Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Monday, August 28, 2017

শ্রীশ্রী রাধাষ্টমীর মূলকথা

"তপ্তকাঞ্চন-গোরাঙ্গীরাধে
বৃন্দাবনেশ্বরী।
বৃষ ভানু-সুতে দেবী
প্রণামামি হরি-প্রিয়ে।।"

__________অনুবাদঃ শ্রীমতি রাধারাণী, যাঁর অঙ্গকান্তি তপ্ত কাঞ্চনের মতো এবং যিনি বৃন্দাবনের ঈশ্বরী, যিনি মহারাজ বৃষভানুর
দুহিতা এবং ভগবান
শ্রীকৃষ্ণের প্রেয়সী তার চরণকমলে আমি আমার
সশ্রদ্ধ প্রণতি জানাই।

রাধাষ্টমীর কথাঃ-
"অনয়ারাধিতো নূনং ভগবান্ হরিরীশ্বর। যন্নোবিহায় গোবিন্দঃ প্রীতযামনয়দ্রহঃ।।"
অনুবাদ: এই বিশেষ গোপী নিশ্চয়ই
যথার্থভাবে সর্বসক্তিমান ভগবান গোবিন্দের আরাধনা করেছিলেন, তাই তাঁর প্রতি অত্যন্ত প্রীত হয়ে তিনি অবশিষ্ট
আমাদের পরিত্যাগ করে তাঁকে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়েছেন।

________তাৎপর্য: শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর বর্ণনা করেছেন যে, আরাধিতঃ শব্দটি শ্রীমতী রাধারাণীর সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি ভাষ্য প্রদান করেছেন। “মুনিবর শুকদেব গোস্বামী রাধারাণীর নাম গোপন রাখতে সকল প্রয়াস করেছেন। কিন্তু এখন আপনা থেকেই তাঁর মুখচন্দ্র হতে তা দীপ্তিমান হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে শ্রীমতী রাধারাণীর কৃপাতেই তিনি তাঁর নাম এইভাবে প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর পরম সৌভাগ্য ঘোষনা করার জন্য আরাধিতঃ

শব্দটি দুন্দুভির মতো নিনাদিত হচ্ছে।” 
শুকদেব গোস্বামী এত
ভাবাপন্ন হয়ে রাধা নাম উচ্চারন করে ভাবছেন আমি হয়তো পাঠ শেষ
করতে পারবো না। আমারতো পরীক্ষিত মহারাজের সাথে সাতদিনের প্রতিজ্ঞা আছে। কিন্তু যদি রাধা নাম বলতে গিয়ে এমনভাবে ভাবাপন্ন হয়ে
গিয়ে যদি পাঠ বন্ধ হয়ে যায়, অর্থাৎ পরীক্ষিৎ মহারাজ যদি ভাবাবিষ্ট হয়ে পড়েন.! সেজন্য রাধা নাম বলে এত আনন্দ পাবে পরমানন্দ বিপুল হয়ে যাবে হয়তো পাঠ বন্ধ হয়ে যাবে। সেজন্য রাধা নাম বলতে চাননি। কিন্তু তা বলে ফেলেছেন, "আরাধিতঃ
আরাধিতঃ"। রাধা নাম সেখানে গোপন করা আছে। আরাধিতঃ কার নাম আছে? কার নাম? রাধা।
রাধা রাধা রাধা রাধা
রাধা রাধা রাধা রাধা
!! হরিবোল!! 
যদিও গোপীরা যেন শ্রীমতী রাধারাণীর প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে কথা বলেছেন, কিন্তু তিনিই
শ্রীকৃষ্ণের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন তা লক্ষ্য করে প্রকৃতপক্ষে তাঁরা উল্লসিত হয়েছিলেন। গোপীগন চান কৃষ্ণ যেন খুশি হোক,
কৃষ্ণ সন্তুষ্ট হোক। এভাবে একজন গোপী এমনভাবে কৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছে, তাহলে কৃষ্ণতো
খুশি হলো তাই গোপীগণ উল্লসিত হলেন। শ্রীল রুপ গোস্বামী তাঁর
শ্রীউজ্জ্বলনীলমণি গ্রন্থে
শ্রীমতী রাধারাণীর পদচিহ্নের যে বিশদ বিবরন প্রদান করেছেন,শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর তা উদ্ধৃত করেছেন।

“শ্রীমতী রাধারাণীর বাম চরণের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের মূলে একটি যব চিহ্ন রয়েছে, সেই চিহ্নের নিচে এক
চক্র, সেই চক্রের নিচে এক ছত্র, এবং সেই ছত্রের নিচে একটি বলয় রয়েছে। তাঁর চরণের মধ্যভাগ থেকে একটি উর্ধরেখা তাঁর
বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ ও তর্জনীর সন্ধিস্থল পর্যন্ত গিয়েছে। মধ্যমা অঙ্গুলির মূলে একটি পদ্ম, তার নিচে
পতাকাসহ ধ্বজ চিহ্ন এবং ধ্বজের নিচে পুষ্পবল্লী। তাঁর
কনিষ্ঠাঙ্গুলির মূলে অঙ্কুশ চিহ্ন এবং গোড়ালীতে অর্ধচন্দ্রচিহ্ন। এইভাবে তাঁর বাম চরণে এগারটি
চিহ্ন রয়েছে। তাঁর দক্ষিণ চরণের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠমূলে একটি শঙ্খ এবং তার নিচে একটি গদা। কনিষ্ঠা
অঙ্গুলির মূলে বেদী এবং তার নীচে একটি কুণ্ডল এবং সেই কুণ্ডলের নিচে একটি গদা এছাড়া তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা ও
কনিষ্ঠা অঙ্গুলির নিচে পর্বত চিহ্ন এবং পর্বতের নিচে রথ চিহ্ন রয়েছে, আর গোড়ালীতে মৎস্য
চিহ্ন রয়েছে। এইভাবে শ্রীমতী রাধারাণীর চরণ-কমলের মোট উনিশটি চিহ্ন রয়েছে।”
শ্রীমতি রাধার একটি নাম হচ্ছে মাধবমোহিনী। কৃষ্ণের একটি নাম হচ্ছে মোহন। মাধব সকলকে মোহিত করেন। কিন্তু রাধারানী মাধবের
মোহিনী। কৃষ্ণ ভাবছেন আমি আমার লীলা বিস্তার করবো। তাঁর বাম পাশ থেকে রাধারানী
বিস্তার হয়ে গেলেন।
রাধারানী তাঁর বিভিন্ন সেবা আয়োজন করে ভগবানকে সন্তুষ্ট করেন। রাধারানী সেবা বিস্তার করার জন্য তার বাম পাশ থেকে অনেক গোপী বিস্তার করেন। গোপীগন রাধারাণীর মতো দেখতে। এভাবে কৃষ্ণ যখন মনস্থির করলেন যে আমি দ্বাপর যুগে ব্রজধামে অবতীর্ণ হয়ে
লীলা বিস্তার করবো। তিনি রাধারানীকে বললেন, “তুমিও
আস।” তখন রাধারানী বললেন, “আমি কী করে ধরাধামে আসবো। তোমায় ছাড়া অন্য পুরুষ দেখতে পারবো না।” 
কৃষ্ণ বললেন, “ঠিক
আছে, আমি ব্যবস্থা করছি।"
বৃষভানু মহারাজের পত্নী কীর্তিদা গর্ভবতী হলেন। অষ্টমী তিথির মধ্যাহ্নে রাধারানীর জন্ম হলো।
এই তিথীতে বর্ষানার ভক্তবৃন্দ গোপ- গোপীগণ সেখানে তারা আনন্দে নাচছে যে, বৃষভানু
মহারাজের কন্যা হলেন। উদ্ধব দাস এ সম্পর্কে একটি পদ লিখেছেন,
"বৃষভানুপুরে আজ আনন্দ বাধাই।
রত্নভানু সুভানু নাচয়ে তিন ভাই।। 
দধি ঘৃত নবনীত গোরস হলদি।
আনন্দে অঙ্গনে ঢালে নাহিক অবধি।। 
গোপ গোপী নাচে গায় গায় যায় গড়াগড়ি।
মুখরা নাচয়ে বুড়ী হাতে লৈয়া নঢ়ি।। 
বৃষভানু রাজা নাচে অন্তর
উল্লাসে।
আনন্দ বাধাই গীত গায়
চারিপাশে।। 
লক্ষ লক্ষ গাভী তখন অলংকৃত করি।
ব্রাহ্মণে করয়ে দান আপনা পাসরি।। 
গায়ক নর্তন ভাট করে উতরোল।
দেহ দেহ লেহ শুনি এই বোল।। 
কন্যার বদন দেখি কীর্তিদা জননী।
আনন্দে অবশ দেহ আপনা না জানি।
কত কত পূর্ণচন্দ্র জিনিয়া উদয়।
এ দাস উদ্ধব হেরি আনন্দ হৃদয়।।" 
এভাবে কতো আনন্দ বর্ষানায়। কিন্তু রাধারানীর পিতা–মাতার একটা হচ্ছে দুঃখ হচ্ছে যে,
রাধারাণী চোখ খুলছে না। ভাবছে আমাদের কন্যা অন্ধ। চোখ খোলে না। নারদ মুনি নন্দ
মহারাজের কাছে গেলেন। তাঁর সন্তান দেখার জন্য। তিনি
শ্রীকৃষ্ণকে হাতে নিয়ে
আশির্বাদ করেছেন। তোমার খুব ভাগ্য। এ সন্তান নারায়ণের মতো
হবে। তুমি এ সন্তানকে যত্ন করো পূজা করো, সন্তানকে যত্ন করো।
তোমার আর কোন পূজা করা লাগবে না। এভাবে বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে নন্দপুত্রকে আর্শিবাদ
দিলেন। নারদ মুনি বুঝলেন, কৃষ্ণ আবির্ভাবের পক্ষকাল পর কে আসে? কে আসে? রাধারাণী।
নারদমুনি ব্রজের আশপাশে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করছেন, তোমার কোন কন্যা সন্তান হয়েছে? সব সন্তান নিয়ে এস আমি আশির্বাদ করবো। সন্তান নিয়ে আসলে আশির্বাদ করলো। পরপর বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে খোঁজা হলো। কিন্তু যাকে খুঁজছেন তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন কীর্তিদা বৃষভানু মহারাজের বাড়িতে গিয়েছেন। সেখানে শ্রীদামসহ বিভিন্ন সন্তান নিয়ে এলেন। কিন্তু তিনি জীজ্ঞাসা করলেন, “আরো একটা মেয়ে সন্তান হয় নি। আমি একটু দেখি
দেখাও।” 
তখন দেখছে সুন্দর
রাধারানী নিয়ে এসছে। পনের দিন বয়স। তাঁর মুখমণ্ডল কোটিচন্দ্রের ন্যায় জ্যোতির্ময়। তাঁকে নারদ মুনির হাতে
দিয়েছে। নারদ মুনি রাধারানী, হ্লাদিনী শক্তি, আনন্দের শক্তি হাতে পেয়ে এমন আনন্দে বিভোর হয়েছেন যে, কোনো কথা বলতে
পারছেন না, নড়তে পারছেন না। আর শুধু গায়ে কাঁপছে আর চোখের
জল গঙ্গা হয়ে পড়ে যাচ্ছে। বৃষভানু মহারাজ ভাবছেন কী করবে। নারদমুনি একটু স্থির হয়েছেন। তিনি বললেন, “তুমি দুঃখ করো না।” আর ঠিক যেমন কৃষ্ণের পিতা মাতার মতো বলেছেন, “তুমি এ মেয়েকে যত্ন করো, পূজা করো। তোমার আর
কোনো পূজা করা লাগবে না।”
এভাবে নারদ মুনির ইচ্ছে ছিল রাধারানীর কিশোরী রুপ দর্শন
করবেন। তাই তিনি ব্রজবনে গিয়ে ধ্যান করে প্রার্থনা শুরু করলেন রাধারাণী দেখা দাও, দেখা দাও। তখন রাধারাণী গোপীগণের সাথে
কিশোরীরুপে দেখা দিয়েছেন। তখন গোপীগণ নারদমুনিকে বলেছেন, তুমি যে রাধারাণীর দর্শন পাচ্ছ তার অর্থ রাধারাণীর অসীম কৃপা হয়েছে। রাধারাণীর দর্শন পাওয়ার জন্য কতো যোগী কয়েক কল্পে তপস্যা করেছেন।
একটা কল্পে হাজার যুগ, ষোল মন্বন্তর। নারদ মুনি বললেন, “ভবিষ্যতে তোমার মেয়ের দৃষ্টি
আসবে। চোখ খুলবে।” 
একদিন বড় একটা উৎসব হলো। শিশু কৃষ্ণ এসে হামাগুড়ি দিয়ে শিশু
রাধারানীর কাছে গিয়েছে। আর রাধারাণী চোখ খুলে শিশু রূপে কৃষ্ণকে দেখেছেন। তিনি
অন্তরঙ্গা শক্তি। তটস্থা শক্তি আর বহিরঙ্গা শক্তি। অন্তরঙ্গা শক্তি হচ্ছে রাধারানী। আর বহিরঙ্গা
শক্তি পার্বতী বা দুর্গা। আমরা জীবশক্তি আমরা মাঝখানে পড়ি। যখন আমরা কৃষ্ণের সেবা করবো, তখন আমরা অন্তরঙ্গা শক্তি রাধারাণীর আশ্রয়ে থাকবো। যদি আমরা মায়াকে না বলি অর্থ মায়া যদি আমাদের বলেন ভোগ করো আর আমরা যদি তাকে বলি 'না’, আমরা কৃষ্ণের সেবা করবো, তাহলে আমরা অন্তরঙ্গা শক্তির অধীনে মধ্যে পড়ি। মায়া আমাদের যখন ভোগ বিলাস করার আয়োজন করে আর আমরা যদি বলি ‘হ্যাঁ’ ‘হ্যাঁ’ আমরা ভোগ করতে চাই, তখন আমরা মহামায়ার
অধীনে থাকি এবং আমাদের কর্মফল অনুযায়ী আমাদের মায়ার অধীনের মধ্যে সুখ দুখ পেতে হবে।

ভগবদগীতায় আছে,
"মনুষ্যানাং সহস্রেষু কশ্চিৎ যততিসিদ্ধয়ে।"
অর্থাৎ কৃষ্ণের সমন্ধে খুব অল্প সংখ্যক লোক জানতে পারে।
কিন্তু শ্রীচৈতন্যদেবের কৃপাতে আমরা রাধাকৃষ্ণ সমন্ধে অনেক কিছু
জানতে পারি। কিন্তু আমাদের খুব সাবধান থাকতে হবে। যদি আমরা মনে করি রাধাকৃষ্ণের লীলা জড়জগতের স্ত্রী পুরুষের মতো হয় তবে মহা অপরাধ। আমাদের জানতে হবে রাধারাণী হচ্ছেন কৃষ্ণ প্রেমস্বরূপিনী। তিনি কৃষ্ণের প্রেমসেবা করেন। সেটা সম্পূর্ণভাবে পারমার্থিক তত্ত্ব।

________এইভাবে যদি আমরা রাধাকৃষ্ণকে সেবা করি, তবে আমরা সেই পরমতত্ত্ব উপলব্ধি করতে পারবো। আসা করি এই পোস্টে রাধারাণীর যে প্রেমভক্তি তার একটা বিন্দু কমপক্ষে আস্বাদন করতে পারবে সকল ভক্ত পাঠক। এর থেকে আর বড় কোনো প্রার্থনা নেই।

“শ্রী গুরু চরণে রতি, এই সে উত্তম গতি, 
যে প্রসাদে পুরে সর্ব আশা।"
অর্থাৎ শ্রী গুরু উপদিষ্ট শ্রী কৃষ্ণতত্ত্ব, ভক্তিতত্ত্ব, প্রেমতত্ত্ব ও রসতত্ত্ব আদি হৃদয়ে ধরন করিয়া শ্রীগুরু পাদ পদ্মে যাঁহারা রতি বিধান করেন, তাঁহারা শ্রীগুরু চরনে অকপট ভক্তির বলেই প্রেমের
রাজ্যে যাবতীয় প্রাপ্য বস্তুস্মূহের মধ্যে পরমশ্রেষ্ঠ শ্রীরাধা প্রাণবন্ধুর শ্রীচরণ কমলের সম্বাহনাদিরূপ
প্রেমসেবা অনায়েসে লাভ করিয়া ধন্য হন। আর এই আনন্দে আমরাও গেয়ে উঠি,

"জয় রাধে রাধে কৃষ্ণ কৃষ্ণ
গোবিন্দ গোবিন্দ বলরে ...."
পরমকরুনাময় সচ্চিদানন্দ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর প্রিয় হ্লাদিনী শক্তি শ্রীমতি রাধারাণীর চরণকমলে সবার মঙ্গলময়, কল্যাণময়, সুন্দরময় ও আনন্দময় জীবনের জন্য ভক্তি প্রার্থনা।"""""জয় রাধাকৃষ্ণ""""

অবতার কি? কি তাঁর বৈশিষ্ট্য? প্রিয় ভক্তগণ আসুন আজ অবতার সম্বন্ধে অবগত হই।

অবতার (আক্ষরিক অর্থে অবতরণকারী) বলতে কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে স্বেচ্ছায় মর্ত্যে অবতীর্ণ পরম সত্ত্বাকে বোঝায়। কেবলমাত্র পরম সত্ত্বা বা পরমেশ্বরের অবতারগুলিই ধর্মানুশীলনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এই সকল অবতার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও অতিলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন। অন্যান্য অবতার গুলি ঈশ্বরের গৌণ সত্ত্বার রূপ অথবা কোনো গৌণ দেব দেবীর অবতার। অবতার, এই শব্দটি হিন্দুধর্মে মূলত বিষ্ণুর অবতারদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। বর্তমান হিন্দুধর্মের অন্যতম বৃহৎ শাখা বৈষ্ণবধর্মে এই সকল অবতারের পূজার বিধান রয়েছে। বৈষ্ণবরা বিষ্ণুর দশাবতারকে পরমেশ্বরের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যরূপে কল্পনা করেন। অনেক ক্ষেত্রেই অন্যান্য অবতার গুলি বৈষ্ণব শাস্ত্রের বর্ণিত অবতারদের অনুসরণে কল্পিত হয়ে থাকে। যেমন বৈষ্ণব ধর্ম মতে হিন্দুধর্মে অবতারবাদ মূলত বিষ্ণুকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে। বিষ্ণু ত্রিমূর্তির অন্যতম দেবতা ও হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী জগতের পালক ও রক্ষাকর্তা। অবতার হল, হিন্দু শাস্ত্রমতে ভগবান বিষ্ণুর মনুষ্যরূপে অথবা প্রানিরূপে পৃথিবীতে আগমন। বিভিন্ন গ্রন্থে অবতারের মোট সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। অবতার দুই প্রকার আংশিক ও পূর্ণাবতার। বিষ্ণু পরিপূর্ণভাবে আভির্ভূত হলে তাকে বলে পূর্ণবতার এবং আংশিকভাবে আভির্ভূত হলে তাকে বলে অংশাবতার।

বিষ্ণুর দশ সর্বাধিক প্রসিদ্ধ অবতার দশাবতার নামে পরিচিত। দশাবতারের তালিকাটি পাওয়া যায় গরুড় পুরাণ গ্রন্থে। এই দশ অবতারই মানব সমাজে তাঁদের প্রভাবের ভিত্তিতে সর্বাপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে গণ্য হন। দশাবতারের প্রথম চার জন অবতীর্ণ হয়েছিলেন সত্য যুগে। পরবর্তী তিন অবতারের আবির্ভাব ত্রেতাযুগে। অষ্টম অবতার দ্বাপরযুগে এবং নবম অবতার কলিযুগে অবতীর্ণ হন। গরুড় পুরাণ ও অন্যান্য সনাতনী গ্রন্থ অনুসারে, দশম অবতার এখনো অবতীর্ণ হননি। তিনি ৪২৭,০০০ বছর পর কলিযুগের শেষ পর্বে অবতীর্ণ হবেন। আসুন দেখি দশাবতার গুলি কি ও কি তার প্রকাশ••••••••

গরুড় পুরাণ মতে, বিষ্ণুর দশাবতার নাম ও যুগ উল্লেখিত:- মৎস্য, কূর্ম, বরাহ, নৃসিংহ, বামন,
পরশুরাম, রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, কল্কি

১. মৎস্যঃ- মাছের রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ

২. কূর্মঃ- কচ্ছপের রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ

৩. বরাহঃ- শূকরের রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ

৪. নৃসিংহঃ- অর্ধনরসিংহ রূপে সত্যযুগে অবতীর্ণ

৫. বামনঃ- বামনের রূপে ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ

৬. পরশুরামঃ- পরশু অর্থাৎ কুঠারধারী রামের রূপে ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ

৭. রামচন্দ্রঃ- অযোধ্যার রাজপুত্রের রূপে ত্রেতাযুগে অবতীর্ণ

৮. কৃষ্ণঃ- দ্বাপরযুগে ভ্রাতা বলরামের সঙ্গে অবতীর্ণ।

৯. বুদ্ধঃ- কলিযুগে অবতীর্ণ হন।

১০. কল্কিঃ- সর্বশেষ অবতার। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, কলিযুগের অন্তে তাঁর আবির্ভাব ঘটবে।

গরুড় পুরাণ অনুসারে বলরাম শীষনাগের অবতার। কোনো কোনো বৈষ্ণবীয় উপনিষদ শাস্ত্রে তাঁকে বিষ্ণুর নবম অবতার বলে মনে করা হয়। উল্লেখ্য, ঐ সকল গ্রন্থে বুদ্ধের কোনো উল্লেখ নেই। আবার শ্রীমদ ভাগবতে বুদ্ধদেব অবতারের উল্লেখ আছে। উল্লেখ্য দশাবতারের প্রকাশ••••••

#মৎস্যঃ- মৎস্য হল বিষ্ণুর প্রথম অবতার। মহাপ্লাবনের সময় বিষ্ণু একটি মাছরূপে পৃথিবীতে আসেন। অবতার বেশে বিষ্ণু, এ সময়ে তাঁর শিং এর সাথে মনুর নৌকা বেঁধে রাখেন। প্লাবন শেষে মনু পুনারায় এই সৃষ্ঠি প্রতিফলিত করেন।

#কূর্মঃ- কূর্ম বিষ্ণুর দ্বিতীয় অবতার। অমৃত উদ্ধারের জন্য যখন দেবতা ও দৈত্যরা সমুদ্র মন্থন করছিলো তখন বিষ্ণু কুৰ্মরূপ ধারণ করে মন্দর পর্বতকে পৃষ্ঠে ধারণ করে সাগরতলে শয়ন করেন । হাজার বছর মন্থনের পর ধন্বন্তরির আবির্ভাব হয়।

#বরাহঃ- বরাহ বিষ্ণুর তৃতীয় অবতার। বরাহ অর্থ শূকর। দানব হিরণ্যক্ষ পৃথিবীকে সমুদ্রতলে নিয়ে গেলে বরাহ তার সাথে এক হাজার বছর যুদ্ধ করে তাকে বধ করেন।

#নৃসিংহঃ- নৃসিংহ বিষ্ণুর চতুর্থ অবতার। হিরণ্যকশিপু নামে এক দানব তার পুত্র প্রহ্লাদকে হত্যা করতে গেলে বিষ্ণু নৃসিংহরূপে আবির্ভূত হন এবং প্রহ্লাদকে উদ্ধার করেন।

#বামনঃ- বামন বিষ্ণুর পঞ্চম অবতার। দানবরাজ বলি স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখল করে নেয় এবং প্রচন্ড অত্যাচার শুরু করে। তার হাত থেকে মানব ও দেবতাদের রক্ষা করার জন্য মানবরূপে বিষ্ণুর আবির্ভাব হয়। তিনি বলির নিকট তিন পদক্ষেপ সমপরিমান জমি পাবার জন্য আবেদন করেন। ক্ষুদ্রকায় বামনের তিন পদক্ষেপ জমি খুবই সামান্য বিবেচন করে বলি তা দিতে রাজি হন। বামন দুই পদক্ষেপে স্বর্গ ও মর্ত্য অধিকার করে নেন। বলি তখন বামনরূপী বিষ্ণুকে চিনতে পারেন এবং তাঁর বশ্যতা স্বীকার করে নেন।

#পরশুরামঃ- ত্রেতা যুগারম্ভে যখন ক্ষত্রিয় রাজারা অত্যাচারী-অনাচারী ও অধর্মী হয়ে উঠে, তখন সৃষ্টির পালনহার বিষ্ণু পরশুরাম রুপে অবতীর্ণ হয়। পরে মহাদেবের কাছ থেকে যুদ্ধবিদ্যা শিখে এবং পিতার মৃত্যু শোধ নিতে গিয়ে সৃষ্টির সমাজ থেকে ক্ষত্রিয় রাজাদের একবিংশবার বিনাশ করে।

#রামঃ- যখন বিষ্ণু পরশুরাম রুপে অবতীর্ণ হয়ে ক্ষত্রিয় রাজাদের বিনাশ করে, তখন সমাজের ক্ষত্রিয় বংশের মধ্যে আর কেউ রাজভার গ্রহণ করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে; তখন বিষ্ণু আবার ক্ষত্রিয় রাজাদের প্রস্তাবের জন্য রাম রুপে অবতীর্ণ হয়। তাছাড়া রাম অবতারণার পেছনে আরও একটি কারণ ছিলো, যেটি হলো রাক্ষস জাতি ও রাক্ষসরাজ দশানণ(রাবণ) বধ করে ধর্ম স্থাপনা।

#কৃষ্ণঃ- ত্রেতা পেরিয়ে দ্বাপর আসতে নাআসতেই এই ক্ষত্রিয়রা আবার অধর্মী ও পাপী হয়ে উঠে। তখন বিষ্ণু আবার কৃষ্ণ রুপে অবতীর্ণ হয়ে, পঞ্চ পাণ্ডবদের মাধ্যমে অধর্মের বিনাশ ও ধর্ম স্থাপনা করে এবং কলিযুগের ক্ষণস্থায়ী মানবের জন্য নাম সৃষ্টি করে।

#বুদ্ধঃ- কলিযুগের শুরুর পরে বিষ্ণু বুদ্ধদেব রুপে অবতীর্ণ হয়। এই অবতারের বৈশিষ্ট্য ছিল শান্তি, জীবপ্রেম ও ব্রহ্মচর্যাশ্রমের প্রকাশ। কিন্তু বর্তমান সভ্যতায় তাঁর এই বৈশিষ্ট্য চিহ্নমাত্র কেবল। অবশ্য ত্রিপিটক গ্রন্থটিতে উল্লেখ আছে যে, কলির শেষের দিকে বৌদ্ধ ও সনাতনীদের মধ্যে ভীষণাযুদ্ধ হবে এবং বৌদ্ধদের বিনাশ হবে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য সনাতনী শাস্ত্র গ্রন্থের মধ্যে এই বুদ্ধদেব অবতারের প্রকাশ পরিপূর্ণ ভাবে করেননি।

#কল্কিঃ- অতঃপর দুইযুগের(কলিযুগ এবং সত্যযুগের) সন্ধিক্ষণে ভগবান কল্কি অবতার রুপে, বিষ্ণুযশ নামক ব্যক্তির পুত্র হিসেবে জন্ম গ্রহণ করবেন। ঐ সময় পৃথিবীর প্রায় সমস্ত শাসক অধঃপতিত হয়ে লুটেরা ও ডাকাতের পর্যায়ে নেমে যাবে। তখন তিনি অসাধু লোকদের বিনাশ করে দায়িত্ব শেষ করার পর খুব কম সংখ্যক লোক বেঁচে থাকবে, যারা সৎ এবং ধার্মিক। কল্কি অবতারের পর এই পৃথিবীতে আবার সত্যযুগ শুরু হবে।

সংকলিত বাংলা শ্রীমদ ভাগবত পুরাণ–এর প্রথম স্কন্দের তৃতীয় অধ্যায়ে সংখ্যাক্রম অনুসারে বিষ্ণুর যে বাইশ অবতারের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা নিম্নরূপ:-

১. চতুর্সন [ভাগবত ১।৩।৬] (ব্রহ্মার চার পুত্র)

২. বরাহ [ভাগবত ১।৩।৭] (বন্য শূকর)

৩. নারদ [ভাগবত ১।৩।৮] (ভ্রাম্যমান ঋষি)

৪. নর-নারায়ণ [ভাগবত ১।৩।৯] (যমজ)

৫. কপিল [ভাগবত ১।৩।১০] (দার্শনিক)

৬. দত্তাত্রেয় [ভাগবত ১।৩।১১] (ত্রিমূর্তির যুগ্ম অবতার)

৭. যজ্ঞ [ভাগবত ১।৩।১২ (সাময়িকভাবে ইন্দ্রেরভূমিকা গ্রহণ করা বিষ্ণু)

৮. ঋষভ [ভাগবত ১।৩।১৩] (রাজা ভরত ও বাহুবলীর পিতা)

৯. পৃথু [ভাগবত ১।৩।১৪] (যে রাজা পৃথিবীকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলেছিলেন)

১০. মৎস্য [ভাগবত ১।৩।১৫] (মাছ)

১১. কূর্ম [ভাগবত পুরাণ ১।৩।১৬] (কচ্ছপ)

১২. ধন্বন্তরী [ভাগবত ১।৩।১৭] (আয়ুর্বেদেরজনক)

১৩. মোহিনী [ভাগবত ১।৩।১৭] (সুন্দরী নারী)

১৪. নৃসিংহ [ভাগবত ১।৩।১৮] (নর-সিংহ)

১৫. বামন [ভাগবত ১।৩।১৯] (খর্বকায়)

১৬. পরশুরাম [ভাগবত ১।৩।২০] (পরশু অর্থাৎ কুঠার সহ রাম)

১৭. ব্যাসদেব [ভাগবত ১।৩।২১] (বেদ ও সনাতনী গ্রন্থ সংকলক)

১৮. রাম [ভাগবত ১।৩।২২] (অযোধ্যার রাজা)

১৯. বলরাম [ভাগবত ১।৩।২৩] (কৃষ্ণের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা)

২০. কৃষ্ণ [ভাগবত ১।৩।২৩] (রাখাল বা স্বয়ং ভগবান)

২১. বুদ্ধ [ভাগবত ১।৩।২৪] (জ্ঞানী)

২২. কল্কি [ভাগবত ১।৩।২৫] (ধ্বংসকারী)

এই বাইশ অবতার ছাড়াও উক্ত গ্রন্থের পরবর্তী অংশে আরও তিন অবতারের কথা আছে যেমন:-

১.প্রশ্নিগর্ভ [ভাগবত ১।৩।৪১] (প্রশ্নির সন্তান)

২.হয়গ্রীব [ভাগবত ২।৭।১১] (অশ্ব)

৩.হংস [ভাগবত ১১।১৩।১৯] (রাজহংস)

কিন্তু আবার সংস্কৃত শ্রীমদ ভাগবতে বিষ্ণুর পঁচিশ অবতারের মধ্যে শুধুমাত্র বাইশটি অবতারের উল্লেখ আছে। বাকি তিনটি অবতার অদৃশ্য রেখেছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে, এই তিনটি অবতার যেকোনো সময় যেকোনো রুপে অবতীর্ণ হবেন; সৃষ্টির যেকোনো কার্যসিদ্ধি হেতু। কিন্তু সংকলিত বাংলা ভাগবতে শুধুমাত্র বাইশটি অবতারের নাম পাওয়া যায়, বাকি তিনটি অবতারের প্রকাশ করেননি; কিন্তু বলেছেন বিষ্ণুর অবতার অনেক। যাইহোক এখন আমরা দেখবো, সংস্কৃত শ্রীমদ ভাগবত মতে বিষ্ণুর অবতার বর্ণনাগুলো, যেমন••••••••

১. সনৎকুমার(ব্রহ্মপুত্র)

২. বরাহ(শূকর)

৩. নারদ(ভ্রাম্যমাণ ঋষি)

৪. নর-নারায়ণ(জমজ ভ্রাতা)

৫. কপিল(দার্শনিক)

৬. দত্তাত্রেয়(ত্রিপতি)

৭. যজ্ঞ(ইন্দ্রাসনী বিষ্ণু)

৮. ঋষভ(শক্তিবীর)

৯. পৃথু(সৃষ্টি সৌন্দর্যের প্রতীক)

১০. মৎস্য(মাছ)

১১. কূর্ম্ম(কচ্ছপ)

১২. ধন্বন্তরি(আয়ুর্বেদিক জনক)

১৩. মোহিনী(মনোমুগ্ধকর রমনী)

১৪. নরসিংহ(অর্ধনর-অর্ধসিংহ)

১৫. বামণ(কর্বকায়)

১৬. পরশুরাম(কুঠারধারী ক্ষত্রিয় বিনাশক)

১৭. ব্যাসদেব(বেদগ্রন্থ প্রণেতা)

১৮. রামচন্দ্র(রাম)

১৯. হয়গ্রীব(অশ্ব)

২০. কৃষ্ণ(রাখাল)

২১. বুদ্ধদেব(জ্ঞানী)

২২. কল্কি(ধংশকারী)

উল্লেখযোগ্য এইখানে বলরামের কোনও উল্লেখ নেই এবং ভাগবত পুরাণে যে বাকি তিনটি অবতার উল্লেখ করেছেন, সংস্কৃত ভাগবতে সেই তিনটি থেকে হয়গ্রীব (অশ্বের) উল্লেখ করেছেন বিষ্ণুর বাইশ অবতার সম্পাদনার মধ্যে। তবে যে যেই মতে মানুক আর চিনুক, এই অবতার সৃষ্টির মানব কল্যাণে দৃঢ়তার সহিত তৎপর ছিলো এবং আছে পূর্ণ বিশ্বাস ভবিষ্যতেও থাকবে।

বিঃদ্র:- বলরামের শীষনাগ অবতার সম্পাদনার প্রমাণ বিষ্ণুপুরাণ ও রামায়ণের মধ্যে পরিপুষ্ট। যেমন, রামায়ণের মধ্যে শীষনাগ লক্ষ্মণ হয়ে জন্মগ্রহণ করে কিন্তু রাম যখন সীতাকে বনবাস দেয় তখন অনিচ্ছা সত্তেও লক্ষ্মণ বড়ভ্রাতার আদেশ মানতে বাধ্য হয়। যদিও রাম ও লক্ষ্মণ সীতার অগ্নি পরীক্ষা দেখেছিলেন। অতঃপর ত্রেতাযুগের অবতারিক কার্যক্রম শেষ করে যখন দুজনেই বৈকুন্ঠে গমন করেন, তখন শীষনাগ প্রভু বিষ্ণুকে বললেন; প্রভু আমি আপনার পরবর্তী আবির্ভাবে আপনার বড়ভ্রাতা রুপে অবতীর্ণ হতে চাই। উত্তরে বিষ্ণু বললেন কেনো? তখন শীষনাগ বললেন, মাতা লক্ষ্মীর উপরে আপনি যে অন্যায় করেছেন তা আমাকে মুখ বুঝে সহ্য করতে হয়েছে; কারণ আপনি আমার বড়ভ্রাতা ছিলেন, আর আপনার আদেশ পালন করা আমার নৈতিক ধর্ম ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে আমাকে যাতে এই অন্যায় সহ্য করতে না হয়, এইজন্যই আমি আপনার বড়ভ্রাতা রুপে অবতীর্ণ হতে আগ্রহ প্রকাশ করছি। কেননা আপনার যেকোনো অন্যায় কার্যে আমি আপনাকে সংশোধন করতে পারবো। তখন বিষ্ণুদেব শীষনাগকে তথাস্তু বললেন। প্রতিশ্রুতি অনুসারে বিষ্ণুর দ্বাপর যুগের অবতারে শীষনাগ কৃষ্ণনের বড়ভ্রাতা বলরাম রুপে অবতীর্ণ হয়।

卐 প্রিয় ভক্তগণ, এই পেইজটি যদি আপনাদের সনাতনী শাস্ত্র গ্রন্থ সম্বন্ধে অবগত করতে সক্ষম হয়, আপনারা যদি এই পেইজ থেকে কিছু ধর্ম জ্ঞান উপলব্ধি করতে পারেন; তাহলে বিনীত ভাবে অনুরোধ জ্ঞাপন করছি যে- আপনারা আপনাদের বন্ধুদের এই পেইজটিতে ইনভাইট করুন।卐

(প্রনিপাতান্তে= ঋষি অশোকানন্দ পুরী)

ॐ সর্বেসাং মঙ্গলং ভবতুঃ সর্বে সন্তু্ নিরাময়াহা।
সর্বে ভদ্রানি নিপশসন্তু্ মা কশ্চিত দুঃখ ভাগভবেৎ।।

""""জয় শ্রীকৃষ্ণ""""

See Translation