Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Thursday, December 14, 2017

ইসকন ভক্তরা কেন সকলের হাতের রান্না খায় না??

উত্তর:- সেই সুপ্রাচীন কাল থেকে এখনও পর্যন্ত দেখা
যায় ব্রাহ্মণরা সাধারণত কোন বৈশ্য, শূদ্রদের গৃহে
গেলে নিজে রান্না করে খান, কারও হাতের রান্না
করা খাবার গ্রহন করেন না । সেক্ষেত্রে কি বলবেন ? এ
নিয়মতো ইসকন তৈরি করেনি । তারা শাস্ত্র সিদ্ধান্ত
অনুসারে এটি এখনও করছে । সবাই মানুষ তাহলে ভিন্ন
প্রেক্ষাপট কেন ? অনেক বৃদ্ধ/বৃদ্ধা এখনও আছে, যারা
অন্য ধর্মাবলম্বীদের হাতের রান্না খান না কিংবা
অহিন্দুদের চা-দোকানে কিছু খান না । এর কারন কি ?
সুপ্রাচীন সনাতন ধর্মের ইতিহাস পর্যবেক্ষন করলে
দেখা যায় প্রাচীন হিন্দুরা নিরামিষ দ্রব্য রান্না করে
। ভোগ নিবেদন করে তবেই খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করত ।
কালাতিক্রমে সেই সাত্ত্বিক প্রথা অদৃশ্য হয়ে যথেচ্ছা
খাবার গ্রহনের প্রথা চালু হয় । ইসকন বৈদিক ভাবধারা
অনুসারে আবার সেই সাত্ত্বিক প্রথা শুধু বাংলাদেশ/
ভারত নয় সারাবিশ্বে পুনরায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা
করছে । বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করলে এর
প্রকৃত কারন ব্যাখ্যা করা যায় । কারো চেতনা যদি
অত্যন্ত কলুষিত হয় এবং সেই ব্যক্তি যখন রান্না করে
তখন তার ঐ অবস্থায় চিন্তা চেতনা ও কলুষতা সমূহ তারই
তৈরি রান্নার দ্রব্যে প্রবেশ করে । আর তখন সেটি যদি
কেউ গ্রহন করে, ঐ খাদ্য দ্রবের মাধ্যমে সেই কলুষিত
চেতনাগুলি তার হৃদয়ে প্রবেশ করে তাকেও কলুষিতকরে ।
উদাহরনস্বরূপ কোন কামার্ত ব্যক্তির রান্না করা খাবার
কেউ গ্রহণ করে তবে অনিচ্ছাসত্ত্বেও সেই ব্যক্তির
মধ্যে যৌনউদ্বেগ প্রকাশ পাবে । পক্ষান্তরে সদগুণাবলী
সম্পন্ন কৃষ্ণভক্তের হাতের রান্না করা প্রসাদ যদি কেউ
গ্রহন করে তবে গ্রহণকারী সদগুণাবলী সম্পন্ন হয় । এটি
একটি বিজ্ঞান । ৫০০ বছর পূর্বে শ্রীচৈতন্যমহাপ্রভু এই
বিজ্ঞানটি দিয়ে গেছেন ।
‘বিষয়ীর অন্ন খাইলে মলিন হয় মন ।
মন মলিন হৈলে নহে কৃষ্ণের স্মরণ ।। চৈ. চ.
বিষয়ী বলতে তাদেরই বোঝায়, যাদের বিষয় ভোগ তৃষ্ণা
প্রবল । শ্রীলপ্রভুপাদ বিষয়ী তাদেরকে বলেছেন, যারা
মাছ, মাংস খায়, নেশা করা, অবৈধযৌনসঙ্গ এবং জুয়া
কখনও বর্জন করতে চায়না, তাদের চরিত্র কলুষিত হওয়ার
ফলে তারা সবসময় ভগবানের ও ভক্তেরবিরোধী ।
কপটাচারী ও কৃপণ প্রকৃতির । অতএব তাদের কাছে
ভক্তরা কিছুই গ্রহণ করে না ।
ভগবানের ভক্তরা নিবেদিত ছাড়া কোন কিছুই গ্রহণ
করেন না এটিও আরেকটি কারণ যে, বাইরের কোন কিছুই
তারা গ্রহণ করেন না কিংবা আমিশাষী মা-বাবার
রান্না করা দ্রব্যও । কেননা ভগবদগীতার ৩য় অধ্যায়ের
১৩নং শ্লোক বর্ণনা করা হয়েছে ।
যজ্ঞাশিষ্টাশিনঃ সন্তোমুচ্যন্তে সর্বকিল্বিষ্যৈঃ ।
ভুঞ্জতে তে ত্বঘংপাপা যে পচন্ত্যাত্মিকারণাৎ ।।
‘ভগবদ্ভক্তেরা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন, কারণ তাঁরা
যজ্ঞাবশিষ্ট অন্নাদি গ্রহণ করেন । যারা কেবল
স্বার্থপর হয়ে নিজেদের ইন্দ্রিয়ের তৃপ্তির জন্য
অন্নাদি পাক করে, তারা কেবল পাপই ভোজন করে ।
অপরদিকে ৯ অধ্যায়ের ২৬ নং শ্লোকে বলা হয়েছে-
পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি ।
তদহং ভক্ত্যুপহৃতমশ্নামি প্রযতাত্মনঃ ।।
‘যে বিশুদ্ধচিত্ত নিষ্কাম ভক্ত ভক্তি সহকারে আমাকে
পত্র, পুষ্প, ফল ও জল অর্পণ করেন, আমি তার সেই
ভক্তিপ্লুত উপহার প্রীতি সহকারে গ্রহণ করি।
এখানে ‘বিশুদ্ধচিত্ত’ শব্দটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ । জীবকে
বিশুদ্ধ চিত্তের অধিকারী হতে হলে অবশ্যই কৃষ্ণভাবনা
অবলম্বন করতে হবে, চার নিয়ম পালন পূর্বক তাকে অবশ্যই
হরিনাম অনুশীলনের মাধ্যমে প্রতিদিন হৃদয় মার্জন
করতে হবে । তবেই একজন কৃষ্ণভক্ত বিশুদ্ধচিত্তের
অধিকারী কারো নিবেদিত কৃষ্ণ প্রসাদ নিঃসংকোচে
গ্রহণ করেন সে যদি প্রতিদিন প্রীতি সহকারে
ভগবানকে নিবেদন করেন তবে তার হাতে খেতে আপত্তি
থাকবে কেন?
অতএব, যারা এই বিজ্ঞান হৃদয়ঙ্গম করতে পারবেন তারা
আর এসময় জল্পনা – কল্পনা মূলক ধ্যান ধারণা থেকে
মুক্ত হয়ে অনতিবিলম্বে এটি অনুশীলন করবেন ।
পক্ষান্তরে যারা এর বিরোধিতা করে তারা ভগবান
এবং ভক্তচরণে অপরাধ হেতু নিশ্চিত নরক গামী হবেন ।
এটিই শাস্ত্রের ভাষ্য ।
হরে কৃষ্ণ।।

প্রশ্নঃ গোপাল বেশে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নন্দালয়ে অবস্থান কালে বিভিন্ন গৃহ থেকে ননী চুরী করেন। ভগবানের এরুপ চুরির লীলাতে জীবের জন্য কি শিক্ষা বা উপদেশ নিহিত অাছে?

অালোচনাঃ
অামরা ছোট বেলায় শিক্ষেছি, অন্যের জিনিস না বলে নিলে চুরি করা বলে। শ্রী কৃষ্ণ সমস্ত বিশ্ব চরাচরের একমাত্র মালিক ও ভোক্তা (গীতা ৫/২৯)। অতএব, তার ক্ষেত্রে চুরির প্রশ্নই ওঠে না। বরং তিনি যদি কারো কাছ থেকে কোন কিছু গ্রহন করেন, তবে তা পরম সৌভাগ্যের বিষয়। ব্রজবাসীরা কৃষ্ণকে প্রাণাধিক ভালোবাসতেন। তাদের অানন্দ বিধানের জন্য শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে বহুবিধ লীলা প্রকাশ করেছেন। এমনকি তারা অপেক্ষায় থাকতেন কখন ভগবান তাদের গৃহে ননী চুরি করতে অাসবেন। এজন্য ভগবান ব্রজজন রঞ্জন নামে প্রসিদ্ধ। শুধু ব্রজবাসী নয়, কৃষ্ণ এমন কি অাপনার গৃহ থেকেও যা ইচ্ছা গ্রহন করতে পারেন।

ভগবানের জন্ম ও কর্ম দিব্য। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ, এমনকি চোরের মধ্যেও তিনি শ্রেষ্ঠ চোর। তিনি ব্রজবাসীদের গৃহ থেকে ননী চুরি করার ছলে তাদের হ্নদয় চুরি করেন, অার তার শরনাগত ভক্তদের অনেক জন্মের সঞ্চিত পাপরাশি তিনি চুরি করেন। তাই অামাদের উচিৎ তার অপ্রাকৃত নাম জপ করে অাকুল ভাবে প্রার্থনা করা -- হে শ্রেষ্ঠ চোর, তুমি কৃপা করে অামার হ্নদয়ের সমস্ত জড় কলুষ হরণ করো। অধিকন্ত এই লীলার দ্বারা ভগবান অামাদের এই শিক্ষা দিচ্ছেন, যাতে অামরা সবকিছু ভগবানকে নিবেদন করে গ্রহণ করি, অন্যথায় তা চুরি বলে গণ্য হবে (গীতা ৩/১২)।
@@ হরে কৃষ্ণ @@

Saturday, December 2, 2017

শ্রীবৃন্দাবন ধামতত্ত্বঃ

শ্রীবৃন্দাবন হচ্ছে সনাতন বা হিন্দু ধর্মালম্বীদের সর্বশ্রেষ্ঠ তীর্থস্থান। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেনে, আমি বৃন্দাবন ছেড়ে একদন্ড কোথাও থাকি না। নিম্নে বৃন্দাবন ধামতত্ত্ব বর্ণিত হলঃ

চুরাশী ক্রোশেতে ব্যপ্ত শ্রীব্রজমন্ডল।
তাতে বৃন্দাবন ধাম অতি রম্যস্থল।।

ছয় ঋতুর সুভাশিত সুন্দর কুসুমে।
সুশোভিত সুরভিত নানা বিহঙ্গমে।।

কালিন্দী যমুনা স্পর্শে মৃদু সমীরণ।
প্রবাহিত হয়ে করে আনন্দ বর্ধণ।।

রোগ-শোক-মোহ-জরা-ক্ষয়-মৃত্যু আদি।
সংসার জ্বালা যন্ত্রণা নাহি কোন ব্যাধি।।

কল্প বৃক্ষমূলে মণি-মাণিক্য উজ্জ্বল।
ভূখণ্ড উপরি যোগপীঠ অষ্টদল।।

সেই পদ্ম মধ্যভাগে প্রাতঃসূর্য সম।
প্রভাবশালী শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র থাকে অধিষ্ঠান।।

সচ্চিদানন্দময় এই অপ্রাকৃত ধামে।
গো-গোপ গোপীসহ ক্রীড়াক্রমে।।

বৃন্দাবন ভিন্ন অন্য একাদশ বনে।
শ্রীকৃষ্ণ করেন লীলা সদা ভক্ত সনে।।

ভদ্র, বিল্ব, ভাণ্ডীর, গোকুল ঝাউবন।
তাল, খদির, বহুলা, কুমুদ, কাম্য, মধুবন।।

বৃন্দাবন মধ্যে দুই ক্ষুদ্র বন রয়।
নিধুবন, কুঞ্জবন, আছে পরিচয়।।

বৃন্দাবন হতে তিন ক্রোশ দক্ষিণেতে।
শ্রীমথুরা ধাম তথা আছে বিরাজিতে।।

পশ্চিমেতে নয় ক্রোশে রয় রাধাকুন্ড।
রাধাকুন্ড অগ্নি-কোণে আছে শ্যামকুন্ড।।

পশ্চিমের চৌদ্দ ক্রোশে নন্দীশ্বর গ্রাম।
শ্রীকৃষ্ণের পিতা নন্দ মহারাজ মোকাম।।

নন্দীশ্বর অর্ধক্রোশ যাবট গ্রামেতে।
শ্রীমতির শ্বশুড়ালয়, স্বর্ণ মন্দিরেতে।।

নন্দীশ্বর দক্ষিণেতে দুই ক্রোশ দূর।
শ্রীরাধার পিতৃগৃহ বৃষভানুপুর।।

তার তিন ক্রোশ পূর্বে সূর্যকুন্ড হয়।
শ্রীরাধিকা সূর্যপূজা যথায় করয়।।

তার দুই ক্রোশ পূর্বে রাধাকুন্ড আছে।
নয় ক্রোশ বৃন্দাবন পূর্বে বলা গেছে।।

রাধাকুন্ড তীরে রম্য বন উপবন।
পূর্ব তটে রাসস্থলী বিলাস ভবন।।

শ্রীকৃষ্ণের পাদপদ্ম হৃদে করি আশ।
বৃন্দাবন তত্ত্ব কহে শ্রীচরণ দাস।।

নিবেদনেঃ- শ্রীমদ্ভগবদগীতা স্কুল।।

Thursday, November 30, 2017

তুলসীর উৎপত্তিঃ

তুলসী দেবীর কৃপা ব্যতীত কৃষ্ণ প্রেম সম্ভব নয়। তাই তুলসী দেবীকে তুষ্ট করার জন্য নিয়মিত তুলসী সেবা আবশ্যক। কৃষ্ণ সেবায় একমাত্র তুলসী পত্র ব্যতীত অন্য কোন কিছুর প্রয়োজন হয় না। তুলসী দেবী কৃষ্ণভক্তি লাভের প্রতীক। এছাড়াও তুলসী পত্র একটি মহাঔষধি।

সর্বৌষধি রসেনৈব পূর্বমৃত মন্থনে।
সর্বোসত্ত্বোপকারায় বিষ্ণুনা তুলসী কৃতা।।
(তথাহি স্কন্ধ পুরাণ)
পরাকালে দেবাসুর হইয়া মিলিত।
সমুদ্র মন্থনে করে উৎপন্ন অমৃত।।
জীবের মঙ্গল হেতু বিষ্ণু হিতময়।
সর্বগুণা তুলসীরে উদ্ধত করয়।।

তুলসী মাহাত্ম্যঃ
ন বিপ্রসদৃশং পাত্র ন দানং সুরভে সমম্‌।
ন চ গঙ্গাসমং তীর্থং ন পত্রং তুলসী সমম্‌।।
অভিন্ন পত্রং হরিতাং হৃদ্যমঞ্জরী সংযুতাম্‌।
ক্ষীরোদার্ণব সম্ভুতাং তুলসী আপদোদ্ধার।।
(তথাহি স্কন্ধ পুরাণ)
ব্রাহ্মণ সমান পাত্র ধেনুতুল্য দান।
ধরাধামে তীর্থ নাহি গঙ্গার সমান।।
তেমনি পত্রের মধ্যে হয় শ্রেষ্ঠ তরা।
তুলসী নামেতে পত্র খ্যাত এই ধরা।।
যে তুলসী সমুদ্ভব ক্ষীরোদ সাগরে।
অচ্ছিন্ন হরিৎ পদ্ম কৃষ্ণ দান করে।।
ক্ষীরোদ সাগরে জন্ম তুলসী হরিৎ।
অচ্ছিন্ন মঞ্জুরী কৃষ্ণে হলে সমর্পিত।।
সকল আপদ নাশি মুক্ত হয় সেই।
ছিন্ন ভিন্ন পক্কপত্র তুলসী না দেই।।

তুলসী জাগরণ মন্ত্রঃ
উত্তিষ্টং তুলসীদেবী গাত্রোত্থানাং কুরু যথা।
অরুণোদয় প্রাতঃ প্রীচরণে প্রণমাম্যহম্‌।।

তুলসীর মূল লেপন মন্ত্রঃ
তুলসী নিপয়তে গঙ্গা স্থানেমেকং বারাণসী।
সেবনে পঞ্চতীর্থানি তুলসীভ্যাং নমো নমঃ।।
তুলসী ত্বং সদা ভক্তা সর্বতীর্থফলং ভবেৎ।
লেপনাৎ তব মূলঃ সর্বপাপৈ প্রমুচ্যতে।।
তন্মুলে সর্বতীর্থানি তৎপত্রে সর্বদেবতা।
তদঙ্গে সর্বপুণ্যানি কৃষ্ণভক্তি প্রদায়িনীং।।

তুলসী স্নান মন্ত্রঃ
গোবিন্দবল্লভাং দেবী ভক্তচৈতন্যকরণীং।
স্নাপয়ামি জগদ্ধাত্রীং কৃষ্ণভক্তি প্রদায়িনীং।।

তুলসী চয়ন মন্ত্রঃ
তুলস্যমৃত নামাসি সদা ত্বং কেশব প্রিয়া।
কেশবার্থে চিনোমি ত্বাং বরদা ভব শোভনে।।
তদঙ্গ সম্ভবৈ পত্রৈ পূজয়ামি যথা হরিং।
তথা কুরু পবিত্রাঙ্গি, কলৌমলবিনাশিনীম্‌।।
চয়ানাদ্ভব দুঃখান্তে যদ্দেবি। হৃদি বর্ততে।
তৎ ক্ষমস্ব জগন্মাতস্তুলসী! ত্বাং নমাম্যহম্‌।।

তুলসী অর্ঘ্য মন্ত্রঃ
শ্রিয়ঃ শ্রিয়ে শ্রিয়াবাসে নিত্যং শ্রীধরসৎকৃতে।
ভক্ত্যা দত্তং ময়া দেবী গ্রহাণার্ঘ্যঃ নমোহস্তুতে।।

গন্ধ পুষ্প দেওয়ার মন্ত্রঃ
ইদং গন্ধং তুলসীদেব্যৈ নমঃ।
এতে গন্ধপুষ্পে তুলসীদেব্যৈ নমঃ।।

পূজান্তে পাঠ্যঃ
নির্মিতা ত্বং পুরা দেবৈ রচিতা ত্বং সুরাসুরৈঃ।
তুলসী হর মে পাপং পূজাং গৃহ্ন নমোহস্তুতে।।

তুলসীর স্তুতিঃ
মহাপ্রসাদ জননী সর্বসৌভাগ্যবর্ধিনী।
আধিব্যাধিহরি নিত্যং তুলসী ত্বং নমোহস্তুতে।।

তুলসীর ধ্যানঃ
তুলসী সর্বভূতানাং মহাপাতকনাশিনী।
স্বর্গাপবর্গদে দেবী বৈষ্ণবানাং প্রিয়ে সদা।।
সত্যে সত্যবতীচৈব ত্রেতায়াং মানবী তথা।
দ্বাপরে অবতীর্ণাসি বৃন্দা ত্বং তুলসী কলৌ।।

তুলসীর প্রণামঃ
বৃন্দায়ৈ তুলসীদেব্যৈ প্রিয়ায়ৈ কেশবস্য চ।
কৃষ্ণভক্তিপদে দেবী সত্যবত্যৈ নমো নমঃ।।
যা দৃষ্টা নিখিলাঘ সঙ্খ সমমী স্পষ্টা বপুঃ পাবনী।
রোগানামভিবন্দিতা নিরসনী সিক্তান্তকত্রাসিনী।।
প্রত্যাশক্তি বিধায়িনী ভগতবঃ কৃষ্ণস্য সংরোপিতা।
ন্যস্তাতচ্চরণে বিমুক্তি ফলদাতস্যৈ তুলস্যৈ নমঃ।।

তুলসী চয়ন নিষিদ্ধ তত্ত্বঃ
অস্বাতা তুলসীং ছিত্বা যঃ পূজা কুরুতে নরঃ।
সোহপরাধা ভবেৎ সত্যং তৎসর্ব নিষ্ফলঃ ভবেৎ।।
ন স্নাতা তুলসীং ছিদ্যাং দেবার্থে পিতৃকর্মণি।
মাসান্তে পক্ষয়োবন্তে দ্বাদশ্রাং নিশি সন্ধ্যয়োঃ।।
তুলসীচ্ছেদনেব বিষ্ণোঃ শিরসি ছেদনম্‌।
বিনা স্নানে করে যদি তুলসী চয়ন।
তাহা দ্বারা করে যদি ভগবৎ অর্চন।
দেবকর্ম পিতৃকর্ম বিফলে তার যায়।
পদ্মপূরাণের মতে বর্ণিলাম তায়।।
দ্বাদশী, সংক্রান্তি, সন্ধ্যা, অমা পৌর্ণমাসী।
রাত্রি কালে কখন না তুলিবে তুলসী।।
যদিস্যাৎ কোন লোক করয়ে চয়ন।
বিষ্ণু শিরচ্ছেদ পাপ হইবে তখন।।

তুলসী আরতিঃ
নমো নমো তুলসী শ্রীকৃষ্ণের প্রেয়সী
জয় রাধাকৃষ্ণের চরণ পাব এই অভিলাষী।।
যে তোমার স্মরণ লয়…. তার বাঞ্ছা পূর্ণ হয়
তুমি কৃপা করি কর তারে বৃন্দাবনবাসী।
এই মনের অভিলাষ …. বিলাস কুঞ্জে দিও বাস
নয়নে হেরিব সদা যুগলরূপ রাশি।।
এই নিবেদন ধর…. সখীর অনুগত কর
সেবা অধিকার দিয়ে কর নিজো দাসী।।
তুমি বৃন্দে নাম ধর…. অঘটন ঘটাতে পার
কৃপা করি সিদ্ধমন্ত্র দিলা পৌর্ণমাসী।।
দীন কৃষ্ণদাসে কয়…. মোর যেন এই হয়
শ্রীরাধা-গোবিন্দ প্রেমে সদা যেন ভাঁসি।।

তুলসী প্রদক্ষিণ মন্ত্রঃ
যানি কানি চ পাপানি, ব্রহ্মহত্যাদি কানি চ।
তৎ সর্ব্বং বিলয়ং যাতি, তুলসী! তৎপ্রদক্ষিণাৎ।।(দুই বার)

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

(কৃষ্ণ প্রেয়সী তুলসীদেবীর তত্ত্ব-কথা সমাপ্ত)

মহাপ্রসাদ কিভাবে পৃথিবীতে আসলো?

নারদ মুনির একবার বাসনা হলো যে তিনি ভগবান নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। কিন্তু যা ছিল অসম্ভব। কারন নারায়নের প্রসাদ কেবল মাত্র মহালক্ষী ব্যাতীত অন্য কেউ পেতে পারেন না। এই সংকটে নারদ মুনি লক্ষীদেবী কে প্রসন্ন করার হেতু তপস্যা শুরু করলেন। অতঃপর ১২ বছর তপস্যার পর দেবী লক্ষী প্রসন্ন হলেন এবং নারদ মুনিকে বললেনঃ তোমার তপস্যায় আমি সন্তুষ্ট হয়েছি,বলো কি বর চাও তুমি? 

উত্তরে মুনিবর বললেন যে তিনি নারায়নের প্রসাদ পেতে চান!! মাতা লক্ষী বিপদে পড়ে গেলেন,কিন্তু নারদ মুনিকে বরও যে দিতে হবে।তাই তিনি তথাস্তু বলে দিলেন। লক্ষীদেবী বললেন ঠিক আছে তুমি এখানে অপেক্ষা কর, নারায়নের ভোজনশেষে তার অবশেষ প্রসাদ তুমি পাবে। অবশেষে যখন নারদ মুনি সেই প্রসাদ পেল তা সেবা করে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল। বীনার ছন্দে নারায়ণ..নারায়ণ বলতে বলতে কৈলাস অভিমুখে যাত্রা করলেন। শিব তখন নারদ মুনিকে তার আনন্দের হেতু জানতে চাইলেন।নারদ মুনি তখন সবিস্তারে বর্ননা করলেন। তা শুনে শিবের ও ইচ্ছা হলো যে সেও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। নারদ মুনি বললেন যে তিনি সব খেয়ে ফেলেছেন। কিন্তু এখন উপায় কি হবে?

নারদ মুনি তার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে হাতের একপাশে একবিন্দু প্রসাদ লেগে আছে। শিবজী সেটা জল দিয়ে ধুয়ে সেবা করলেন। সেই চিন্ময় প্রসাদের এমনই স্বাদ ছিল যে ওইটুকু খেয়েই শিব আনন্দে তান্ডব নৃত্য শুরু করে দিলেন। ওইদিকে মাতা পার্বতী এই তান্ডব নৃত্যের শব্দ শুনতে পেলেন। আর ভাবলেন যে এখনতো পৃথিবীর ধংসের সময় উপস্থিত হয়নি, তবে স্বামী কেনো তান্ডব নৃত্য শুরু করলেন!! নিকটে গিয়ে শিবজীকে জিজ্ঞেস কররেন এবং ঘটনার বিবরন শুনলেন। তখন মাতা পার্বতী বললেন তিনিও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। কিন্তু এখনতো আর কোন ভাবে সম্ভব না। পার্বতী দেবী অভিমান করলেন যে তিনি পত্নী হওয়া সত্ত্বেও কেন তার স্বামী নারায়নের প্রসাদ একা সেবা করেছেন!!! তখন মাতা পার্বতী নারায়নের ধ্যান শুরু করলেন। দেবী পার্বতীর তপস্যায় তুষ্ট হয়ে নারায়ন তাকে দর্শন দেন এবং বললেনঃ বলো পার্বতী তুমি কি বর চাও। তখন মাতা পর্বতী বললেন, হে নারায়ন আপনিতো সবই জানেন।তবে আমার আরও প্রর্থনা আছে। এই জগতের সবাই আমার সন্তান। হে ভগবান সন্তানদের রেখে আপনার প্রসাদ শুধু আমি একা পাব তা কখনই হতে পারে না।তাই আপনার মহাপ্রসাদ যাতে জগতের সবাই পায়,সেটাই আমার প্রর্থনা। উত্তরে ভগবান বললেন- কলিকালে আমি যখন জগন্নাথদেব রুপে লীলা করব তখন আমি আকাতরে আমি আমার মহাপ্রসাদ বিতরন করব। সেই প্রসাদ প্রথমে তোমাকে দেয়া হবে,পরে তা জগতের সবাইকে দেয়া হবে। যদি আপনারা কেউ পুরীতে গিয়ে থাকেন সেখানে দেখতে পাবেনঃ জগন্নাথ দেবের মন্দিরের পাশে বিমলাদেবীর (পার্বতী দেবী) মন্দির আছে। সেখানে জগন্নাথের প্রসাদ প্রথমে দেবী পার্বতীকে অর্পন করা হয়। পরে সেই মহাপ্রসাদ সবাইকে বিতরন করা হয়। 

সবাই প্রেম ধ্বনি দিয়ে বলুনঃ 
জয় জগন্নাথ

জয় মহাপ্রসাদের জয়

সকলে জানার জন্য শেয়ার করুন।।

গীতা সম্পর্কিত কিছু জ্ঞানঃ

১। গীতা হচ্ছে সমস্ত শাস্ত্রের সারতিসার।
২। মহাভারতের ভীষ্মপর্বের (২৫ থেকে ৪২) এই ১৮ টি অধ্যায় হল ভগবদগীতা বা গীতোপনিষদ ।
৩। গীতায় রয়েছে ৭০০ শ্লোক। তার মধ্যে ধৃতরাষ্ট্র বলেন ১টি শ্লোক, সঞ্জয় বলেন ৪০টি শ্লোক, অর্জুন বলেন ৮৫টি শ্লোক, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন ৫৭৪টি শ্লোক । আর পুরো গীতায় ৯৫৮০ টি সংস্কৃত শব্দ আছে ।
৪। গীতার ১৮টি অধ্যায়ের মধ্যে প্রথম ৬টি অধ্যায়কে বলে কর্মষটক, মাঝখানের ৬টি অধ্যায়কে বলে ভক্তিষটক, আর বাকি ৬টি অধ্যায়কে বলে জ্ঞানষটক ।
৫। গীতা পড়লে ৫টি জিনিষ সর্ম্পকে জানা যায় – ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল ও কর্ম ।
৬। যদিও গীতার জ্ঞান ৫০০০ বছর আগে বলেছিল কিন্তু ভগবান চতুর্থ অধ্যায় বলেছেন এই জ্ঞান তিনি এর আগেও বলেছেন, মহাভারতের শান্তিপর্বে (৩৪৮/৫২-৫২) গীতার ইতিহাস উল্লেখ আছে । তার মানে গীতা প্রথমে বলা হয় ১২,০৪,০০,০০০ বছর আগে, মানব সমাজে এই জ্ঞান প্রায় ২০,০০,০০০ বছর ধরে বর্তমান, কিন্তু কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেলে পুনরায় আবার তা অর্জুনকে দেন ।
৭। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে মাত্র ৪০ মিনিটে এই গীতার জ্ঞান দেন ।
৮। গীতার মাহাত্ম্য অনেকে করে গেছেন, তার মধ্যে শ্রীশঙ্করাচার্য, স্কন্দপুরাণ থেকে শ্রীল ব্যাসদেব, শ্রীবৈষ্ণবীয় তন্ত্রসারে গীতা মাহাত্ম্য আর পদ্মপুরাণে দেবাদিদেব শিব কর্তৃক ১৮টি অধ্যায়ের মাহাত্ম্য বর্ণিত আছে ।
৯। গীতাতে অর্জুনের ২২ টি নাম আর কৃষ্ণের ৪৩টি নামের উল্লেখ করা হয়েছে ।
১০। গীতাতে ‘মাম্’ এবং ‘মামেব’ কথাটি বেশি আছে, ‘যোগ’ শব্দটি আছে ৭৮ বার, ‘যোগী’ আছে ২৮ বার আর ‘যুক্ত’ আছে ৪৯ বার ।
১১। গীতার ২য় অধ্যায়কে বলা হয় গীতার সারাংশ ।
১২। ভগবান যখন বিশ্বরূপ দেখান তখন কাল থেমে যায়।
১৩। গীতায় অর্জুন ১৬টি প্রশ্ন করেন আর কৃষ্ণ তা ৫৭৪টি শ্লোকের মাধ্যমে উত্তর দেন ।
১৪। পুরো গীতার সারমর্ম মাত্র ৪টি শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে, ১০ম অধ্যায়ের ৮ থেকে ১১ নং শ্লোক-এ।
১৫। গীতায় ৩টি গুণ, ৩টি দুঃখ আর ৪টি আমাদের প্রধান সমস্যার কথা বলেছে ।
১৬। গীতায় সাধুর ২৬টি গুণের কথা বলা হয়েছে আর ৬টি আসুরিক প্রবৃত্তির কথা বলা হয়েছে ।
১৭। নরকের ৩টি দ্বারের কথা বলা হয়েছে (কাম, ক্রোধ ও লোভ)
১৮। গীতা অনুযায়ী, ব্রাহ্মণের ৯টি গুণ, ক্ষত্রিয়ের ৭টি গুণ, বৈশ্যের ৩টি গুণ আর শুদ্রের ১টি গুণ ।
১৯। গীতায় ৩টি কর্মের প্রেরণা আর ৩টি কর্মের আশ্রয়ের কথা বলা আছে ।
২০। গুণ অনুসারে ৩ প্রকারের ত্যাগের কথা বলা হয়েছে ।
২১। ৩ প্রকারের আহার, যজ্ঞ, তপস্যা, শ্রদ্ধা, পূজা ও দানের কথা বলা হয়েছে ।
২২। ২ টি স্বভাবের এবং ৫ টি চেতনার জীবের কথা বলা হয়েছে ।
২৩। ৩ প্রকার জীবের কথা বলা হয়েছে ।
২৪। ৩ প্রকার ক্লেশ বা দুঃখ এবং মানুষের ৬ টি প্রধান শত্রুর কথা বলা হয়েছে।
২৫। জড় দেহের ৬ টি পরিবর্তনের উল্লেখ রয়েছে।
২৬। ব্রহ্ম উপলব্ধির ৫টি স্তরের কথা বলা হয়েছে

Monday, November 27, 2017

জেনে নিন গোমাতার মাহাত্ম্য।

গো-হিত সাধক শ্রীকৃষ্ণ
[ স্বামী সুপর্ণানন্দজী ]
•••••••••••••••••••••••••••••
সেই গোকুল-বৃন্দাবন থেকে কৃষ্ণের জীবনে গো-মাতা, গো-বৎসের দল যুক্ত আছেন।
মাতৃ-দুগ্ধেরই পরিপূরক গো-দুগ্ধ আমাদের প্রাণধারণে অমৃতোপম।
এই সত্য সবার জন্য।
কিন্তু
শ্রীকৃষ্ণের গো-প্রীতি অন্য কারণে।
●ব্রাহ্মণদের মতো গোরু সম্মানের যোগ্য।
"যজ্ঞ" সর্বশ্রেষ্ঠ তপস্যা।যজ্ঞে সবকিছুই প্রতিষ্ঠিত। কিছু না দিলে কিছু পাওয়া যায় না। পৃথিবী সেজন্য যজ্ঞের দ্বারা সৃষ্ট। এই যজ্ঞকাজে গরুর ভূমিকা অপরিসীম।
পিতামহ বলছেনঃ----->
◆সমস্থ তপস্বী অপেক্ষাও গো-সমূহ অধিক পবিত্র।
◆সেজন্যই মহাদেব গরুর সঙ্গে মিলিত হয়ে তপস্যা করেন।
◆যাঁরা গো-দান করেন, তাঁরা পরমগতি প্রাপ্ত হন।
◆এমনকি গরুর জন্য শীত,বৃষ্টি-নিবারক গৃহের ব্যবস্থা যাঁরা করেন, তাঁদের সপ্তমপুরুষ পর্যন্ত মুক্ত হন।
------এ ভাবটি আমাদের বিশেষ স্মরণীয়।
☆ব্রহ্মজ্ঞের যেমন শীত-গ্রীষ্ম বোধ নেই, তেমনি গরুরও ঠান্ডা-গরমে কষ্ট হয় না।
★সর্বদাই মানুষের হিতসাধনে তৎপর।
☆ব্রাহ্মণদের সঙ্গে গো-সমূহও পরমপদ লাভ করেন।
জ্ঞানীরা সেজন্য গো-ব্রাহ্মণকে "এক" বলেন____'একং গোব্রাহ্মণং তস্মাৎ।'
◆গো-দুগ্ধই অমৃত____অগ্নির নিত্য হোমসাধক।
◆গাভী এবং বৃষ প্রাণিগণের প্রাণ; তাঁরা প্রাণিগণের রক্ষক।
◆যাদের বিষ্ঠা(গোবর) শ্মশান এবং দেবালয়কে পর্যন্ত পবিত্র করে , তাদের চেয়ে পবিত্র আর কি আছে?
যুধিষ্ঠির জানতে চাইলেনঃ-
"গো-দানের বিষয়ে বলুন।"
______________________
ভীষ্ম বললেনঃ--
(ক)মিথ্যাবাদী,
(খ)লোভী,
(গ)পাপী,
(ঘ)নাস্তিক,
(ঙ)পিতৃশ্রাদ্ধবিরত,
(চ)অসৎ ব্যাবসায়ী
---এদের কখনো গো-দান করবে না।
✔শ্রোত্রিয়,সাগ্নিক ব্রাহ্মণকে গো-দান কর্তব্য। অর্থাৎ সৎ-পাত্রে গো-দান কর্তব্য।
🍃🌿শ্রেষ্ঠ সম্পদ গরু।জগতের আশ্রয়,যজ্ঞীয় ঘৃতের হেতু,ভূমিজাত শস্যাদির উৎপত্তির কারণ,দুগ্ধধারাসম্পন্ন,সবার পোষণের কারণ।
💐দেবগণেরও মাতা।
গো-গণকে দক্ষিণে রেখে স্পর্শ করবে, 
সব পবিত্র বস্তুর মধ্যে গো-সমূহ পবিত্র।
গো অপেক্ষা উপকারী বস্তু আর কিছু নেই।
মানুষ সংযত এবং সন্তুষ্ট হয়ে গো-সেবা করে সমৃদ্ধি ভোগ করে।
মানুষ পবিত্র হয়ে গো-সমূহের মধ্যে থেকে(পরিচর্যার সময়েও) মনে মনে #গোমতী__বিদ্যা______#নমো__গোভ্যঃ জপ করবে।
মহাতেজা শুকদেবও পিতা ব্যাসদেবের কাছে গো-মাহাত্ম্য শুনে গরুর পূজা করেছিলেন।
বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন পাঠকবৃন্দ নিরাশ হতে পারেন ভীষ্মের গোময় মাহাত্ম্যকীর্তনে।
কিন্তু
স্বয়ং যুধিষ্ঠির পিতমহকে প্রশ্ন করে উত্তর জানতে চাইলেন: "কি কারণে গোময় লক্ষ্মী-সেবিতা?"
যুধিষ্ঠিরঃ- কি কারণে গোময় লক্ষ্মী-সেবিতা?
ভীষ্ম একটি প্রাচীন কাহিনি বললেন:-
অসামান্য রূপলাবন্য নিয়ে লক্ষ্ণীদেবী গো-গণের মধ্যে উপস্থিত হন।
তিনি পরিচয় প্রদানের পর গো-মাতাদের অনুরোধ করেন____আমাকে তোমাদের সঙ্গে বাস করার অনুমতি দাও।
গো-গণ রাজি না হয়ে লক্ষ্মীদেবীর চঞ্চল স্বভাবের উল্লেখ করেন।তাঁকে অন্য স্থানে যেতে বলেন।
লক্ষ্মীদেবী বললেন,
তোমরা আমাকে অবজ্ঞা করছ।সকলে গুরুতর তপস্যা করে আমাকে পায়।
গো-গণ বিনীত হয়ে বললেন,
দেবী ! অবজ্ঞা বা তিরস্কার করছি না আপনাকে। আপনি অস্থির,চঞ্চল।সেজন্য ত্যাগ করছি।
লক্ষ্মীদেবী বড় বিপদে পড়লেন।
গো-গণ প্রত্যাখ্যান করলে মান-সম্মান থাকে না(গো-গণই মানদায়িনী)।
সকলে অবজ্ঞা করবে।
অনুরোধ করলেন,
তোমরা আমার উপর অনুগ্রহ কর।তোমাদের যেকোন অংশে আমাকে রাখ।
তোমরা পুণ্যবতী,ভাগ্যবতী,পবিত্র।
তোমাদের কোন্ অঙ্গে থাকি____তা বল।
এমন কাতর প্রার্থনা শুনে গো-গণ পরামর্শ করে বললেন,
আমাদের আপনার মতো সম্মানীয়ার সম্মানরক্ষা করা অবশ্যকর্তব্য।
আপনি আমাদের বিষ্ঠা এবং মূত্রে বাস করুন।
কারণ
বিষ্ঠা এবং মূত্র ____আমাদের এদুটি বস্তুই অতি পবিত্র।
আনন্দিত চিত্তে লক্ষ্মীদেবী তা গ্রহণ করলেন।
গোময় এবং গোমূত্রে এভাবেই স্বয়ং লক্ষ্মীদেবী আছেন।
----
◆গো-গণের দুগ্ধ,দধি,ঘৃত,মূত্র,বিষ্ঠা____সবই পাপ নাশ করে।
◆গো-গণই যজ্ঞাঙ্গ এবং যজ্ঞ।
◆যজ্ঞ,হব্য,কব্য(পিতৃপুরুষের জন্য যজ্ঞ) সবই গো-সম্ভব।
◆গো-লোকই তো গোলোক____যেখানে নারায়নের বাস।
•দেবতাদেরও ওপরেও গো-গণ।
•ত্রিভূবনের ওপরেই গোলোক।
•আর গো-গণ বরদানও করতে পারেন।
সুতরাং প্রতিদিন যদি গো-সেবা করা যায়, তবে পরিচর্যাকারী বিশেষ ধর্মশালী হয়।
মহাদেবও গো-সেবা মহাপুণ্যজনক বলে গেছেন।
তিনি সেজন্যই বৃষকে তাঁর ওপরে রাখেন, অর্থাৎ
ধ্বজের শীর্ষে থাকে বৃষ___সেজন্য তিনি #বৃষধ্বজ বলে কথিত হন।
এভাবেই গো-ব্রাহ্মণ মানবসমাজের উপকার করেন এবং শ্রীভগবানই তাঁদের এই কাজে নিযুক্ত করেন।

সমাপ্ত।
(রাজাশ্রী)