অতীত কালে এই ভারতবর্ষ স্বাধীন থাকায় এতে কেবল এক সনাতন ধর্মের প্রচলন ছিল, এবং সর্ব সাধারণই ধর্ম পরায়ণ এবং ধর্ম নিয়ে নিজেদের মধ্যে অধিক বাদানুবাদও ছিল না, কিন্তু কাল ক্ৰমে ভারতবর্ষে বিজাতীয় রাজাদের অধিকার ভুক্ত হওয়ায় ক্রমশঃ ইসলাম ও খ্রিষ্টান প্রভৃতি বিজাতীয় ধর্মের শক্তি বৃদ্ধি হওয়াতে কিছু কাল থেকে ধর্ম বিষয়ে নান৷ প্রকার তর্ক বিতর্ক উপস্থিত হয়েছে। বিশেষতঃ মুসলমান ও ইংরাজদের শাসন লাভের পর মিশনারি ও আরব্য অর্থের সহায়ে হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করার অভিপ্ৰায়ে পৌরাণিক ইতিহাস ও সনাতন ধর্মের রূপক কথা সমূহের প্ৰতি মিথ্যা দোষ আরোপ করে আমাদের সনাতন হিন্দু ধর্মের গ্লানি ঘোষণা করছে। অশিক্ষিত ও শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে কেউ কেউ শাস্ত্র তাৎপর্য্যে অনভিজ্ঞতায় ঐ অমূলক মিথ্যা গ্লানিকে যথার্থ এবং তান্ত্রিক উপাসনাকে ভ্ৰান্তি মুলক বুঝে পবিত্র সনাতন ধর্ম একেবারে অগ্ৰাহ করে কথিত ধর্মান্তরিত হচ্ছে, এবং কেউ বা যুক্তি বিরুদ্ধ বিবেচনায় শাস্ত্রীয় উপাসনা ও কৰ্ম কাণ্ডের প্রতি সন্দিহান হয়ে আচার সমুহকে কুসংস্কার বলছেন। ধর্মান্তরেনের আধুনিকায়নে যুক্ত হয়েছে লোভ লালসা, অর্থনৈতিক মুক্তি প্রাপ্তি(অর্থের লোভ) বা সামাজিক ভাবে বর্ণপ্রথার কুফল, অনৈক্যতা।
আমাদের ধর্ম শাস্ত্ৰ, বাইবেল ও ‘কোরাণের মত একটি বই মাত্র নয়, যে সেগুলি পড়লেই শাস্ত্ৰজ্ঞ হওয়া যায়। বিশেষতঃ উত্তম, মধ্যম অধম, তিনটি অধিকার ভেদে বিশেষ বিশেষ নিয়ম সকলের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে, এবং মানুষের প্রবৃত্তি অনুসারে কিছু বিষয় পরোক্ষ ভাবে(রূপক) লেখা হয়েছে, ও অনেক অর্থবাদও বর্ণনা করা হয়েছে। এই সকল কারনে প্রকৃত তাৎপৰ্য রূপ রত্ন সকল শাস্ত্র সমুদ্রের গর্ভে নিহিত রয়েছে,যা শুধুমাত্র শ্রদ্ধাবানের কাছেই প্রকাশিত হয়।
সুতরাং বৈদিক শাস্ত্র সমূহের পুনপ্রচার, বিশেষ করে বেদ-উপনিষদ-গীতা গ্রন্থ পাঠে প্রজন্মকে শাস্ত্ৰ আলোচনা করা ছাড়া বৈদিক সনাতন ধর্মের যথার্থ তাৎপর্য প্রাপ্তির সম্ভাবনা নেই অতএব এখন সাধারণের বোধ হতে পারে এবং বিজ্ঞান ও যুক্তি নির্ভর সনাতন ধর্ম প্রচারে আমাদের সচেষ্ট হওয়া আবশ্যক হয়ে উঠেছে। আমরা আশাকরি এবিষয়ে আপনারা এগিয়ে আসবেন, নিজের ধর্মধ্বজা এবং জাতিসত্ত্বাকে টিকিয়ে রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।
ঈশ্বর সকল শুভ শক্তির সহায় হোন।
নিবেদনে- শ্রীমদ্ভগবদগীতা স্কুল।
ক্রমশ.......
No comments:
Post a Comment