বঙ্গীয় যুবকগণ, তোমাদিগকে বিশেষভাবে আহ্বান করিয়া বলিতেছিঃ
ভ্রাতৃগণ! লজ্জার বিষয় হইলেও ইহা আমরা জানিযে, বৈদেশিকগণ যেসকল প্রকৃত দোষের জন্য হিন্দুজাতিকে নিন্দা করেন, সেগুলির কারণ আমরা। আমরাই অন্যান্য জাতির মস্তকে অনেক অনুচিত গালি—বর্ষণের কারণ। কিন্তু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমরা ইহা বুঝিতে পারিয়াছি, আর তাহার আশীর্বাদে আমরা যে শুধু নিজেদেরই শুদ্ধ করিব, তাহা নয়, সমুদষ বিশ্বকেই সনাতন ধর্ম প্রচারিত আদর্শানুসারে জীবন গঠন করিতে সাহায্য করিতে পারিব। প্রথমে এস, ক্রীতদাসের কপালে প্রকৃতি সর্বদাই যে ঈর্ষা—তিলক অঙ্কন করেন, তাহা মুছিয়া ফেলি। কাহারও প্রতি ঈর্ষান্বিত হইও না। সকল শুভকর্মব্রতীকেই সাহায্য করিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকো। ত্রলোকের প্রত্যেক জীবের উদ্দেশে শুভেচ্ছা প্রেরণ কর।
এস, আমাদের ধর্মের এক কেন্দ্রীভূত সত্য—যাহা হিন্দু বৌদ্ধ জৈন সকলেরই সাধারণ উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্য, তাহারই ভিত্তিতে দণ্ডায়মান হই। সেই কেন্দ্রীভূত সত্যঃ এই আজ অনন্ত সর্বব্যাপী অবিনাশী মানবাত্মা, যাঁহার মহিমা স্বয়ং বেদ প্রকাশ করিতে অক্ষম, যাঁহার মহিমার সমক্ষে অনন্ত সূর্য চন্দ্র তারকা নক্ষত্রপুঞ্জ ও নীহারিকামণ্ডলী বিন্দুতুল্য। প্রত্যেক নরনারী, শুধু তাহাই নয়, উচ্চতম দেবতা হইতে তোমাদের পদতলে ঐ কীট পর্যন্ত সকলেই ঐ আত্মা—হয় উন্নত, নয় অবনত। প্রভেদ-প্রকারগত নয়, পরিমাণগত।
আত্মার এই অনন্ত শক্তি জড়ের উপর প্রয়োগ করিলে জাগতিক উন্নতি হয়, চিন্তার উপর প্রয়োগ করিলে মনীষার বিকাশ হয় এবং নিজেরাই উপর প্রয়োগ করিলে মানুষ দেবতা হইয়া যায়।
প্রথমে এস, আমরা দেবত্ব লাভ করি, পরে অপরকে দেবতা হইতে সাহায্য করিব। 'নিজে সিদ্ধ হইয়া অপরকে সিদ্ধ হইতে সহায়তা কর'—ইহাই আমাদের মূলমন্ত্র হউক। মানুষকে পাপী বলিও না; তাহাকে বলো, তুমি ব্রহ্ম। যদি বা কেহ শয়তান থাকে, তথাপি ব্রহ্মকেই স্মরণ করা আমাদের কর্তব্য—শয়তানকে নয়।
ঘর যদি অন্ধকার হয়, তবে সর্বদা 'অন্ধকার, অন্ধকার' বলিয়া দুঃখ প্রকাশ করিলে অন্ধাকার দূর হইবে না, বরং আলো আনো। জানিয়া রাখো যাহা কিছু অভাবাত্মক, যাহা কিছু পূর্ববর্তী ভাবগুলিকে ভাঙিয়া ফেলিতেই নিয়ুক্ত, যাহা কিছু কেবল দোষদর্শনাত্মক, তাহা চলিয়া যাইবেই যাইবে; যাহা কিছু ভাবাত্মক, যাহাকিছু গঠনমূলক, যাহা কোন একটি সত্য স্থাপন করে, তাহাই চিরকাল থাকিবে। এস, আমরা বলিতে তাকি, 'আমরা সৎস্বরূপ, ব্রহ্ম সৎস্বরূপ, আর আমরাই ব্রহ্ম, শিবোহহম্'—এই বলিয়া চলো—অগ্রসর হই। জড় নয়, চৈতন্য আমাদেরলক্ষ্য। যে কোন বস্তুর নামরূপ আছে, তাহাই নামরূপাতীত সত্তার অধীন। শ্রুতি বলেন, ইহাই সনাতন সত্য। আলো আনো, অন্ধকার আপনি চলিয়া যাইবে। বেদান্তকেশরী গর্জন করুক, শৃগালগণ তাহাদের গর্তে পলায়ন করিবে। চারিদিকে ভাব ছড়াইতে থাকো; ফল যাহা হইবার, হউক। বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ একত্র রাখিয়া দাও, উহাদের মিশ্রন আপনা-আপনিই হইবে। আত্মার শক্তি বিকশিত কর;উহার শক্তি ভারতের সর্বত্র ছাড়াইয়া দাও; যাহা কিছু প্রয়োজন, তাহা আপনিই আসিবে।
Sunday, March 5, 2017
সুত্রঃ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী
Hey visitor! I'm Satyajit Roy holding a big name of famous indian film director! but not for nothing at all ��. Trying to write something about something.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment