Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Monday, August 28, 2017

ইচ্ছামৃত্যু লাভের উপায়

শচীন্দ্রনাথ হালদার।

বায়ু তত্ত্ব-মানুষের পঞ্চভূতের দেহের মধ্যে বায়ু অন্যতম। আমাদের দেহে পাঁচ ধরনের বায়ু কাজ করে। যথাঃ ১)প্রাণ বায়ু ২)অপান বায়ু ৩)সমান বায়ু ৪)ব্যান বায়ু এবং ৫) উদান বায়ু।

১) প্রাণ বায়ুঃ আমাদের শরীরের শ্বাস-প্রশ্বাসের বায়ুকে প্রাণ বায়ু বলে। প্রাণই এ শ্বাস-প্রশ্বাসের মূল শক্তি। এ প্রাণকে প্রানায়ামের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করা যায়। আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি রেশম সুতার মত। উহা ধারন বা সংযম করতে পারলে স্মায়ুবিক শক্তিপ্রবাহরুপ শক্ত সুতা, তারপর মনোবৃত্তিরুপ শক্ত দড়ি, পরিশেষে প্রাণরুপ রজ্জুকে ধরতে পারা যায়। প্রাণকে নিয়ন্ত্রন করতে পারলেই মুক্তিলাভ হয়ে থাকে। প্রানায়েমের মাধ্যমে শরীর এবং মনকে সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে আনা যায়। মানুষের প্রাণ অন্নগত প্রাণ। আমার জানামতে আয়ারল্যান্ডের সংসদ সদস্য ববি স্যান্ডস ছিষট্টি দিন অনশন করে মৃত্যুবরন করেন।

ভারতীয় বাঙ্গালী স্বাধীনতা সংগ্রামী মিঃ দাস(সম্ভবতঃ নিতাই দাস) পাঞ্জাব জেলে তেষট্টি দিন অনশন করে মৃত্যুবরন করেন। অর্থাৎ ৬০/৭০ দিন না খেলে প্রাণ দেহ থেকে বের হয়ে যায় এবং আত্মা প্রাণকে অনুস্ম্রণ করে।ফলে জাতকের মৃত্যু হয়। আমাদের প্রাণ বায়ূগত প্রাণ। ২/৩ মিনিট বায়ু গ্রহণ না করলেই দেহ থেকে প্রাণ বের হয়ে যায় এবং আত্মা প্রাণকে অনুস্মরন করে।ফলে জাতকের মৃত্যু ঘটে। প্রাণ বায়ুর গতি মুখ ও নাক পর্যন্ত এবং বৃত্তি হৃদয় পর্যন্ত। প্রানায়ামের মাধ্যমে প্রাণকে নিয়ন্ত্রন করেই সাধকরা অষ্টসিদ্ধি লাভ করে প্রায় ঈশ্বরীয় ক্ষমতা ভোগ করতে পারে।

২) অপান বায়ুঃ মানুষের নাভির নিচে এ বায়ুর অবস্থান। এ বায়ু দুষিত হলেই মানব দেহে নানাপ্রকার রোগের সৃষ্টি হয়। এ অপান বায়ু শুদ্ধির প্রক্রিয়াটি সাধকরা জানার ফলে তারা কখনো অসুস্থ হন না। এ অপান বায়ুর বৃত্তি নাভিমূল থেকে পায়ের নীচ পর্যন্ত।
৩)সমান বায়ুঃ আমাদের দেহের নাভিমুলে সমান বায়ুর অবস্থান। এ সমান বায়ু প্রাণ এবং অপান বায়ুকে আলাদা করেছে। সমান বায়ু শরীরে সমতা নিয়ে আসে(স্থাপন করে)। এ বায়ুর প্রভাবে দেহ জ্যোতিস্মান ও তেজীয়ান হয়।
৪) ব্যান বায়ুঃ ব্যান বায়ু সমস্ত শরীরে ব্যাপ্ত থাকায় তা ব্যান বায়ু।

৫) উদান বায়ুঃ নাভিমূল থেকে মস্তক পর্যন্ত উদান বায়ুর বৃত্তি।আমাদের কথা বলার সক্ষমতা এ বায়ুর কারনেই হয়ে থাকে।উদান বায়ুর সমস্যার কারনে মানুষ তোতলা বা বোবা হয়। মানুষের বোধরুপ স্নায়ুতন্ত্র উদান বায়ুর আশ্রয়।
প্রাণ বায়ুর সাথে অপান বায়ুর মিলন ঘটায়ে সাধকরা ইচ্ছামৃত্যু লাভ করতে পারে।কিন্তু এজন্য দীর্ঘকাল সাধনার প্রয়োজন। এ যুগে মানুষের আয়ু ১১৬ বছর। কিন্তু সাধকরা দীর্ঘকাল সাধনার দ্বারা প্রাণ ও অপান বায়ুর মিলন ঘটায়ে এ আয়ু আরো অনেক বছর বাড়াতে পারেন।লোকনাথ ব্রহ্মচারী নিজে ১৬০ বছর বেচেছিলেন।তিনি তিন বার মক্কানগরী ভ্রমন করেছিলেন।মক্কানগরীতে লোকনাথ বাবা আবদুর গফুর নামের গুহায় ধ্যানরত মৌণব্রত একজন মুসলমানের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন।তখন আবদুর গফুরের বয়স ছিল ৪০০ বছর(লোকনাথ পঞ্চিকায় তাঁর জীবনী দ্রস্টব্য)।
একশত বছর আগে ভোলা গিরি নামে একজন নাগা সন্নাসী বাংলাদেশের খুলনায় এসেছিলেন।তখন তাঁর বয়স সারে সাত শত বছর।পুরাতন ঢাকায় তার নামে একটি আশ্রম আছে। ভারতের ৪টি তীর্থক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ১২ বছর পর পর পূর্ণ কুম্ভমেলা এবং ছয় বছর পর পর অর্ধ কুম্ভমেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ১১৬ বছরের অধিক বয়স্ক অনেক সাধককে পাওয়া যায়। পরবর্তী অর্ধকুম্ভমেলা ২০১৮ সালে এবং পূর্ণ কুম্ভমেলা ২০২৪ সালে নির্ধারিত তীর্থক্ষেত্রে অনুষ্ঠিত হবে। অরিস্ট নামক মৃত্যুলক্ষনগুলির উপর মনোসংযোগ করলে জাতকের মৃত্যুর ক্ষণ জানা যায়।

No comments:

Post a Comment