-->>হরে কৃষ্ণ!!
"!!শ্রী গীতামৃতম্!!"
শ্রীগীতা পরমকরুনাময় ভগবান, পদ্মনাভ
শ্রীগোবিন্দের মুখপদ্ম হতে বিনিঃসৃতা।
পদ্মবিগলিত মধু, সকল ভক্ত হৃদয়ে অমৃত দান করে। শ্রীগীতার আঠারোটি অধ্যায়, আঠারোটি শিক্ষা ও সাধন মার্গের আঠারোটি পথ। পার্থ অর্জুনকে দিয়েই গীতার বক্তা স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ, অপার্থিব রাজ্য তথা আত্মধর্ম প্রতিষ্ঠানের দিগনির্দেশনা দান করেন। ভক্ত অর্জুনের সমস্যার একদিক রাষ্ট্রীয়,
অপর দিক পারিবারিক। গীতার প্রথম ছয় অধ্যায়
পর্যন্ত আলোচনা ঈশ্বর কেন্দ্রীক।
শ্রীভগবান ভক্তের আজীবন সঞ্চিত পাপরাশি মুক্ত করার দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি শরণাগত ভক্তের সর্ব পাপ মোচনের দ্বায়িত্ব নিয়েছেন। এসব পূর্ণ আত্মসমর্পণের কথা, পরম গতির কথা।
প্রেমই ঈশ্বর, পূর্ণব্রহ্ম সনাতন। "Where love is there is God also." প্রেম বিনে ঈশ্বর লাভ হয় না।
শ্রীমদ্ভগবদ গীতা সেই মহাভাগবতীর প্রেমের
জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। গীতার ভক্তিযোগের মুল কথা
হচ্ছে, সর্বাগ্রে বিশ্বপতির সঙ্গে ভালবাসার হাত
বাড়িয়ে দাও। তুমি সকলের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন হও। এবং অহংকার ত্যাগ করে, সমভাবাপন্ন হও। এ সবই ভগবানের ভক্তিযোগ তথা প্রেমেরই বার্তাবাহী।
দেহরাজ্যের ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম এই পঞ্চ তত্ত্বই পান্ডব। অন্ধ মনই ধৃতরাষ্ট্র আর সঞ্জয়
দিব্যদৃষ্টি উপাধি প্রাপ্ত। অন্ধ মন কিছুই বোঝেনা
বলেই সঞ্জয়রুপী দিব্যদৃষ্টিকে দেহরাজ্যে সংঘটিত যুদ্ধের খবর জিঞ্জাসা করছেন। যিনি অর্জুন সারথী, তিনি জীব মাত্রেরই জীবন রথের নিত্য সারথী। তিনি অর্জুন রুপি সকল জীবেরই অন্তরে অন্তর্যামী
পরমাত্মা রুপে থেকে, অঙ্গরাজ্যে সংগমন করতঃ বুদ্ধিবৃত্তিকে চালনা করছেন। শ্রীগীতা "Practical science" বা বিঞ্জান শক্তির কথা বলে। "শক্তি অবিনশ্বর"। সমগ্র বিঞ্জান জুড়ে যেমন এই শক্তির রুপান্তরের কথা বলা হয়েছে, তেমনি গীতাও শক্তির কথা বলছেন।
গীতার প্রতিটি কথা ঈশ্বরের নৈকট্য লাভবেরই কথা। 'যোগ' মানে যুক্ত থাকা। গীতায় বিভিন্ন ভাবে শ্রী ভগবানের সাথে যুক্ত হওয়ার পথ বা মার্গ
দেখানো হয়েছে। তাই গীতার আঠারোটি অধ্যায়
আঠারোটি 'যোগ' পদবীতে ভুষিত করা হয়েছে। যে ঈশ্বরের সাথে যুক্ত, সে মহাত্মা এবং মুক্ত। সমস্থ বন্ধনের উর্ধ্বে তিনি। তিনি 'মন্মনাঃ' এবং 'মচ্চিত্তা মদ্ গতপ্রাণাঃ'।
শ্রীমৎ গীতা মানব ধর্ম গ্রন্থ। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে, সবাই গীতার সার্বভৌম ধর্মপোদেশ গ্রহন করতে পারেন। গীতামৃত পান করে,
সে উপদেশের অনুবর্তী হয়ে, ধর্মজীবন ও কর্মজীবন সুন্দর থেকে সুন্দরতর করতে পারেন। গীতা মায়ের পরম তীর্থে অবগাহন করতে পারলে, সকলেই ঐহিক ও
পারলৌকিক কল্যাণ লাভ করেন। গীতোক্ত
উপদেশামৃত সংক্ষেপে, (ক)কর্মে উদারতা, (খ)কর্মে নিষ্কামতা বা ঞ্জানে ব্রহ্মসম্ভার, (গ)ভক্তিতে শরণাগত, (ঘ)নীতিতে সাম্যদৃষ্টি বা সাম্যবুদ্ধি,
(ঙ)স্বধর্ম পালন, (চ)সাধনা তথা ত্যাগানুশীলন।
গীতোক্ত যোগে ঞ্জান, কর্ম ও ভক্তি এই তিনেরই
সমন্বয় আছে। এবং এ সবই পূর্ণাঙ্গ যোগ। শ্রীগীতায় ভগবান বলেছেন, "জীব ব্রহ্মেরই অংশ, ব্রহ্মকণা ব্রহ্মা অগ্নিরই স্ফুলিঙ্গ।" স্ফুলিঙ্গে অগ্নির লক্ষন
থাকবেই। তাই জীবনেও ব্রহ্ম লক্ষন আছে। গীতা জীবন বৃদ্ধির অমিয় মাখা সত্য স্বরুপ। তাই গীতা সর্বযুগের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ ও পরম তীর্থ। গীতা মায়ের করুণাধারায় স্নাতঃ হলে, সকল পাপ বিমোচন হয়।
পরমকৃপাময়, সচ্চিদানন্দঘন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সবার মঙ্গল ও কল্যাণ করুণ।
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ
কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম
রাম রাম হরে হরে!!"
!!জয় শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা!!
!!জয় শ্রীগোবিন্দ!! জয় রাধে!! —
Thursday, June 15, 2017
গীতা সম্পর্কিত আলোচনা

Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment