হরিহর বলতে বুঝায়,
হরি = বিষ্ণু বা কৃষ্ণ আর
হর = শিব
এই হরিহর বিগ্রহ আমরা দেখতে পাই নবদ্বীপ
ধামে গদ্রুম দ্বীপে অলকা নদীর পাশে অবস্থিত
। এটা অভিন্ন কাশি(বারানাসি) বলা হয়, এটা আরেক নাম
হচ্ছে হরিহর ক্ষেত্র । হরি আর হর অর্ধেক বিষ্ণু
আর অর্ধেক শিব মিলে একটা সুন্দর ও অদ্ভূদ বিগ্রহ
।
বৈষ্ণবরা বিষ্ণুকে আরাধনা করে আর শৈব্যরা শিবের
আরাধনা করে কিন্তু মাঝে মাঝে এই বৈষ্ণব আর
শৈব্যদের মধ্যে বিরোধ দেখা যায় । আমাদের
আগে এই দুজনের তত্ত্ব বুঝতে হবে । বিষ্ণু
ভক্তরা শিবকে বৈষ্ণবদের শ্রেষ্ঠ হিসেবে পূজা
করে (বৈষ্ণবানাং যথা শম্ভুঃ ভাগবত ১২/১৩/১৬) । ভগবান
আর ভক্ত অভিন্ন তাই শিব আর বিষ্ণু অভিন্ন আবার
ভিন্ন ।
তাই ব্রহ্মসংহিতায় ৫/৪৫ বলেছে
ক্ষীরং যথা দধি বিকারবিশেষযোগাত
সঞ্জায়তে ন হি তত: পৃথগস্তি হেতো:।
য: শম্ভুতামপি তথা সমুপৈতি কার্যাদ
গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি।।
অনুবাদ - দুগ্ধ যেমন বিকার-বিশেষযোগে দধিতে
পরিণত হয়, যা কারণরূপে দুগ্ধ হতে পৃথক নয়, তেমনি
যিনি কার্যবশত 'শম্ভুতা' প্রাপ্ত হন এবং সেই আদিপুরুষ
গোবিন্দকে আমি ভজনা করি।
দুধ আর দই এক আবার ভিন্ন, এক কারন, দুধ ছাড়া দই হই
না। আর ভিন্ন কেন, কারন দুধ থেকে দই হয় কিন্তু
দই থেকে দুধ হতে পারে না।
তাই শিব আর কৃষ্ণ এক আবার ভিন্ন তাই একে অচিন্ত্য
ভেদাভেদ তত্ত্ব বলা হয় ।
আবার হরিভক্তিবিলাশে বলা হয়েছে "নিঃসন্দেহে
চিন্ময় জগতের একমাত্র গন্তব্য পরমেশ্বর ভগবান
নারায়ণ।
কিন্তু যে ব্যক্তি শ্রীশিব কে বিরোধিতা করে,
সে কখনই চিন্ময় জগতে প্রবেশের সুযোগ পায়
না।।" [ শ্রীশ্রী হরিভক্তি বিলাসঃ ১৪/১৮৯ ধৃত
কূর্ম্মপুরাণে ভৃগুমুনির ঘোষণা ]
আবার যারা শিবের আরাধনা করে তাদের উচিত
বিষ্ণুকে সাথে নিয়ে আরাধনা করা । বিষ্ণুকে বাদ
দিয়ে শিবের আরাধনা করার অর্থ হলো রাবনের
মতো অবস্থা হওয়া । রাবন শিব ভক্ত ছিল কিন্তু তিনি
রামকে বাদ দিয়েছেন তাই তার দশ মাথা শিরচ্ছেদ
হয়েছে আর রাবনের বংশ বিনাশ হয়েছে ।
শাস্ত্রে এরকম অনেক প্রমাণ পাওয়া যায় যারা বিষ্ণুর
আরাধনা বাদ দিয়ে শুধু শিবের আরাধনা করেছে ।
তাদের বিষ্ণুর হাতে মরতে হয়েছে ।
তাই পুরাণে আমরা পাই, শিব বলেছে আমার আরাধ্য
দেব হচ্ছে বিষ্ণু আর বিষ্ণু বলছেন আমার আরাধ্য
হলো শিব । যদিও সবকিছু বিষ্ণু থেকে এসেছে ।
ভাগবতে ৪/৭/৫০ বলেছে “ভগবান শ্রীবিষ্ণু
বলেছেন – ব্রহ্মা, শিব এবং আমি জড়জগতের পরম
কারন । আমি পরমাত্মা, স্বয়ংসম্পূর্ণ সাক্ষী । কিন্তু
নির্বিশেষভাবে ব্রহ্মা, শিব এবং আমার মধ্যে কোন
পার্থক্য নাই ।”
আবার একই কথা মহাভারতের অনুশাসন পর্বে ১৩৫ নং
শ্লোকে বলা হয়েছে, বিষ্ণু আর শিবের মধ্যে
কোন পার্থক্য নেই ।
তাই আমাদের এই হরি আর হরের মধ্যে যে
প্রেম তা আমাদের বুঝতে হবে । শিব আর বিষ্ণু
একজন আরেকজনকে ছাড়া থাকতে পারে না । তাই
এই হরিহর ক্ষেত্র হলো বৈষ্ণব আর শৈব্যদের
একটা মিলনস্থান । মিলেমিশে আমাদের পরম
আরাধ্যকে আমাদের আরাধনা করতে হবে ।
বিরোধ না ঐক্যবদ্ধ হয়েই আমাদের দুজনের
আরাধনা করতে হবে । কিভাবে ঐক্যের মাধ্যমে
সেবা করা যায় তার নিদর্শন এই হরিহর বিগ্রহ ।
কৃতজ্ঞতায়- কৃষ্ণভাবনামৃত পেইজ।
Saturday, May 13, 2017
হরিহর (বিরোধ না ঐক্যবদ্ধ)
Hey visitor! I'm Satyajit Roy holding a big name of famous indian film director! but not for nothing at all ��. Trying to write something about something.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment