আজ্ঞায় হোলিকা প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে অগ্নিতে প্রবেশ করেন। কিন্তু বিষ্ণুর কৃপায় প্রহ্লাদ অক্ষত থাকেন; বরং আগুনে পুড়ে হোলিকারই মৃত্যু হয়।
ভগবান ধর্ম রক্ষক-
বসন্তের পূর্ণিমার এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কেশি নামক অসুরকে বধ করেন। কোথাও কোথাও অরিষ্টাসুর নামক অসুর বধের কথাও আছে।এভাবে অসুরদের বধ করেন সাধুদের মাঝে শান্তি ও ধর্ম রক্ষা করেন।
ভগবান ঐশ্বর্যধারী
বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তো সর্বদাই দোদুল্যমান।এই জগৎ সংসারকে দোলাচ্ছেন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। আমরাও প্রত্যেকে দুলছি |
ভগবানের স্বরুপে অবতরন
এই তিথিতে স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মহাপ্রভু রুপে অবতীর্ণ হন।তাই এ দিবসকে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।
লিখেছেন- সজীব তালুকদার মন।