এক হতে বহু এবং বহু হতে এক, ইহাই হল মূলতত্ত্ব। একক ব্রহ্মের বহু হবার সঙ্কল্প হয়েছিল, তাই ‘সর্ব্ব’ শব্দের সহিত ‘ব্রহ্ম’ এর অপূর্ব্ব সমন্বয় ঘটেছে এই হিন্দুধর্মে। পরম ব্রহ্মের স্বরূপ উপলব্ধির নিমিত্ত এই বিশ্বদেবের ধ্যান ও ধারণা ব্যতীত জীবের আত্যন্তিক মঙ্গলের আর অন্য কোনও উপায় নাই। বৈদিক ধর্ম দর্শনে ও উপনিষদে এরই প্রচেষ্টা লক্ষ করা যায়। যে সনাতন বেদের মধ্যে, আমাদের এই পবিত্র জন্মভূমির পূণ্য-যজ্ঞশালা প্রসূত যে অমৃতের মধ্যে, মানবের চরম ও পরম কল্যাণ সুন্দর ভাবে নিহিত রয়েছে সেই বেদের পরিচয় আমরা রাখি না, ইহা অপেক্ষা পরিতাপের বিষয় আর কি হতে পারে?
আর একটি কথা, একথা এখন সর্ব্ববাদিসম্মত যে, বেদ অধ্যয়ন করতে হলে শুধু অর্থ হৃদয়ঙ্গম করলে হয় না, বিধিমত পাঠ করাও বিশেষ আবশ্যক। নিয়মিত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরিচালনা সহ পাঠ করলে শারীরিক ও মানসিক উন্নতি প্রকৃষ্টরূপে সাধিত হয়ে থাকে। পণ্ডিতপ্রবর সত্যব্রত সামশ্রমী মহাশয় বলেছিলেন যে, তিনি যখন বারাণসী ধামে বেদ অধ্যয়ন করছিলেন তখন তাঁহাকে দুই গুরুর আশ্রয় নিতে হয়েছিল- একজনের নিকট অর্থের জন্য অধ্যয়ন করতেন, ও অপরের নিকট পাঠ শিক্ষা করতেন।
বেদের সম্যক্ পরিচয় বেদের ঐতিহাসিকতা তাহার সাহিত্য ও কাব্যরূপ, তাহার বিজ্ঞান ও ধর্ম্মসম্বন্ধীয় সকল তথ্যই নানা মহাত্মা কর্ত্তৃক বেদ বিষয়ক আলোচনায় নানা গ্রন্থে সুষ্ঠভাবে বিচার বিশ্লেষণ-পূর্ব্বক আলোচনা করেছেন। বৈদিক পাঠ এবং পুরুষসূক্তের ও ঈশোপনিষদের বন-ব্যাখ্যাগুলির এই সুন্দর ও প্রাঞ্জল সমাবেশ বড়ই উপাদেয় হয়েছে। বেদের বহুল প্রচার কল্পে এই সাধু ও মহতী প্রচেষ্টায় আমাদের এই প্রয়াস। বৈদিক সনাতন ধর্মাবলম্বী তাহার এই নিজ বৈশিষ্ট্যের দ্বারা সমগ্র বিশ্বের শান্তি প্রতিষ্ঠায় সমর্থ হোক, ইহাই আমার অন্তরের প্রার্থনা।
ক্রমশঃ
নিবেদনে: শ্রীমদ্ভগবদগীতা স্কুল
No comments:
Post a Comment