নারদ মুনির একবার বাসনা হলো যে তিনি ভগবান নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। কিন্তু যা ছিল অসম্ভব। কারন নারায়নের প্রসাদ কেবল মাত্র মহালক্ষী ব্যাতীত অন্য কেউ পেতে পারেন না। এই সংকটে নারদ মুনি লক্ষীদেবী কে প্রসন্ন করার হেতু তপস্যা শুরু করলেন। অতঃপর ১২ বছর তপস্যার পর দেবী লক্ষী প্রসন্ন হলেন এবং নারদ মুনিকে বললেনঃ তোমার তপস্যায় আমি সন্তুষ্ট হয়েছি,বলো কি বর চাও তুমি?
উত্তরে মুনিবর বললেন যে তিনি নারায়নের প্রসাদ পেতে চান!! মাতা লক্ষী বিপদে পড়ে গেলেন,কিন্তু নারদ মুনিকে বরও যে দিতে হবে।তাই তিনি তথাস্তু বলে দিলেন। লক্ষীদেবী বললেন ঠিক আছে তুমি এখানে অপেক্ষা কর, নারায়নের ভোজনশেষে তার অবশেষ প্রসাদ তুমি পাবে। অবশেষে যখন নারদ মুনি সেই প্রসাদ পেল তা সেবা করে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল। বীনার ছন্দে নারায়ণ..নারায়ণ বলতে বলতে কৈলাস অভিমুখে যাত্রা করলেন। শিব তখন নারদ মুনিকে তার আনন্দের হেতু জানতে চাইলেন।নারদ মুনি তখন সবিস্তারে বর্ননা করলেন। তা শুনে শিবের ও ইচ্ছা হলো যে সেও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। নারদ মুনি বললেন যে তিনি সব খেয়ে ফেলেছেন। কিন্তু এখন উপায় কি হবে?
নারদ মুনি তার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে হাতের একপাশে একবিন্দু প্রসাদ লেগে আছে। শিবজী সেটা জল দিয়ে ধুয়ে সেবা করলেন। সেই চিন্ময় প্রসাদের এমনই স্বাদ ছিল যে ওইটুকু খেয়েই শিব আনন্দে তান্ডব নৃত্য শুরু করে দিলেন। ওইদিকে মাতা পার্বতী এই তান্ডব নৃত্যের শব্দ শুনতে পেলেন। আর ভাবলেন যে এখনতো পৃথিবীর ধংসের সময় উপস্থিত হয়নি, তবে স্বামী কেনো তান্ডব নৃত্য শুরু করলেন!! নিকটে গিয়ে শিবজীকে জিজ্ঞেস কররেন এবং ঘটনার বিবরন শুনলেন। তখন মাতা পার্বতী বললেন তিনিও নারায়নের প্রসাদ পেতে চান। কিন্তু এখনতো আর কোন ভাবে সম্ভব না। পার্বতী দেবী অভিমান করলেন যে তিনি পত্নী হওয়া সত্ত্বেও কেন তার স্বামী নারায়নের প্রসাদ একা সেবা করেছেন!!! তখন মাতা পার্বতী নারায়নের ধ্যান শুরু করলেন। দেবী পার্বতীর তপস্যায় তুষ্ট হয়ে নারায়ন তাকে দর্শন দেন এবং বললেনঃ বলো পার্বতী তুমি কি বর চাও। তখন মাতা পর্বতী বললেন, হে নারায়ন আপনিতো সবই জানেন।তবে আমার আরও প্রর্থনা আছে। এই জগতের সবাই আমার সন্তান। হে ভগবান সন্তানদের রেখে আপনার প্রসাদ শুধু আমি একা পাব তা কখনই হতে পারে না।তাই আপনার মহাপ্রসাদ যাতে জগতের সবাই পায়,সেটাই আমার প্রর্থনা। উত্তরে ভগবান বললেন- কলিকালে আমি যখন জগন্নাথদেব রুপে লীলা করব তখন আমি আকাতরে আমি আমার মহাপ্রসাদ বিতরন করব। সেই প্রসাদ প্রথমে তোমাকে দেয়া হবে,পরে তা জগতের সবাইকে দেয়া হবে। যদি আপনারা কেউ পুরীতে গিয়ে থাকেন সেখানে দেখতে পাবেনঃ জগন্নাথ দেবের মন্দিরের পাশে বিমলাদেবীর (পার্বতী দেবী) মন্দির আছে। সেখানে জগন্নাথের প্রসাদ প্রথমে দেবী পার্বতীকে অর্পন করা হয়। পরে সেই মহাপ্রসাদ সবাইকে বিতরন করা হয়।
সবাই প্রেম ধ্বনি দিয়ে বলুনঃ
জয় জগন্নাথ
জয় মহাপ্রসাদের জয়
সকলে জানার জন্য শেয়ার করুন।।
No comments:
Post a Comment