Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Saturday, April 22, 2017

সনাতন ধর্মকে জানুন, অমৃতের অনুসন্ধান করুন

সত্যযুগের তারকব্রহ্ম নাম

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা (নিয়মিত পর্ব-২)

অনেকে অভিযোগ করেন, মনুসংহিতা সামগ্রিকরূপে একটি নারীবিরোধী শাস্ত্র। স্মরণ রাখা প্রয়োজন, পণ্ডিত ও বিদ্বান সমাজ একথা বহুবার স্বীকার করেছেন যে, মনুসংহিতা নামক স্মৃতিশাস্ত্রটিতে বহু প্রক্ষিপ্ত অংশ রয়েছে। এর মানে এই যে, জাতিগত বা সময়গত বিশেষ বিশেষ উদ্দেশ্যে এই পবিত্র গ্রন্থটিতে অনেক কাঁটাছেঁড়া করা হয়েছে। শ্লোক রচনার গঠন রীতির আধুনিকতা ও প্রাচীনতা বিবেচনা করে এই জাল শ্লোকগুলো আলাদা করা খুব কঠিন কিছু নয়। আদি মনুসংহিতা শাস্ত্রটি অধ্যয়ন করলে যে কেউ গর্বভরে দাবি করতে পারবেন যে, পৃথিবীতে নারীকে মর্যাদা দানে মহর্ষি মনুর মতো এতো চমৎকার সব বিধান আর কোন ধর্মনেতা কোন কালেই প্রদান করেননি। এমনকি মনুসংহিতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হলে অনেক ক্ষেত্রে আধুনিক নারীবাদীদের চিন্তাধারারও উন্নয়নের প্রয়োজন। এখানে অত্যন্ত সংক্ষেপে মনুস্মৃতির আলোকে বিষয়টা আলোচনা করা হলো।

আমরা এখন এমন একটি শ্লোক পড়ব যার অর্থ দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করে যে নারীরাই হচ্ছে কোন উন্নত সমাজের ভিত্তিস্বরূপ। এটি মনুসংহিতার তৃতীয় অধ্যায়ের (ধর্মসংস্কার প্রকরণ) শ্লোকঃ
যত্র নার্য্যস্তু পূজ্যন্তে রমন্তে তত্র দেবতাঃ।
যত্রৈতাস্তু ন পূজ্যন্তে সর্বাস্তত্রাফলাঃ ক্রিয়াঃ।। (মনুসংহিতা ৩/৫৬)
অর্থাৎ
“যে সমাজে নারীদের যথাযথ শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা হয় সেই সমাজ উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি লাভ করে। আর যারা নারীদের যোগ্য সম্মান করে না, তারা যতই মহৎ কর্ম করুক না কেন, তার সবই নিষ্ফল হয়ে যায়।”

এটি নারীদের প্রতি কোন চাটুকারিতা বা তোষামদি নয়। এটি এমন একটি সত্য যা নারীবিদ্বেষীদের কাছে বিষের মতো, আর নারীশক্তির মহিমা কীর্তনীয়াদের কাছে অমৃতস্বরূপ। প্রকৃতির এই নিয়ম পরিবার, সমাজ, ধর্মগোষ্ঠী, জাতি বা সমগ্র মানবতার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য। যারা মনুস্মৃতিকে দোষারোপ করেন, তারা কখনোই এই শ্লোকের উদ্ধৃতি দেন না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শুধুমাত্র হিন্দুধর্ম সম্পর্কে কুৎসা প্রচারই তাদের একমাত্র কাজ। নিরপেক্ষ বিচার তাদের কাছে নেই। যেমন নিচের চমৎকার শ্লোকগুলোর কথা কোন ব্লগার বা হিন্দুধর্মের সমালোচক উল্লেখ করেন না:

“একজন পিতা, ভাই, পতি বা দেবর তাদের কন্যা, বোন, স্ত্রী বা ভ্রাতৃবধুকে মৃদুবাক্য, ভদ্র ব্যবহার ও উপহারাদি দ্বারা খুশি ও সন্তুষ্ট রাখবেন। যারা যথার্থ কল্যাণ ও উন্নতি চান, তারা নিশ্চিত করবেন যে, তাদের পরিবারের নারীরা যাতে সর্বদা খুশী থাকেন এবং কখনো দুর্দশা ভোগ না করেন”। (মনুসংহিতা ৩/৫৫)

“যে বংশে ভগিনী ও গৃহস্থের স্ত্রী (নারীকূল) পুরুষদের কৃতকর্মের জন্য দুঃখিনী হয়, সেই বংশ অতি শীঘ্র ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। আর যে বংশে স্ত্রীলোকেরা সন্তুষ্ট থাকে, সেই বংশ নিশ্চিতভাবেই শ্রীবৃদ্ধি লাভ করে”। (মনুসংহিতা ৩/৫৭)

ভেবে দেখুন, পরিবারের সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধির জন্য এর চেয়ে বড় কথা আর কি হতে পারে? এখানে পুরুষতান্ত্রিকতা চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। নারীকে সর্বদা সুখী রাখতে হবে -এটাই মহর্ষি মনুর নির্দেশ।

“যে স্বামী তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট রাখে না, সে তার সমগ্র পরিবারের জন্য দুর্দশা বয়ে আনে। আর যদি স্ত্রী পরিবারের প্রতি সুখী থাকেন, তবে সমগ্র পরিবার শোভাময় হয়ে থাকে।” (মনুসংহিতা ৩/৬২)

“যে বংশকে উদ্দেশ্য করে ভগিনী, পত্নী, পুত্রবধূ প্রভৃতি স্ত্রীলোকেরা অনাদৃত, অপমানিত বা বৈষম্যের শিকার হয়ে অভিশাপ দেন, সেই বংশ বিষপান করা ব্যক্তি ন্যায় ধন-পশু প্রভৃতির সাথে সর্বতোভাবে বিনাশপ্রাপ্ত হয়।” (মনুসংহিতা ৩/৫৮)

পুরুষতান্ত্রিক যে সমাজে নারীনির্যাতন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, নারীকে যথেচ্ছা সম্ভোগ, প্রহার বা তাড়িয়ে দেওয়ার বিধানও যে সমাজ অনুমোদন করে, সেই সমাজ যে ক্রমেই বিনাশপ্রাপ্ত হবে -এটাই তো স্বাভাবিক। বিশ্বের প্রতিটি নারীর ব্যক্তিগত জীবনের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও সর্বাঙ্গীন মঙ্গলের লক্ষ্যে, নারীর অপমান ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে মহর্ষি মনু যে দৃপ্ত বাণী উচ্চারণ করেছেন, তাতে তো মনুকে বরং কট্টর নারীবাদী বলেই মনে হয়, তাই না?

“যারা ঐশ্বর্য কামনা করে, তারা স্ত্রীলোকদের সম্মান প্রদর্শন দ্বারা খুশী রাখবে এবং উত্তম অলংকার, পোশাক ও খাদ্যদ্বারা প্রীত রাখবে। স্ত্রীজাতিকে সর্বদা পবিত্র হিসেবে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করবে।” (মনুসংহিতা ৩/৫৯)

শ্লোকটিকে খুব নারীবাদী মনে হতে পারে, তবে মহর্ষি মনু মোটেও পুরুষতান্ত্রিক বা নারীবাদী কোনটাই নন, তিনি মানবতাবাদী। মনে রাখবেন ‘মনু’ শব্দ থেকেই ‘মানব’ ও ‘মানবতা’ শব্দের উৎপত্তি।

“স্ত্রী লোকেরা সন্তানাদি প্রসব ও পালন করে থাকে। তারা নতুন প্রজন্ম বা উত্তরসুরির জন্ম দেয়। তারা গৃহের দীপ্তি বা প্রকাশস্বরূপ। তারা সৌভাগ্য ও আশীর্বাদ বয়ে আনে। তারাই গৃহের শ্রী।” (মনুসংহিতা ৯/২৬)

আজও ভারতবর্ষে মহর্ষি মনুর এই শ্লোক থেকেই শিক্ষা নিয়ে মেয়েদের ‘ভাগ্যশ্রী’, ‘ঘরের লক্ষ্মী’ বা ‘গৃহলক্ষ্মী’ বলা হয়।

“প্রজন্ম থেকে প্রজন্মোন্তরে স্ত্রীরাই সকল সুখের মূল। কারণ, সন্তান উত্পাদন, ধর্ম পালন, পরিবারের পরিচর্যা, দাম্পত্য শান্তি এসব কাজ নারীদের দ্বারাই নিষ্পন্ন হয়ে থাকে।” (মনুসংহিতা ৯/২৮)

অন্যকথায়, মাতৃরূপে, কন্যারূপে, স্ত্রীরূপে, ভগ্নীরূপে কিংবা ধর্মকর্মে অংশীদাররূপে নারীরাই সকল কল্যাণের মূল উত্স বলে মহর্ষি মনু প্রতিপাদন করেছেন।

“পতি ও পত্নী মৃত্যু পর্যন্ত একসাথে থাকবেন। তারা অন্য কোন জীবনসঙ্গী গ্রহণ করবেন না বা ব্যাভিচার করবেন না। এই হলো নারী-পুরুষের পরম ধর্ম।” (মনুসংহিতা ৯/১০১)

“নারী ও পুরুষ একে ভিন্ন অপরে অসম্পূর্ণ। এজন্য বেদে বলা হয়েছে ধর্মকর্ম পত্নীর সাথে মিলিতভাবে কর্তব্য”। (মনুসংহিতা ৯/৯৬)

এই শ্লোকটির কথা একবার ভেবে দেখুন। নারী ছাড়া পুরুষ অসম্পূর্ণ একথা শুধুমাত্র হিন্দুধর্মই বলে থাকে। নারী ছাড়া পুরুষের ধর্মকর্ম সম্পূর্ণ হয় না। বৈদিক যজ্ঞ ও ধর্মপালন স্বামী-স্ত্রী যুগ্মভাবে করতে হয়, কেউ একাকী করতে পারেন না। একারণেই নারীকে বলা হয় পুরুষের ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ও ‘সহধর্মিনী’। উল্লেখ্য, মনুসংহিতাই একমাত্র ধর্মশাস্ত্র যেখানে এই বিখ্যাত কথা দুইটি অনুমোদন করা হয়েছে। সঙ্গত কারণেই হিন্দুধর্মে বিবাহবিচ্ছেদ এবং বহুবিবাহ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, অন্য ধর্মে নারী পুরুষের অর্ধাঙ্গিনীও নয়, সহধর্মিনীও নয়। এই কথা মানতে নারাজ হলে একটি মাত্র দৃষ্টান্ত দিচ্ছি- মসজিদে নারী-পুরুষ কি একসাথে নামাজ পড়া সম্ভব? এমনকি নিজ গৃহেও স্বামী-স্ত্রী কি একসাথে নামাজ পড়তে পারেন? স্বয়ং বিবেচনা করুন।

এবার নারীদের স্বাতন্ত্রের কথায় আসা যাক। স্মর্তব্য, স্বাধীনতা মানে উচ্ছৃঙ্খলা নয়, স্বাতন্ত্র্য মানেই ঔদ্ধত্য নয়।

“যে স্ত্রী দুঃশীলতা হেতু নিজে আত্মরক্ষায় যত্নবতী না হয়, তাকে পুরুষগণ ঘরে আটকে রাখলেও সে ‘অরক্ষিতা’ থাকে। কিন্তু যারা সর্বদা আপনা-আপনি আত্মরক্ষায় তত্পর, তাদের কেউ রক্ষা না করলেও তারা ‘সুরক্ষিতা’ হয়ে থাকে। তাই স্ত্রীলোকদের আটকে রাখা নিষ্ফল। স্ত্রীজাতির নিরাপত্তা প্রধানত তাদের নিজস্ব সামর্থ্য ও মনোভাবের উপর নির্ভরশীল।” (মনুসংহিতা ৯/১২)

এই শ্লোকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, নিরাপত্তার নামে নারীকে ঘরে আটকে রাখা নিষ্ফল। বিপরীতক্রমে তাকে নিরাপদ রাখতে হলে তাকে অধিকার দিতে হবে এবং সঠিক শিক্ষা-দীক্ষা প্রদান করতে হবে। নারীর সামর্থ্য ও প্রজ্ঞা বৃদ্ধি করতে হবে, মানবিক বিকাশ সাধনে তৎপর হতে হবে, যার ফলশ্রুতিতে তারা যেন আত্মরক্ষায় তৎপর থাকেন, নিজেদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। নারী জাতি সম্পর্কে এই হলো মহর্ষি মনুর মতাদর্শ।

“নারী অপহরণকারীদের মৃত্যুদণ্ড হবে।” (মনুসংহিতা ৮/৩২৩)

“যারা নারী, শিশু ও গুণবান পণ্ডিতদের হত্যা করে, তাদের কঠিনতম শাস্তি দিতে হবে।” (মনুসংহিতা ৯/২৩২)

“যারা নারীদের ধর্ষণ করে বা উত্যক্ত করে বা তাদের ব্যাভিচারে প্ররোচিত করে তাদের এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে তা অন্যদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে এবং কেউ তা করতে আর সাহস না পায়।” (মনুসংহিতা ৮/৩৫২)

ইভটিজিং এখন প্রধান একটা সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে, যার বিরুদ্ধে কঠোর কোন শাস্তির ব্যবস্থা নেই। কিন্তু ইভটিজিং, অপহরণ ও ধর্ষণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান কিন্তু সেই মনুর যুগ থেকেই প্রচলিত ছিল।

“যদি কেউ মা, স্ত্রী বা কন্যার নামে মিথ্যা দোষারোপ করে তবে তাকে শাস্তি দিতে হবে।” (মনুসংহিতা ৮/২৭৫)

অথচ নারীকে এই মিথ্যা দোষারোপ করেই প্রতিবছর হাজার হাজার নারীকে ‘অনার কিলিং’ করা হয়। অর্থাৎ হিন্দুধর্মের বিপরীত বিধানও অনেক সমাজে প্রচলিত আছে।

“যদি কেউ কোন ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া মা, বাবা, স্ত্রী বা সন্তান ত্যাগ করে, তাকে কঠিন দণ্ড দিতে হবে।” (মনুসংহিতা ৮/৩৮৯)

ভেবে দেখুন, পথে-ঘাটে যত অনাথ শিশু দেখেন, যত নিশিকন্যা দেখেন, যত পিতৃ-মাতৃতুল্য বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাকে হাত পেতে ভিক্ষা করতে দেখেন, তাদের মাঝে কতজনকে আপনি হিন্দু দেখেছেন? হিন্দুদের মানবিক মূল্যবোধ অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নয় কি? নিজেই বিচার করুন।

“যদি কোন নারীকে সুরক্ষা দেবার জন্য পুত্র বা কোন পুরুষ পরিবারে না থাকে, অথবা যদি সে বিধবা হয়ে থাকে, যে অসুস্থ অথবা যার স্বামী বিদেশে গেছে, তাহলে রাজা তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। যদি তার সম্পত্তি তার কোন বন্ধু বা আত্মীয় হরণ করে, তাহলে রাজা দোষীদের কঠোর শাস্তি দেবেন এবং সম্পত্তি ঐ নারীকে ফেরত দেবেন।” (মনুসংহিতা ৮/২৮-২৯)

অর্থাৎ নারীর নিরাপত্তা বিধান ও অধিকার সংরক্ষণে দেশের সরকারকেও সদা তৎপর থাকতে হবে।

“নববিবাহিতা বধূ, কন্যা এবং গর্ভবতী মহিলাদের অতিথি ভোজনের পূর্বেই ভোজন প্রদান করতে হবে।” (মনুসংহিতা ৩/১১৪)

“বাহনে বা যানে আরোহী ব্যক্তির পক্ষে বয়স্ক ব্যক্তি, ক্লান্ত ব্যক্তি, ভারবাহী ব্যক্তি, বর, রাজা, স্নাতক এবং স্ত্রীলোকদের পথ ছেড়ে দেয়া কর্তব্য।” (মনুসংহিতা ২/১৩৮)

এই মানবিক ভদ্রতা জ্ঞানটুকু আর কোন শাস্ত্রে আছে? Ladies First তত্ত্বটা কিন্তু তাহলে বিদেশী নয়, বরং ভারতীয় রীতি বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।।

বরুথিনী একাদশী মাহাত্ম্য

বৈশাখ কৃষ্ণপক্ষীয়া বরুথিনী একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য ভবিষ্যোত্তর পুরাণে যুধিষ্ঠির-শ্রীকৃষ্ণ সংবাদে বর্ণনা করা হয়েছে।
যুধিষ্ঠির মহারাজ শ্রীকৃষ্ণকে বললেন- হে বাসুদেব! আপনাকে প্রণাম। বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী কি নামে প্রসিদ্ধ এবং তার মহিমাই বা কি তা কৃপা করে আমাকে বলুন।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন- হে রাজন! ইহলোক ও পরলোকে বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশী ‘বরুথিনী’ নামে বিখ্যাত। এই ব্রত পালনে সর্বদা সুখ লাভ হয় এবং পাপক্ষয় ও সৌভাগ্য প্রাপ্তি ঘটে। দুর্ভাগা স্ত্রীলোক এই ব্রত পালনে সর্বসৌভাগ্য লাভ করে থাকে। ভক্তি ও মুক্তি প্রদানকারী এই ব্রত সর্বপাপহরণ এবং গর্ভবাস যন্ত্রণা বিনাশ করে। এই ব্রত প্রভাবে মান্ধাতা, ধুন্ধুমার আদি রাজারা দিব্যধাম লাভ করেছেন। এমনকি মহাদেব শিবও এই ব্রত পালন করেছিলেন। দশ হাজার বৎসর তপস্যার ফল কেবলমাত্র এক বরুথিনী ব্রত পালনে লাভ হয়। যে শ্রদ্ধাবান ব্যক্তি এই ব্রত পালন করেন তিনি ইহলোক ও পরলোকে সমস্ত প্রকার বাঞ্চিত ফল লাভ করেন।
হে নৃপশ্রেষ্ঠ! অশ্বদান অপেক্ষা গজদান শ্রেষ্ঠ, গজদান থেকে ভূমিদান, তা থেকে তিলদান, তিলদান থেকে স্বর্ণদান এবং তা অপেক্ষা অন্নদান শ্রেষ্ঠ। অন্নদানের মত শ্রেষ্ঠদান আর নেই। পিতৃলোক, দেবলোক ও মানুষেরা অন্নদানেই পরিতৃপ্ত হন। পন্ডিতেরা কন্যাদানকে অন্নদানের সমান বলে থাকেন। স্বয়ং ভগবান গোদানকে অন্নদানের সমান বলেছেন। আবার এই সমস্ত প্রকার দান থেকেও বিদ্যাদান শ্রেষ্ঠ। কিন্তু এই বরুথিনী ব্রত পালনে সেই বিদ্যাদানের সমান ফল লাভ হয়ে থাকে।
পাপমতি যে সব মানুষ কন্যার উপার্জিত অর্থে জীবনধারণ করে, পুণ্যক্ষয়ে তাদের নরকযাতনা ভোগ করতে হয়। তাই কখনও কন্যার উপার্জিত অর্থ গ্রহণ করা উচিত নয়। যে ব্যক্তি বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার সহ কন্যাদান করেন তাঁর পুণ্যের হিসাব স্বয়ং চিত্রগুপ্তও করতে অসমর্থ হন। কিন্তু ‘বরুথিনী’ ব্রত পালনকারী কন্যাদান থেকেও বেশি ফল লাভ করে।
ব্রতকারী ব্যক্তি দশমীর দিনে কাঁসার পাত্রে ভোজন, মাংস, মসুর, ছোলা, শাক, মধু, অন্যের প্রদত্ত অন্নগ্রহণ, দুইবার আহার ও মৈথুন পরিত্যাগ করবে। দ্যূতক্রীড়া, নেশাজাতীয় দ্রব্য, দিবানিদ্রা, পরনিন্দা-পরচর্চা, প্রতারণা, চুরি, হিংসা, মৈথুন, ক্রোধ ও মিথ্যাবাক্য একাদশীর দিনে বর্জনীয়। কাঁসার পাত্রে ভোজন, মাংস, মসুর, মধু, তেল, মিথ্যাভাষণ, ব্যায়াম, দুইবার আহার ও মৈথুন এসব দ্বাদশীর দিনে পরিত্যাজ্য।
হে রাজন! এই বিধি অনুসারে বরুথিনী ব্রত পালনে সকল প্রকার পাপের বিনাশ এবং অক্ষয় গতি লাভ হয়। যিনি হরিবাসরে রাত্রিজাগরণ করে ভগবান জনার্দনের পূজা করেন, তিনি সর্বপাপ মুক্ত হয়ে পরমগতি লাভ করেন।
তাই সূর্যপুত্র যমরাজের যাতনা থেকে পরিত্রাণের জন্য পরম যত্নে এই একাদশী ব্রত পালন করা কর্তব্য। বরুথিনী একাদশীর ব্রতকথা শ্রদ্ধাভরে পাঠ বা শ্রবণ করলে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয় এবং সর্বপাপ থেকে মুক্ত হয়ে বিষ্ণুলোকে গতি হয়।

বেদ সকলের সমান অধিকার

যেখানে বেদপ্রচারের ধারায় আজ সবাই জানে যে বেদপাঠ,উপনয়নে অধিকার নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষের সমান অধিকার সেখানে আজও নিজেকে জোর করে ব্রাহ্মন পরিচয় দেয়া কিছু দস্যু তা অস্বীকার করতে চায়।পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব ও নারীকে অবদমিত করে রাখার কুপ্রবৃত্তি ই এর মূল কারন,আর এর সঙ্গে অজ্ঞানতা তো আছেই!পৌরাণিক এই অভিশপ্ত মতবাদ আজও পুরোপুরি হিন্দু সমাজকে ছেড়ে যায়নি,এখনও তথাকথিত অনেক খ্যাতিমান ভগবৎ নাম প্রচারকারী গোষ্ঠীসমূহ প্রচার করে কলির জীবেরা নাকি সবাই শুদ্র,তাদের অভিশপ্ত ওই পুরাণগুলোই যে ঘোষণা করেছিল যে বেদে নারী ও শুদ্রদের অধিকার নেই!!!
এই জঘন্য ও মানবতা বিরোধী,নারীবিদ্বেষী প্রথার কারনে হিন্দু সমাজের যে ক্ষতি ইতিহাসে হয়েছে তা অপূরণীয়।কত সহস্র মহৎপ্রাণ হিন্দু ধর্মালম্বী যে এই অত্যাচারে,দুঃখে ধর্মান্তরিত হয়েছেন তার সাক্ষী মধ্যযুগের ইতিহাস।আজ এই বেদবিরোধী অপপ্রথার মূলরহস্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।
আমরা সকলেই জানি যে সুবিখ্যাত মহর্ষি ব্যাসদেব ঐতিহাসিক গ্রন্থ মহাভারত রচনা করেন।পরবর্তীকালে রচিত পুরাণ নামক শাস্ত্রনামধারী বইসমূহও তিনি লিখেছেন বলে প্রচার করা হয়ে থাকে।এর মধ্যেই উল্লেখযোগ্য একটি হল ভাগবত পুরাণ বা ভাগবতাম।এর অত্যন্ত পরিচিত একটি শ্লোক হল-
স্ত্রী শুদ্র দ্বিজবন্ধুনাম
ত্রয়ী ন শ্রুতি গোচরা
কর্ম শ্রেয়সী মুধানাং শ্রেয় এবং ভবেদ ইহ
ইতি ভারতং আখ্যানাং
কৃপয়া মুণিনা কৃতং
(ভাগবত পুরাণ ১.৪.২৪)
অর্থাৎ স্ত্রী,শুদ্র ও দ্বিজবন্ধু(অর্থাৎ যে সমস্ত ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয় বা বৈশ্য বংশজাত ব্যাক্তি বিপথগামী) এই তিনশ্রেণী বেদপাঠ ও শ্রবণের অধিকারী নয়।তাই এদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে এদের শিক্ষার জন্য ব্যাসদেব মহাভারত রচনা করলেন!!!
এখন এই পুরাণের লেখক যদি ব্যাসদেব হন তাহলে মহাভারতেও তিনি একই কথা ই বলতেন কেননা এক ই ব্যাক্তি দুই রকম সাংঘর্ষিক কথা বলতে পারেন না!
কিন্তু দেখুন ব্যাসদেব মহাভারতে কি বলেছেন-
ভবন্তো বহুলাঃ সন্ত বেদো বিস্তার্য্যতাময়ম্।
শ্রাবয়েচ্চতুরো বর্ণান্ কৃত্বা ব্রাহ্মণমগ্রতঃ ।।
অর্থাৎ এই পবিত্র বেদ জ্ঞান গুরু-শিষ্য পরম্পরায় যুগ যুগ সঞ্চারিত হোক।ব্রাহ্মণরা সকল কিছুর অগ্রে বেদচর্চা করলেও চারবর্ণের লোকেরাও সকলে বেদচর্চা করুক!!!
তাহলে কিভাবে প্রথম শ্লোকটি ব্যাসদেব কর্তৃক লিখিত হয়?অন্ধবিশ্বাস ব্যাতীত এর ব্যখ্যা নেই!
আমরা এই বিষয়ে সকলেই অবগত যে পবিত্র বেদ ঈশ্বরের কর্তৃক প্রদত্ত মহান ঋষিগণের ধ্যানপ্রাপ্ত পবিত্র জ্ঞান।এই ঋষিদের মধ্যে কমপক্ষে ২৭ জন ছিল নারী ঋষিকাগণ।এদের মধ্যে রোমশ,লোপামুদ্রা,বাক্,অপালা,কাদ্রু,বিশ্ববারা,ঘোষা,জুহু,ভগম্ভ্রিনি,পৌলমি,যমী,ইন্দ্রাণী,সাবিত্রী,দেবযানী,নোধা,গৌপায়না,অম্ভৃনী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।এখন নারীদের যদি বেদপাঠে অধিকার ই না থাকে তাহলে তাঁরা বেদের মন্ত্রদ্রষ্টা হলেন কি করে!!!
অথর্ববেদ ঘোষণা করেছে,
“ব্রহ্মচর্যেন কন্যা যুবানং বিন্দতে পতিম্।”
(অথর্ববেদ ১১.৫.১৮)
অর্থাত্ ঠিক যেমন যুবক ব্রহ্মচর্য শেষ করে বিদুষী কন্যাকে বিয়ে করবে ঠিক তেমনি একজন যুবতীও ব্রহ্মচর্য শেষ করে পছন্দমত বিদ্বান যুবককে স্বামী হিসেবে গ্রহন করবে।
পাণিনি তার সংস্কৃত ব্যকরন শাস্ত্রে ছাত্রীদের ব্রহ্মচর্যের প্রতিষ্ঠান ছাত্রীশালা ও এর মহিলা অধ্যাপক আচার্যনি এর উল্লেখ করেছেন-
“মাতুলাচার্যাণামানুক্ত” -পাণিনি ৪.১.৪৬
এবং “ছাস্যাদযঃ ছাত্রীশালাযাম্” -পাণিনি ৬.২.৭৬
ব্রহ্মচারিনী ছাত্রীদের নারী শিক্ষক উপদেষ্টির উল্লেখ পাওয়া যায় ঋগ্বেদ ১.৩.১১,১০.১৫৬.২ প্রভৃতিতে।
“চেতন্তি সুমতিনাম যজ্ঞম দধে সরস্বতী” -ঋগ্বেদ ১.৩.১১
এখানে নারী শিক্ষিকাকে জ্ঞানদাত্রী ও প্রেরনাদাত্রীরুপে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
ঋষি বিশ্ববারাকে দেখা যায় পবিত্র ঋগ্বেদে তিনি বেদমন্ত্র উচ্চারণ পূর্বক পূর্বমুখী হয়ে হোমযজ্ঞ করছেন।বেদের অনেক সুক্তে প্রিয় যজ্ঞবিশিষ্ট দম্পতিদের মন্ত্র উচ্চারণের কথা বলা হয়েছে।
স্বামী-স্ত্রীর একত্রে যজ্ঞ করা,মন্ত্রপাঠে স্তব উচ্চারণের ভূরি ভূরি উদাহরণ রয়েছে পবিত্র বেদে-
যা দম্পতি স মনসা সুনুত আ চ ধাবতঃ
(ঋগ্বেদ ৮.৩১.৫)
রিতিহোত্রা কৃতদ্বসু দশস্যান্তামৃতায় কম্
(৮.৩১.৯)
এরপরেও কি মেয়েদের শাস্ত্রপাঠের,বেদপাঠের অধিকার নিয়ে পৌরাণিক ধর্মধ্বজীদের বাগাড়ম্বর শোনার প্রয়োজন আছে কি?
মনে আছে রামায়ণে যখন শ্রীরাম তাঁর বনবাসের খবর নিয়ে কৌশল্যার গৃহে গেলেন তখন কৌশল্যা কি করছিলেন?
“ অগ্নিং জুহোতি স্ম তদা মন্ত্রবৎ কৃতমঙ্গলা”
অর্থাৎ মন্ত্রোচ্চারণ পূর্বক অগ্নিহোত্র করছিলেন।
প্রাচীন স্মৃতিশাস্ত্র যমসংহিতা বর্ণনা করেছে কিভাবে প্রাচীনকালে “মেয়েদের ও উপনয়ন হত,পৈতা পড়ত!”
শতপথ ব্রাহ্মণ বলছে,
“অধ্যাপনঞ্চ বেদানাং সাবিত্রীবচনং তথা…” অর্থাৎ শুধু পড়া ই নয় বরং ওই সময় নারী জ্ঞানীগণ বেদ অধ্যাপনার কাজ ও করতেন!নারী ব্রহ্মচারীগণ মূলত নারী শিক্ষিকাগণের নিকট ই গুরুকুলে পড়াশোনা পড়াশোনা করতেন।
উত্তররামচরিতমানস এর ২.৩ এ পাওয়া যায় ঋষিনী অত্রেয়ী বলছেন,
“এই অঞ্চলে অগস্ত্যসহ অনেক বিখ্যাত মহর্ষি আছেন।আমি মহর্ষি বাল্মীকির আশ্রম থেকে এখানে এসেছি তাঁদের কাছ থেকে বেদ অধ্যয়ন করতে।”
এর চেয়ে সুস্পষ্ট প্রমান আর কি হতে পারে বৈদিক শাস্ত্রে নারীদের উপনয়ন তথা ব্রহ্মচর্য পালনের?
আর যখন ই ভণ্ড ধর্মব্যাবসায়ীরা পৌরাণিক যুগ এর সূচনা করল তখন ই এসব অপপ্রথা হিন্দু সমাজে প্রবেশ করল।এসব ভণ্ডদের চিনিয়ে দিতেই যুধিষ্ঠির মহাভারতের অনুশাসন পর্বের অষ্টাদশ অধ্যায়ে বলেছিলেন,
“ধূর্তৈঃ প্রবর্তিতং হ্যেতন্নৈতদ্ বেদেষু কল্পিতম…”
অর্থাৎ বেদে পশুবলি,বেদে শুদ্রদের অনধিকার,বর্ণপ্রথা এসব কিছুই নেই,এই সব ই ধূর্তদের সৃষ্টি।
এজন্যই যেসকল ধর্মীয় সংগঠন বা গুরু-প্রভু রুপধারী ভণ্ডরা যারা বলে বেদে,শাস্ত্রে নারীদের অধিকার নেই,শুদ্রদের অধিকার নেই,কলিতে সকলেই শুদ্র তাই কলির জীবের বেদে অধিকার নেই এদেরকে ভণ্ডামির দায়ে সমাজচ্যুত করা উচিৎ।
বেদের চিরন্তন সত্য পৌঁছে দিন সকলের মাঝে!

সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা (নিয়মিত পর্ব-১)

অনেক কুচক্রি প্রচারকরা কুধর্মের নামে বলে থাকেন 'সনাতন ধর্মে' নারীদের মর্যাদা দেওয়া হয়নি! তাদের উদ্দেশ্য হল কোমল মনা নারীদের বিভ্রান্ত করে বিপথগামী করানো। আমরা বেদ-গীতা-উপনিষদ-পুরাণ-ইতিহাস-মনুসংহিতা থেকে কিছু শ্লোক এবং অনুবাদ আপনাদের জন্য নিয়মিত পোষ্ট করব। তাতে আপনারা জানতে পারবেন সনাতন ধর্মে নারীদের স্থান কত উপরে। সনাতন ধর্মে যেভাবে নারী শক্তির পুজা করা হয় এমত দর্শন আর কোন ধর্মে আছে?

Thursday, April 20, 2017

অধ্যাত্মবিজ্ঞান/ অধ্যাত্মতত্ত্ব কেন গোপনীয়?

যুগধৰ্ম অনুসারে মানবদেহ যেভাবে স্থূলত্বে পরিণত হয়ে বিভিন্ন চৰ্ম্মাবৃত হয় এবং যেরূপ তাকে তাঁহার তৃতীয় নয়ন ক্রমশঃ অপগত হতে থাকে, তাঁহার আধ্যাত্মিকতা সেই পরিমাণে হ্রাস প্রাপ্ত হয় এবং সেই সঙ্গে অধ্যাত্মবিজ্ঞানও মানবসমাজে গুপ্ত হয়ে যায়। এজন্য গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেন—
“স কালেন মহতা যোগোনষ্টঃ পরন্তপ।”
“হে অৰ্জুন! সেই যোগ বহুকালে নষ্ট হয়ে যায়।” মানবসমাজে তা ক্রমশঃ লুপ্ত হয় বটে; কিন্তু কোন কোন দেশে যোগেশ্বর মহাত্মাগণ, এ শাস্ত্র চিরদিন অনুশীলন করেন, যেমন ভারতবর্ষ, তিব্বৎ প্রভৃতিদেশ এবং কোন কোন দেশে মন্দিরের গুপ্তদীক্ষায় এ শাস্ত্র দীক্ষিত হয়, যেমন- গ্ৰীসদেশ। জনসাধারণ এ শাস্ত্রের বিষয় অবগত হলে, যোগের অষ্ট সিদ্ধিলাভের জন্য অতীব ব্যগ্র হয়। এতে কলিকালে মানবসমাজের প্রভূত, অনিষ্ট উৎপত্তি হওয়ার সম্ভাবনা; এজন্য মহাত্মাগণ যুগধৰ্ম্মে বাধ্য হয়ে অধ্যাত্মবিজ্ঞান সাধারণ মানবমণ্ডলীর ভিতর গোপন করেন। তাঁহারা নিভৃত স্থানে বা গিরিগহবরে থেকে এ স্বৰ্গীয় শাস্ত্র অনুশীলন করেন। অধ্যয়ন দ্বারা এ. শাস্ত্রে ব্যুৎপত্তিলাভ হয় না। সদগুরুর কৃপা ব্যতীত ও যোগাভ্যাস ব্যতীত, এ শাস্ত্রে, কারও প্রবেশাধিকার নাই। যাঁহার আধ্যাত্মিকতা যেরূপ স্ফুরিত, অধ্যাত্মবিজ্ঞান তাঁহার সেরূপ আয়ত্ত। এ শাস্ত্র আয়ত্ত করা, কলিকলুষিত আমাদের দুঃসাধ্য। কোন মহাত্মাকে এ পাপনয়নে দর্শন করি নাই বা কোন মহাত্মার সদুপদেশ এ পাপকর্ণে শ্রবণ করি নাই, কেমন করিয়া সেই স্বর্গীয় অধ্যাত্মবিজ্ঞানের বিষয় অবগত হব!