যুগধৰ্ম অনুসারে মানবদেহ যেভাবে স্থূলত্বে পরিণত হয়ে বিভিন্ন চৰ্ম্মাবৃত হয় এবং যেরূপ তাকে তাঁহার তৃতীয় নয়ন ক্রমশঃ অপগত হতে থাকে, তাঁহার আধ্যাত্মিকতা সেই পরিমাণে হ্রাস প্রাপ্ত হয় এবং সেই সঙ্গে অধ্যাত্মবিজ্ঞানও মানবসমাজে গুপ্ত হয়ে যায়। এজন্য গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেন—
“স কালেন মহতা যোগোনষ্টঃ পরন্তপ।”
“হে অৰ্জুন! সেই যোগ বহুকালে নষ্ট হয়ে যায়।” মানবসমাজে তা ক্রমশঃ লুপ্ত হয় বটে; কিন্তু কোন কোন দেশে যোগেশ্বর মহাত্মাগণ, এ শাস্ত্র চিরদিন অনুশীলন করেন, যেমন ভারতবর্ষ, তিব্বৎ প্রভৃতিদেশ এবং কোন কোন দেশে মন্দিরের গুপ্তদীক্ষায় এ শাস্ত্র দীক্ষিত হয়, যেমন- গ্ৰীসদেশ। জনসাধারণ এ শাস্ত্রের বিষয় অবগত হলে, যোগের অষ্ট সিদ্ধিলাভের জন্য অতীব ব্যগ্র হয়। এতে কলিকালে মানবসমাজের প্রভূত, অনিষ্ট উৎপত্তি হওয়ার সম্ভাবনা; এজন্য মহাত্মাগণ যুগধৰ্ম্মে বাধ্য হয়ে অধ্যাত্মবিজ্ঞান সাধারণ মানবমণ্ডলীর ভিতর গোপন করেন। তাঁহারা নিভৃত স্থানে বা গিরিগহবরে থেকে এ স্বৰ্গীয় শাস্ত্র অনুশীলন করেন। অধ্যয়ন দ্বারা এ. শাস্ত্রে ব্যুৎপত্তিলাভ হয় না। সদগুরুর কৃপা ব্যতীত ও যোগাভ্যাস ব্যতীত, এ শাস্ত্রে, কারও প্রবেশাধিকার নাই। যাঁহার আধ্যাত্মিকতা যেরূপ স্ফুরিত, অধ্যাত্মবিজ্ঞান তাঁহার সেরূপ আয়ত্ত। এ শাস্ত্র আয়ত্ত করা, কলিকলুষিত আমাদের দুঃসাধ্য। কোন মহাত্মাকে এ পাপনয়নে দর্শন করি নাই বা কোন মহাত্মার সদুপদেশ এ পাপকর্ণে শ্রবণ করি নাই, কেমন করিয়া সেই স্বর্গীয় অধ্যাত্মবিজ্ঞানের বিষয় অবগত হব!
Thursday, April 20, 2017
অধ্যাত্মবিজ্ঞান/ অধ্যাত্মতত্ত্ব কেন গোপনীয়?

Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment