“সৰ্বং কর্মাখিলং পার্থ জ্ঞানে পরিসমাপ্যতে ৷”
“জ্ঞানাগ্নিঃ সৰ্বকৰ্মাণি ভস্মসাৎ কুরুতে তথা ৷”
জ্ঞানলাভই আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য । সুখই
ভোগ কর বা দুঃখই ভোগ কর, তোমার জীবনের
উদ্দেশ্য ওদুটোর একটাও নয় । সংসারেই থাকুক বা
সন্ন্যাসীই হোক, ছাত্র-জীবনের মধ্যে বা
ব্যবসায়-বাণিজ্যের ছুটোছুটির ভেতর যেখানেই
থাকুক না কেন, মানুষ সকল অবস্থায় এমন ভাবে কাজ
করতে পারে, যাতে তার প্রত্যেক কাজই তাকে
জ্ঞানের পথে এগিয়ে দেবে । লোকে মনে
করে বটে, কিন্তু ধর্ম জিনিসটা সংসার থেকে আলাদা
করে রাখবার জো নেই । এটা বোঝাবার জন্যেই
যেন গীতার উপদেশ আরম্ভ হয়েছে
রণভূমিতে, যেথায় হিংসা-দ্বেষের তরঙ্গ গর্জাচ্ছে
। উদ্যমরহিত হয়ে থাকবার অবকাশ মাত্র নেই এবং
মানব-মনের পৈশাচিক প্ৰবৃত্তিগুলোই নিঃসঙ্কোচে
খেলতে দাড়িয়েছে । এখানে যদি ধর্মের
সর্বোচ্চ উপদেশ ও অনুষ্ঠান চলে, তবে সংসারে
আর এমন কোন স্থান আছে, যেখানে তা চলবে
না ? যে ধর্ম সকলের জন্যে নয়, সে ধর্ম কে
চায় ? তুমি সুখে থাক, শান্তি পাও আর আমি দুঃখ-কষ্টে
মরি, এ শাস্ত্রকারের ইচ্ছা নয় । যথার্থ ধর্মের
অনুষ্ঠান, গৃহস্থজীবনে বা সন্ন্যাস নিয়ে; সব
জায়গায় চলবে । ধর্ম সকলকে এক জায়গায় নিয়ে
যাচ্ছে এবং বুঝিয়ে দিচ্ছে, ‘মানুষ তুমি যে
পূর্ণস্বরূপ, তাই আছ, হাজারই কেন মনে কর না তুমি
ক্ষুদ্র, তোমার শরীর আছে, তোমার সুখদুঃখ-
ভোগ হচ্ছে, তুমি মরবে ইত্যাদি, তুমি যা তাই আছ ও
থাকবে ।’
ধৰ্ম বলছেন -
“য এনং বেত্তি হন্তারং যশ্চৈনং মন্যতে হতম্ ৷
উভৌ তৌ ন বিজানীতো নায়ং হন্তি ন হন্যতে ৷৷”
- ‘যে কেউ আত্মাকে হস্তা বলে মনে করেন
কিংবা মনে করেন আত্মা মরে, তাঁরা উভয়েই
আত্মাকে জানেন না, আত্মা জন্মেনও না, মরেনও
না ।’ - ‘(আত্মা) কখনও জন্মেন না, বা মরেনও না ।’
“বেদাবিনাশিনং নিতং য এনমজমব্যয়ম্ ৷
কথং স পুরুষঃ পাৰ্থ কং ঘাতয়তি হস্তি কম্ ৷৷”
— ‘যিনি নিত্যস্বরূপ আত্মাকে জানেন, তিনি কাকেই বা
মারবেন, কার দ্বারাই বা হত হবেন ?’
তিনি কিছুই করেন না । তাঁর শরীর-মন আমরণ আপনা-
আপনি কাজ করে চলে যায় । সৎকাজ, পরোপকার
প্রভৃতি তাঁর স্বভাবসিদ্ধ হয়ে যায় । দেখা গেল,
আত্মজ্ঞান মানুষকে সুখদুঃখের পারে নিয়ে যায় ।
সেইজন্য মানুষ যখন শোকে মোহে অবশ
হয়ে পড়ে তখন আত্মজ্ঞান উপলব্ধি করিয়ে
দেওয়া ছাড়া অন্য উপায় নেই । ঐ জ্ঞান উপলব্ধি না
করে, অর্জুনেরও শোক মোহ যায়নি । বিশ্বরূপ
দর্শন না করে, এক মহাশক্তির হাতে যন্ত্রস্বরূপ
হয়ে রয়েছি, এ কথা অনুভব না করে কারও কোন
দিন অজ্ঞান-প্ৰসূত শোক মোহ দুর্বলতাদির লোপ
হয় না । অর্জুন যখন দেখলেন যে, সংসারে কারও
কিছু করবার ক্ষমতা নেই, তখনি তাঁর ভ্ৰম ঘুচলো, তখনি তাঁর শোক মোহ দূরে গেল ।
Saturday, May 13, 2017
অমৃতকথা
Hey visitor! I'm Satyajit Roy holding a big name of famous indian film director! but not for nothing at all ��. Trying to write something about something.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment