একটি বিশাল গাছ ছিল । গাছের মধ্যে কতকগুলো কোটর বা গর্ত ছিলো । কোনও কোটরে টিয়াপাখি বাস করতো । অন্য কোটরে পেঁচা বাস করতো । রাতিবেলায় পেঁচা বের হতো খাবারের খোঁজে । টিয়াপাখিরা রাত্রে কোটর মধ্যে ঘুমিয়ে থাকতো । দিনের বেলায় খাবারের খোঁজে বের হতো ।
একদিন রাত শেষে যেই পূর্ব আকাশ ফর্সা হলো, অমনি টিয়াপাখিরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলো, আজ আমরা নদীর ওপারে যাবো । সেখানে বিশাল পেয়ারা বাগান আছে । বাগানে অনেক সুমিষ্ট পেয়ারা খেতে পারবো । চলো যাই সেখানে । টিয়াপাখিদের কলরব পেঁচারাও শুনতে পেলো । পেঁচাদের মধ্যে একে অন্যকে বলতে লাগলো, আচ্ছা, নদীর ওপারে কি আছে? অন্য পেঁচা উত্তর দিল, জানি না । এক পেঁচা জানতে চাইলো, পেয়ারা বাগানে অনেক পেয়ারা আছে । সেই পেয়ারা আবার কি জিনিস? অন্য পেঁচা উত্তর দিলো, হয়তো কোনও পোকামাকড় হবে । এক পেঁচা জানতে চাইলো, সে পেয়ারা নাকি খুব সুমিষ্ট । অন্য পেঁচা বললো, নিশ্চয়ই ইঁদুরগুলোর মতো সুমিষ্ট নয় । তা হলে এই টিয়ারা সেই সুমিষ্ট বস্তু লাভের জন্য এত উৎসাহী কেন? সহজ কথা হলো, ওরা পাগল । এখন না ঘুমিয়ে ওরা কোথাও পাগলামি করতে যাচ্ছে । সত্যি? ওই টিয়াগুলো এত খারাপ যে, ওরা ইঁদুর, ছুঁচো, আরশোলা, গিরগিটি, ফড়িং এত চমৎকার খাবার থাকতেও নদীর ওপারে যাচ্ছে? আরে, পেয়ারা না ছাই । পেয়ারা বলে কোনও বস্তুই নাই । ওরা সব রূপকথার গল্প বলে । তারপর সূর্যোদয় হলে পেঁচারা ঘুমিয়ে পড়লো । কিন্তু কোনও টিয়াপাখি চেঁচিয়ে বলতে লাগলো, সূর্য উঠেছে । যাই চলো পেয়ারা বাগানে । সেই চিৎকার শুনে পেঁচারা একে অপরকে জিজ্ঞেস করলো, সূর্য আবার কি? অন্য পেঁচা উত্তর দিলো, ওসব রূপকথা । সূর্য বলে কোনও কিছু নেই । সূর্যকে কেউ দেখেনি । ওরা সব কল্পনা করে কিছু বলছে । ওসব কথায় কান না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়া ভালো । তারপর পেঁচারা ঘুমিয়ে পড়লো ।
হিতোপদেশ
পেঁচারা ইঁদুর খায় । পেয়ারা খায় না । তাই ইঁদুরের প্রতি নজর, পেয়ারার প্রতি উদাসীন । টিয়া পেয়ারা খায়, তাই সে পেয়ারার বিষয়ে আগ্রহী । সূর্য থাকলেও সূর্যের কিরণ চোখে পড়া মাত্রই পেঁচার চোখ বন্ধ হয়ে যায় । সে আঁধারের পাখি । রাত্রে বিচরণ করে । দিনের আলোতে কিছু দেখতে পায় না । তাই বলা হয়, উলুকে না দেখে কভু সূর্যের কিরণ । তেমনই মনুষ্য সমাজের যারা জড়জাগতিক চেতনায় বদ্ধ, তাদের কাছে ভগবান, বৈকুন্ঠধাম সবকিছু রূপকথা বা কাল্পনিক বলে মনে হয় । যদিও মহাত্মারা সবকিছু বর্ণনা করেছেন, তবুও অভক্ত লোক সেসব বিষয়ে কোনও আগ্রহাম্বিত থাকে না । এমনকি পারমার্থিক বিষয়টির অস্তিত্ব পর্যন্ত মানতে চায় না ।
Monday, March 13, 2017
পেঁচার দৃষ্টি ও অন্তর্নিহিত তথ্য
Hey visitor! I'm Satyajit Roy holding a big name of famous indian film director! but not for nothing at all ��. Trying to write something about something.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment