Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Saturday, April 1, 2017

পবিত্র বেদবাক্য

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন- জীবনের উদ্দেশ্য কি ?
উওর - জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সেই চেতনাকে জাগ্রত করা - যেটা জন্ম এবং মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত আছে । সেটাকে জানাই হচ্ছে মোক্ষ..!!
প্রশ্ন- জন্ম আর মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত কে ?
উওর - যিনি স্বয়ং নিজে ঐ আত্মাকে জেনে ফেলেছেন , তিনিই জন্ম ও মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছেন ।
প্রশ্ন - সংসারে দুঃখ কেন আছে ?
উওর - লোভ , স্বার্থ আর ভয়ই সংসারে দুঃখের মুখ্য কারন ।
প্রশ্ন - ঈশ্বর কি দুঃখের রচনা করেছেন ?
উওর - ঈশ্বর সংসার রচনা করেছেন আর মনুষ্য নিজের বিচার আর কর্মের দ্বারাই দুঃখ আর সুখের রচনা করেছেন ।
প্রশ্ন - ঈশ্বর কি আছেন ? কে উনি ?
উওর - কারন ছাড়া কার্য হয় না । এই সংসার ঐ কারনেরই অস্তিত্বের প্রমান । তুমি আছো আর সেইজন্যই তিনিও আছেন । ঐ মহান কারনেকেই আধ্যাত্মের ভাষায় ' ঈশ্বর ' বলা হয়ে থাকে ।
প্রশ্ন - এই জগতে সবচেয়ে বড় আশ্চর্য কি ?
উওর - রোজ হাজারো লোকের মৃত্যু হচ্ছে এবং এটা সবাই দেখছে , তথাপি সবাই অনন্তকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে - এরচেয়ে বড় আশ্চর্যের আর কি হতে পারে ।
প্রশ্ন - ভাগ্য কি ?
উওর - প্রত্যেক ক্রিয়া , প্রত্যেক কার্যের ই একটি পরিনাম থাকে । পরিনাম ভালও হতে পারে আবার খারাপও হতে পারে । এই পরিনামই হচ্ছে ভাগ্য তথা আজকের প্রযত্নই কালকের ভাগ্য ।
প্রশ্ন - কোন জিনিষকে হারিয়ে মানুষ ধনী হতে পারে ?
উওর - লোভ ।
প্রশ্ন - জীবনে সুখী থাকার উপায় কি ?
উওর - ভাল স্বভাব ।
প্রশ্ন - কোন জিনিষ হারিয়ে গেলে দুঃখ হয় না ?
উওর - ক্রোধ ।
প্রশ্ন - ধর্ম ছাড়া এই সংসারে আরেকটি মূল্যবান জিনিষ কি ?
উওর - দয়া ।
প্রশ্ন - কোন জিনিষ অপরকে দেওয়া উচিৎ নয় ?
উওর - কষ্ট ও বিশ্বাসঘাতকতা ।
প্রশ্ন - কোন জিনিষ জীবকে সবকিছু করতে বাধ্য করায় ?
উওর - নিরুপায় বা মজবুরি ।
প্রশ্ন - এই দুনিয়ার সবচেয়ে অপরাজিত জিনিষ কোনটি ?
উওর - সত্য ।
প্রশ্ন - সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক কার্য কোনটি ?
উওর - পরোপকার ।
প্রশ্ন - দুনিয়ার সবচেয়ে স্বর্গীয় স্বপ্ন কি ?
উওর - জীবের বেঁচে থাকার স্বপ্ন ।
প্রশ্ন - দুনিয়ার সবচেয়ে অপরিবর্তনীয় জিনিষ কোনটি ?
উওর - মৃত্যু ।
প্রশ্ন - কোন জিনিষ জীব স্বয়ং বুঝতে পারেনা ?
উওর - নিজের মুর্খতা ।
প্রশ্ন - দুনিয়ার কোন জিনিষ কখনো নষ্ট হয় না ?
উওর - আত্মা ও জ্ঞান ।
প্রশ্ন - দুনিয়ার কোন জিনিষ কখনো থেমে থাকেনা ?
উওর - সময় ।

Friday, March 31, 2017

রাম ঠাকুরের কথা

গর্বের সাথে বলুন "আমি হিন্দু"

বিশ্বে ২৫০ কোটি খ্রীষ্টানের জন্য ৭০ টিরও বেশি সাংবিধানিকভাবে খ্রীষ্টান দেশ রয়েছে।
.
১৫০ কোটি মুসলিমের জন্য ৫০ টিরও বেশি সাংবিধানিকভাবে ইসলামিক দেশ রয়েছে।
.
কয়েক কোটি বৌদ্ধদেরও সাংবিধানিকভাবে বৌদ্ধ দেশ রয়েছে।
.
দুই কোটি ইহুদি।আর তারও রয়েছে ক্ষমতাধর ইহুদিরাষ্ট্র ইসরায়েল।
.
আর ১২০ কোটি হিন্দুর???????
.
হা হা হা। এ জাতি তো বেশি মানবতাবাদী। এদের কাছে সব ধর্ম সমান (!)। তাইতো ১০০ কোটি হিন্দুর ভারতের সংবিধানে "ধর্মনিরপেক্ষতা"। যেখানে বাংলাদেশে মাত্র ১৫ কোটি মুসলিম থাকা সত্ত্বেও "রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম"।
.
হিমালয়কন্যা নেপাল নামে একটামাত্র দেশ ছিলো বিশ্বের হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে।আরে ভাই হিন্দুর কাছে সব ধর্ম সমান।তাই বছর খানেক হলো সীতার জন্মস্থান হিমালয়কন্যা নেপালের সংবিধান থেকে বাদ দেয়া হলো রাষ্ট্রধর্ম।
.
যেখানে ইসলামি তীর্থস্থান সৌদি আরবে হিন্দুধর্ম তথা অন্য সব ধর্ম পালন নিষিদ্ধ। ইসলাম ছাড়া অন্যধর্ম পালনকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড;
.
সেখানে আর্যভূমি মহা "ভারত" কৃষ্ণজন্মভূমি মথুরার কৃষ্ণ মন্দিরের পাশে শোভা পায় মসজিদ। এরকম হাজারটা নিদর্শন রয়েছে সারা ভারতে।অথচ মক্কা তথা আরব যতটা পবিত্র মুসলিমদের নিকট; মথুরা-বৃন্দাবন তথা ভারতও ততটাই পবিত্র হিন্দুদের নিকট।
.
নেপালের হিন্দুরা তো দেশকে সবার জন্য ধর্মনিরপেক্ষ করে দিলো; আর ভারত তো অনেক আগেই করে দিয়েছে।১২০ কোটি হিন্দুর আজ কোন দেশ নেই।কিন্তু পারবেন কি ৫০+ ইসলামিক দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ করতে? পারবেন ৭০+ খ্রীষ্টান দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ করতে?
.
বেশি দূর না, এই বাংলাদেশটার সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম বাদ দিয়ে প্রমাণ করুন না সব ধর্ম সমান।পারবেন না।কারণ আগুন জ্বলে যাবে। কিন্তু ১২০ কোটি হিন্দু কিন্তু নিজ দুটো দেশ সবার জন্য করে দিলো।
.
তবুও দিনশেষে হিন্দু হচ্ছে আপনার নিকট মালাউন কাফের।
.
হায়রে মানবতা।যেখানে তারা গায় ঐ নির্দিষ্ট ধর্ম সত্য আর বাকি সব মিথ্যা সেখানে বোকা হিন্দু জাতি আজো সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের গান গেয়ে যায়।
.
নিজের ভালো তো পাগলেও বোঝে।সব ধর্ম কখনোই সমান না।সনাতন ধর্মই পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম যা সবাইকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে। সনাতন হচ্ছে মানবধর্ম।কারণ সনাতন হিংসা, যুদ্ধ, হানাহানি আর রক্তপাতের শিক্ষা দেয় না।অতএব যারা মানবতার সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম সনাতনে জন্মগ্রহণ করেও নিজেকে সনাতনী বা হিন্দু বলে পরিচয় দিতে দ্বিধাবোধ করেন, তারা সত্যিই অভাগা।
.
গর্বের সাথে মাথা উঁচু করে বিশ্বদরবারে বলুন আমি গর্বিত আমি হিন্দু; আমি গর্বিত আমি পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম মানবধর্ম সনাতনের অনুসারী।
(পোস্টটি শেয়ার করে সবাইকে সচেতন করুন)

রাধারাণীর জিজ্ঞাসা

=>শ্রীমতি রাধারাণী একদিন গোবিন্দকে জিজ্ঞাসা করলেন গোবিন্দ তোমাকে সবাই চোর বলে কেন ?
গোবিন্দ বললেন -রাধে আমি সত্যিই চোর,তাই সবাই আমাকে চোরা বলে।
রাধারাণী জিজ্ঞাসা করিলেন --তুমি কি কি চুরি করো গোবিন্দ ?
গোবিন্দ বললেন--তাহলে শোন,আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন সবার মন চুরি করতাম, যখন একটু বড় হয়েছি তখন আমি ননি চুরি করতাম, আরেকটু বড় হয়ে আমি গোপীদের বস্ত্র চুরি করতাম, তারপর আমি ভক্তদের ভক্তিতে এমন হয়ে গেলাম যে এখন নতুন একটি চুরি শুরু করেছি ।
রাধারাণী বললেন=>কেমন চুরি গোবিন্দ ?
শ্রীকৃষ্ণ খুবই সুন্দর করে উত্তর দিলেন; আজ কাল আমি ভক্তদের পাপ চুরি করি ।
রাধারাণী বললেন=>কোথায় তোমার ভক্ত ?
গোবিন্দ আস্তে করে বললেন, তাহলে শোন আমাকে ভক্তি করে ভালবেসে যে এই পোস্টটি শেয়ার করছে, তারা সবাই আমার ভক্ত।
বুঝেছ #রাধে।।

তন্ত্র বা শক্তি সাধনার সাথে বাউলের দেহতত্ত, কৃষ্ণপ্রেম..

তন্ত্র বা শক্তি সাধনার সাথে বাউলের দেহতত্ত, কৃষ্ণপ্রেম ইত্যাদি জুড়ে আছে সমান ভাবে....
বৈষ্ণব গুরুদের ভাষ্য গুলো থেকে মোটামুটি যা তথ্য আসে তার কিছু লিখছি এখানে -
১। কৃষ্ণের বাঁশির ৬ টা গর্ত আসলে ৬ টা চক্রের প্রতীক .....
.....দেহসৃষ্টির সুর - মুলাধার, স্বাধিষ্ঠান, মনিপুর, অনাহত, বিশুদ্ধ এবং আজ্ঞা চক্র....
-
২। ত্রি ভঙ্গ মুরারী কৃষ্ণ আসলে ত্রিগুনাতীত.....
-
৩। কৃষ্ণ সচ্চিদানন্দ - পরম শুন্যতার মুর্তি, তাই কালো.....
-
৪। গোপিনী রা আসলে নাড়ির প্রতীক.........
...... রাধা হলেন গোপিনীদের প্রধান, সুষুন্মা.......
-
৫। শরীরে ৭২০০০ নাড়ির মধ্যে ১৬০০০ নাড়ি গুরুত্বপুর্ণ ....
........এরাই কৃষ্ণের ১৬০০০ গোপিনী ......
-
৬। সাধকের শরীরেই চলে কৃষ্ণলীলা.......
........সাধক মতে বায়ু দু-রকমের......
...........প্রান বায়ু যা কুলকুন্ডলীনিকে ওপরে তোলে আর অপান বায়ু যা নীচে নামায়........
............একটির প্রতীক হলো ...'রা' অন্যটি '....ধা' .......
..............শরীরের মধ্যে অহরহ চলছে রাধা নাম........
................সাধক যখন রাধাতত্তকে ভেদ করতে পারে তখন সুক্ষশরীর বা পরম শুন্যতার জন্ম হয়
......সেটাই কৃষ্ণ দশা
..............শরীরের সব নাড়ি তখন সাধকের কৃষ্ণ শরীরমুখি
.....................সেটাই তো রাসযাত্রা কৃষ্ণের .......
........................যখন সব গোপীনিরা কৃষ্ণের সাথে নাচছে........
-
৭। পিঙ্গলা নাড়িকে বলা হয় যমুনা .......
........ কৃষ্ণলীলা হয় যমুনা তীরে...........
............তার তীরের গোপীনিদের বস্ত্রহরন......বাসনা, কামনার পাশ খুলে ফেলা......
...............নাড়ি গুলোকে পাশ মুক্ত করা.......
..................এখানেই কালীয় দমন .....অর্থাৎ কুন্ডলীনির সর্পকে আয়ত্বে আনা......

চৈতন্য ভগবৎ ১/১

পবিত্র বেদবাক্য

দীক্ষা ও দীক্ষামন্ত্র কি……….?

মানব জীবনের একমাত্র পরম উদ্দেশ্য ঈশ্বর প্রাপ্তি৤ দীক্ষা অর্থ দৃষ্টি দান বা ঈশ্বরকে দেখার শক্তি দান করা৤ আর দীক্ষামন্ত্র হল শক্তির বীজ যে বীজ অংকুরোদগমের মাধ্যমে সেই ঈশ্বর প্রাপ্তি শক্তির সৃষ্টি হয়ে থাকে৤ সংসারের মায়া জালে আবদ্ধ মানবদৃষ্টি দীক্ষামন্ত্রের দ্বারা উন্মোচিত হয় ঈশ্বর দর্শনে।

সনাতন ধর্ম কি গ্রহণ করা যায়?

★★★সনাতন ধর্ম কি গ্রহণ করা যায়?
হিন্দুধর্ম গ্রহন করার ঘোষনা চতুর্থ শতাব্দীতে ঋষি দেবলের ডাকে অভিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশে সমসাময়িক ঋষিদের নিয়ে সিন্ধু তীরবর্তী অঞ্চলে এক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এই সম্মেলনেই হিন্দুধর্ম গ্রহণ করার পদ্ধতি প্রথম প্রকাশ করা হয়।
=>হিন্দুধর্ম গ্রহণ করার জন্য পবিত্র বেদের মন্ত্র--
ঋগ্বেদ, ৯/৬৩/৫
হে মনুষ্যগণ তোমরা ঈশ্বরের মহিমাকে বৃদ্ধি কর, সমগ্র বিশ্বকে আর্যধর্মে দীক্ষিত কর'।
★★★কিভাবে হিন্দুধর্ম গ্রহন করা যায়?
শুদ্ধি যজ্ঞ এর মাধ্যমে যেই কেউ হিন্দুধর্ম গ্রহন করতে পারে।
★★★কিভাবে এই যজ্ঞ করা হয়?
ঋষি দেবলের "দেবল স্মৃতি' নামক শাস্রীয় গ্রন্থে শুদ্ধি যজ্ঞ এর মন্ত্র ও প্রক্রিয়া লিপিবদ্ধ আছে। সেই অনুযায়ী মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে শুদ্ধি যজ্ঞ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহন করা যায়।
★★★কারা হিন্দুধর্ম গ্রহন করতে পারে?
যে কোনো ধর্মের, যে কেউ চাইলেই হিন্দুধর্ম গ্রহন করতে পারে।
★★★বর্তমানে সারা বিশ্বে কারা হিন্দুধর্ম প্রচার করছে?
=>শ্রী শ্রী রবীশংকর
=>শ্রীমতি অমৃতানন্দময়ী দেবী
=>ভারতীয় আর্য সমাজ
=>ইস্কন
=>ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ
=>স্বামী নারায়ণ সংস্থা
=>বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, শিবসেনা, বজরং, BJP
রাশিয়ান, ইউরোপিয়ান, আমেরিকান ও আফ্রিকান হিন্দু সংঘঠন সহ আরো অসংখ্য ধর্মীয় প্রতিস্টান।
ধারনা করা হয় সারা বিশ্বে এই পর্যন্ত প্রায় তিন কোটি অহিন্দু হিন্দু ধর্মে দিক্ষিত হয়েছে।

Thursday, March 30, 2017

পবিত্র বেদবাক্য

হৃদয়গ্রন্থি কী?

মৃত্যু কি সবার জন্য অনিবার্য ?

উত্তরঃ- হ্যাঁ, অবশ্যই মৃত্যু সবার জন্যেই অনিবার্য। শ্রীমদ্ভগবতগীতা (২য় অধ্যায় ২৭ নং শ্লোক) পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অজুর্নকে বলেছিলেন ,
“জাতস্য হি ধ্রুবো মৃত্যুর্ধ্রুবং জন্ম মৃতস্য চ ।
তস্মাদপরিহার্যেহর্থে স ত্বং শোচিতুমর্হসি।।”
অর্থাৎ যার জন্ম হয়েছে তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী এবং যার মৃত্যু হয়েছে তার জন্মও অবশ্যম্ভাবী। অতএব অপরিহার্য কর্তব্য সম্পাদন করার সময় তোমার শোক করা উচিত নয় ।
পূর্বকৃত কর্ম অনুসারে কোন বিশেষ দেহ প্রাপ্ত হয়ে আত্মা জন্মগ্রহন করে । আর সেই দেহের মাধ্যমে কিছুকাল জড় জগতে অবস্থান করার পর সেই দেহ বিনাশ হয় এবং তার কর্মের ফল অনুযায়ী সে আবার আরেকটি নতুন দেহ ধারন করে জন্মগ্রহণ করে। এভাবেই আত্মা জড়বন্ধন থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত জন্ম-মৃত্যুর চক্রে আবর্তিত হতে থাকে। সে যাই হোক এই জন্ম-মৃত্যুর চক্র অনর্থক যুদ্ধ, হত্যা ও হিংসাকে কোনো প্রকারেই অনুমোদন করে না। কিন্তু তবুও মানব সমাজের নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য হিংসা , হত্যা ,ও যুদ্ধ অপরিহার্য হয়ে পড়ে এবং তা যখন সমাজের মঙ্গলের জন্য সাধিত হয়,তখন তা সম্পূর্ন ন্যায়সঙ্গত।
কেউই মৃত্যুকে এড়াতে পারেনা। প্রত্যেক জীবের জন্য মৃত্যু অনিবার্য। যিনি জন্মগ্রহণ করেছেন তাকে মরতেই হবে , হতে পারে সে কীটপতঙ্গ, মানব অথবা কোনো দেবতা, তাতে কিছু আসে যায় না। পৃথিবীতে নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন বির্তক হয় এবং মতের মধ্যেও অনেক ভিন্নতা দেখা যায় । তবে মৃত্যু নিয়ে কোন তর্ক খাটে না। সবাই এ বিষয়ে একমত যে, প্রত্যেককেই মৃত্যুর মুখে পতিত হতে হবে। এ কারনে প্রায়ই বলতে শোনা যায়, ‘মৃত্যুর মতো সুনিশ্চিত'।

Wednesday, March 29, 2017

চৈতন্য চরিতামৃত আদি ১/৫

পবিত্র বেদবাক্য

শ্রীমদ্ভগবদগীতা অঃ৫/শঃ৫

গীতার সারাংশঃ--(অধ্যায় অনুসারে)

★বিষাদ-যোগঃ- রণাঙ্গনে প্রতীক্ষমাণ সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়ে, মহাযোদ্ধা অর্জুন উভয় পক্ষের সৈন্যসজ্জার মধ্যে সমবেত তাঁর অতি নিকট অন্তরঙ্গ আত্মীয়-পরিজন, আচার্যবর্গ ও বন্ধু-বান্ধব সকলকে যুদ্ধে প্রস্তুত হতে এবং জীবন বিসর্জনে উন্মুখ হয়ে থাকতে দেখেন। শোকে ও দুঃখে কাতর হয়ে অর্জুন শক্তিহীন হলেন, তাঁর মন মোহাচ্ছন্ন হল এবং তিনি যুদ্ধ করার সংকল্প পরিত্যাগ করেন।
★সাংখ্য-যোগঃ- পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে তার শিষ্যরূপে অর্জুন আত্মসমর্পণ করেন এবং অনিত্য জড় দেহ ও শাশ্বত চিন্ময় আত্মার মূলগত পার্থক্য নির্ণয়ের মাধ্যমে অর্জুনকে শ্রীকৃষ্ণ উপদেশ প্রদান করতে শুরু করেন। দেহান্তর প্রক্রিয়া, পরমেশ্বরের উদ্দেশ্যে নিঃস্বার্থ সেবার প্রকৃতি এবং আত্মজ্ঞানলব্ধ মানুষের বৈশিষ্ট্যাদি সম্পর্কে শ্রীকৃষ্ণ ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন।
★কর্মযোগ- এই জড় জগতে প্রত্যেককেই কোনও ধরণের কাজে নিযুক্ত থাকতে হয়। কিন্তু কর্ম সকল মানুষকে এই জগতের বন্ধনে আবদ্ধ করতেও পারে, আবার তা থেকে মুক্ত করে দিতেও পারে। স্বার্থচিন্তা ব্যতিরেকে, পরমেশ্বরের সন্তুষ্টি বিধানের উদ্দেশ্যে কাজের মাধ্যমে, মানুষ তাঁর কাজের প্রতিক্রিয়া জনিত কর্মফলের বিধিনিয়ম থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং আত্মতত্ত্ব ও পরমতত্ত্ব দিব্যজ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়।
★জ্ঞানযোগঃ- আত্মার চিন্ময় তত্ত্ব, ভগবৎ-তত্ত্ব এবং ভগবান ও আত্মার সম্পরক-এই সব অপ্রাকৃত তত্ত্বজ্ঞান বিশুদ্ধ ও মুক্তিপ্রদায়ী। এই প্রকার জ্ঞান হচ্ছে নিঃস্বার্থ ভক্তিমূলক কর্মের (কর্মযোগ) ফলস্বরূপ। পরমেশ্বর ভগবান গীতার সুদীর্ঘ ইতিহাস, জড় জগতে যুগে যুগে তাঁর অবতরণের উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য এবং আত্মজ্ঞানলব্ধ গুরুর সান্নিধ্য মাভের আবশ্যকতা ব্যাখ্যা করেছেন।
★কর্মসন্ন্যাস-যোগঃ- বহিঃবিচারে সকল কর্তব্যকর্ম সাধন করলেও সেগুলির কর্মফল পরিত্যাগ করার মাধ্যমে, জ্ঞানবান ব্যক্তি পারমার্থিক জ্ঞানতত্ত্বের অগ্নিস্পর্শে পরিশুদ্ধি লাভ করে থাকেন, ফলে শান্তি, নিরাসক্তি, সহনশীলতা, চিন্ময় অন্তর্দৃষ্টি এবং শুদ্ধ আনন্দ লাভ করেন।
★ধ্যানযোগঃ- নিয়মতান্ত্রিক ধ্যানচর্চার মাধ্যমে অষ্টাঙ্গযোগ অনুশীলন মন ও ইন্দ্রিয় আদি দমন করে এবং অন্তর্যামী পরমাত্মার চিন্তায় মনকে নিবিষ্ট রাখে।এই অনুশীলনের পরিণামে পরমেশ্বরের পূর্ণ ভাবনারূপ সমাধি অর্জিত হয়।
★বিজ্ঞান-যোগঃ- পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমতত্ত্ব, সর্বকারণের পরম কারণ এবং জড় ও চিন্ময় সর্ববিষয়ের প্রাণশক্তি। উন্নত জীবাত্মাগণ ভক্তি ভরে তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করে থাকেন, পক্ষান্তরে অধার্মিক জীবাত্মারা অন্যান্য বিষয়ের ভজনায় তাদের মন বিক্ষিপ্ত করে থাকে।
★অক্ষরব্রহ্ম-যোগঃ- আজীবন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চিন্তার মাধ্যমে এবং বিশেষ করে মৃত্যুকালে তাঁকে স্মরণ করে, মানুষ জড় জগতের ঊর্ধ্বে ভগবানের পরম ধাম লাভ করতে পারে।
★রাজগুহ্য-যোগঃ- শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান এবং পরমারাধ্য বিষয়। অপ্রাকৃত ভগবত-সেবার মাধ্যমে জীবাত্মা মাত্রই তাঁর সাথে নিত্য সম্বন্ধযুক্ত। মানুষের শুদ্ধ ভক্তি পুনরুজ্জীবিত করার ফলে শ্রীকৃষ্ণের পরম ধামে প্রত্যাবর্তন করা সম্ভব।
★বিভূতি-যোগঃ- জড় জগতের বা চিন্ময় জগতের শৌর্য, শ্রী, আড়ম্বর, উতকরশ-সমস্ত ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয় শ্রীকৃষ্ণের দিব্য শক্তি ও পরম ঐশ্বর্যাবলীর আংশিক প্রকাশ মাত্র অভিব্যক্ত হয়ে আছে। সর্বকারণের পরম কারণ, সর্ববিষয়ের আশ্রয় ও সারাতিসার রূপে শ্রীকৃষ্ণ সর্বজীবেরই পরমারাধ্য বিষয়।
★বিশ্বরূপ-দর্শন-যোগঃ- পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে দিব্যদৃষ্টি দান করেন এবং সর্বসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষক তাঁর অনন্ত বিশ্বরূপ প্রকাশ করেন। এভাবেই তিনি তাঁর দিব্যতত্ত্ব অবিসংবাদিতভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। শ্রীকৃষ্ণ প্রতিপন্ন করেছেন যে, তাঁর স্বীয় অপরূপ সৌন্দর্যময় মানবরূপী আকৃতিই ভগবানের আদিরূপ। একমাত্র শুদ্ধ ভগবত-সেবার মাধ্যমেই মানুষ এই রূপের উপলব্ধি অর্জনে সক্ষম।
★ভক্তিযোগঃ- চিম্নয় জগতের সর্বোত্তম প্রাপ্তি বিশুদ্ধ কৃষ্ণপ্রেম লাভের পক্ষে ভক্তিযোগ বা শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্য শুদ্ধ ভক্তি হচ্ছে সর্বোত্তম পন্থা। যারা এই পরম পন্থার বিকাশ সাধনে নিয়োজিত থাকেন, তাঁরা দিব্য গুণাবলীর অধিকারী হন।
★প্রকৃতি-পুরুষ-বিবেকযোগঃ- দেহ, আত্মা এবং উভয়েরও ঊর্ধ্বে পরমাত্মার পার্থক্য যিনি উপলব্ধি করতে পারেন, তিনিই এই জড় জগৎ থেকে মুক্তি লাভে সক্ষম হন।
★গুনত্রয়-বিভাগ-যোগঃ- সমস্ত দেহধারী জীবাত্মা মাত্রই সত্ত্ব, রজ ও তম--জড়া প্রকৃতির এই ত্রিগুণের নিয়ন্ত্রণাধীন। পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ এই ত্রিগুনাবলীর স্বরূপ, আমাদের ওপর সেগুলির ক্রিয়াকলাপ, মানুশ কিভাবে সেগুলিকে অতিক্রম করে এবং যে-মানুষ অপ্রাকৃত স্তরে অধিষ্ঠিত তার লক্ষণাবলী ব্যাখ্যা করেছেন।
★পুরুষোত্তম-যোগঃ- বৈদিক জ্ঞানের চরম উদ্দেশ্য হচ্ছে জড়-জাগতিক বন্ধন থেকে মানুষের মুক্তি লাভ এবং পরম পুরুষোত্তম ভগবানরূপে শ্রীকৃষ্ণকে উপলব্ধি করা। যে মানুষ শ্রীকৃষ্ণের পরম স্বরূপ উপলব্ধি করে, সে তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং ভক্তিমূলক সেবায় আত্মনিয়োগ করে।
★দৈবাসুর-সম্পদ-বিভাগযোগঃ- যারা আসুরিক গুণগুলি অর্জন করে এবং শাস্ত্রবিধি অনুসরণ না করে যথেচ্ছভাবে জীবন যাপন করে থাকে, তারা হীনজন্ম ও ক্রমশ জাগতিক বন্ধনদশা লাভ করে। কিন্তু যারা দিব্য গুণাবলীর অধিকারী এবং শাস্ত্রীয় অনুশাসন আদি মেনে বিধিবদ্ধ জীবন যাপন করেন, তাঁরা ক্রমান্বয়ে পারমার্থিক সিদ্ধিলাভ করেন।
★শ্রদ্ধাত্রয়-বিভাগ-যোগঃ- জড় প্রকৃতির ত্রিগুণাবলীর থেকে উদ্ভূত এবং সেগুলির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী শ্রদ্ধা তিন ধরণের হয়ে থাকে। যাদের শ্রদ্ধা রাজসিক ও তামসিক, তারা নিতান্তই অনিত্য জড়-জাগতিক ফল উৎপন্ন করে। পক্ষান্তরে, শাস্ত্রীয় অনুশাসন আদি মতে অনুষ্ঠিত সত্ত্বগুণময় কার্যাবলী হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করে এবং পরিণামে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের প্রতি শুদ্ধ ভক্তি-শ্রদ্ধার পথে মানুষকে পরিচালিত করে ভক্তিভাব জাগ্রত করে তোলে।
★মোক্ষযোগঃ- শ্রীকৃষ্ণ ব্যাখ্যা করেছেন ত্যাগের অর্থ এবং মানুষের ভাবনা ও কার্যকলাপের উপর প্রকৃতির গুণাবলীর প্রতিক্রিয়াগুলি কেমন হয়। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন ব্রহ্ম উপলব্ধি, ভগবদগীতার মাহাত্ম্য ও গীতার চরম উপসংহার---ধর্মের সর্বোচ্চ পন্থা হচ্ছে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ, যার ফলে সর্বপাপ হতে মুক্তি লাভ হয়, সম্যক জ্ঞান-উপলব্ধি অর্জিত হয় এবং শাশ্বত চিন্ময় পরম ধামে প্রত্যাবর্তন করা যায়।

Tuesday, March 28, 2017

পবিত্র বেদবাক্য

আর্য্য কে বা কারা?

'য' মানে যাওয়ন, 'ঋ' ধাতুর মানে হয় যে আবর্ত্তন;
'ঋ' এবং 'য'-এ আর্য্য হইবে, উহারা দক্ষ হন,
ওরা এক কাজ করে বার বার, উৎপথে নাহি যায়;
তত্ত্বদর্শী ভদ্র যেজন, আর্য্য বলিব তায়। ।১।
আর্য্য বলিয়া কোন জাতি নাই, উহারা মান্যজন;
শ্বশুর, গুরু ও ভদ্রলোকেরা তাই তো আর্য্য হন।
'আর্য্যপুত্ত্র' বলিয়া স্বামীকে করিব সম্ভাষণ।
তিনি যে আমার শ্বশুর পুত্ত্র এবং মান্যজন। ।২।
প্রভু, আচার্য্য, জ্যেষ্ঠভ্রাতাকে আর্য্য বলিব আমি;
আর্য্য শব্দে হতে পারে সাধু, সজ্জন আর স্বামী।
আর্য্য হইল সুশিষ্ট আর আচারনিষ্ঠ জন;
সকল দেশেই থাকেন তারা, শুধু ভারতের নন। ।৩।
শ্রেষ্ঠা রমণী পূজ্যা হইবে, আর্য্যা বলিব তায়;
স্বশুর মশাই আর্য্য, শাশুড়ী আর্য্যা হইয়া যায়।
আর্য্যা ছন্দে রচিত শ্লোককে আর্য্যা বলিতে চাই।
শুভঙ্করের আর্য্যা পড়িয়া অঙ্ক কষিয়া যাই। ।৪।
আর্য্যাবর্ত্তে হয় যে আর্য্যগণের আবর্ত্তন,
সেথা পুনঃ পুনঃ উদ্ভূত হন ভদ্র আর্য্যগণ।
হিমালয় থেকে বিন্ধ্য হইল আর্য্যগণের স্থান,
বিদেশের থেকে আসে নাই ওরা এদেশের সন্তান। ।৫।
অনার্য্যগণ আর্য্য হইতে ভিন্ন জাতির নন,
ভদ্র এবং শুচি হ'লে পর সবাই আর্য্য হন।
আর্য্য এবং অনার্য্যদের ঝগড়া কেন হয়,
পুরাণাদির পাতায় পাতায় সে ইতিহাস রয়। ।৬। --- বর্ণসঙ্গীত।
শুভাষিশ চিরকল্যাণ পাত্র