Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Friday, May 5, 2017

জেনে নিন মহাঋষি ব্যাসদেব সম্পর্কে কিছু তথ্য

মহাঋষি, শ্রী শ্রী কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাসদেব ছিলেন মুনি পরাশরের পুত্র। পরাশর ছিলেন শক্তির পুত্র, শক্তি ছিলেন মুনি বশিষ্ঠের পুত্র।
সত্যবতী ছিলেন এক মৎস্যজীবীর মেয়ে, রূপ গুনের কারণে পরে যে হস্তিনাপুরের রাজা, শান্তনুকে বিয়ে ক’রে রাজ পরিবারে আসে, মৎস্যজীবীর মেয়ে হিসেবে সেই সত্যবতী শুধু মাছ ধরতেই পারতো না, নৌকাও চালাতে পারতো। তো একদিন পরাশর মুনি নদী পার হতে গিয়ে সত্যবতীকে দেখেন এবং তার নৌকা করে নদী পার হতে থাকেন। সেই সময় পরাশর মুনি তার দিব্যজ্ঞানে বুঝতে পারেন, একমাত্র সত্যবতী ই তাকে তার উপযুক্ত পুত্র দিতে পারে।
তাই পরাশর মুনি, সত্যবতীকে প্রস্তাব দেয়, তাকে একটি পুত্র দেওয়ার জন্য; শুনে সত্যবতী বলে, আমি তো কুমারী, আপনাকে পুত্র দিতে গিয়ে যদি আমার কুমারীত্ব নষ্ট হয়, তাহলে বাড়ি ফিরবো কিভাবে ? লোকে আমার নামে কটূ কথা বলবে। শুনে পরাশর মুনি বলে, আমাকে পুত্র দানের পর তুমি কুমারী ই থাকবে।
এরপর পরাশর মুনির কথাকে বিশ্বাস করে, তার ইচ্ছাকে পূরণ করতে সত্যবতী তার সাথে সেই নৌকায় বা নদী মধ্যবর্তী দ্বীপে মিলিত হয়, গর্ভবতী হয়ে সত্যবতী সেই দিনই একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে এবং সেই পুত্র প্রসব হওয়া মাত্রই বালকের মতো হাঁটতে শুরু করে। মহাভারতের অনেক ঘটনার মতো এটিও একটি অবিশ্বাস্য ঘটনা, যেখানে মাত্র একদিনের মধ্যে গর্ভধারণ থেকে শুরু করে প্রসব হয়ে বেদব্যাস হাঁটতে শুরু করে এবং মায়ের অনুমতি নিয়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য আশ্রমে চলে যায়।
দ্বীপে জন্ম হয়েছিলো বলেই তার প্রথম নাম হয় দ্বৈপায়ন। দ্বৈপায়ন এর গায়ের রং ছিলো কালো, তাই তার ডাক নাম হয় কৃষ্ণ এবং পুরো নাম হয় ‘কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন’।
জ্যামিতির ভাষায় বৃত্তকে যে রেখা ভাগ করে তাকে বলে ব্যাস। কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন, বেদের মন্ত্রগুলোকে সংগ্রহ করে লিপিবদ্ধ করার সময় বিষয় অনুযায়ী বেদকে চারটি ভাগে ভাগ করেন ব’লে তার আরেক নাম হয় বেদব্যাস যা পরবর্তীতে রূপ নেয় ‘ব্যাসদেব’ এ। এভাবে এই মহাঋষির পূর্ণ নাম দাঁড়ায় ‘শ্রী কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস’ বা সংক্ষেপে ‘ব্যাসদেব’। ব্যাসদেব এর মাথায় জটা ছিলো, তার মুখে ছিলো পিঙ্গল বর্ণের দাড়ি। আগেই বলেছি, জন্মেই ইনি বালকে পরিণত হন এবং মায়ের অনুমতি নিয়ে তপস্যার জন্য যাত্রা করেন। তাঁর তপস্যার স্থান ছিলো বদরিকাশ্রম। একারণে তিনি বাদরায়ন নামেও পরিচিত ছিলেন, যা ব্যাসদেব নামের আড়ালে ঢাকা পড়ে যায়।
ব্যাসদেব- চারটি বেদ, ১৮ টি পুরান, উপপুরান, বেদান্ত দর্শন, ভাগবত পুরান প্রভূতি সংগ্রহ করে সংকলন করেন এবং মহাভারত রচনা করেন। তিনি মহাভারতের আমলে সাত পুরুষ ধরে জীবিত ছিলেন। তাঁর পুত্রের নাম ছিলো শুকদেব। এছাড়াও তিনি রাষ্ট্রের প্রয়োজনে সত্যবতীর পুত্র বিচিত্রবীর্যের মৃত্যুর পর তার দুই স্ত্রী অম্বিকা ও অম্বালিকার গর্ভে ধৃতরাষ্ট্র ও পাণ্ডুর এবং হস্তিনাপুরের এক দাসীর গর্ভে বিদুরের জন্ম দেন।
সনাতন ধর্মের পুস্তকগুলোর সংগ্রহ এবং রক্ষণাবেক্ষণে ব্যাসদেবের যে অবদান, তা আমরা খুব কমই অনুধাবন করি এবং তার জীবনাদর্শকে একদমই ফলো করি না।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment