Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Friday, November 3, 2017

যর্জুবেদ ৩২/৩ মন্ত্র নিয়ে আর্য সমাজের(নব্য) লাফালাফির অন্ত নেই চলুন দেখে নেয়া যাক মন্ত্র টাই বা কি তার অনুবাদই ঠিক কি?

ন তস্য প্রতিমা অস্তি যস্য নাম মহদযশ
অর্থ্যাৎ --এই পুরুষের(ঈশ্বরের)মূর্তি নেই, তার মহৎ যশ আছে-- যর্জুবেদ-৩২/৩[দয়ানন্দ ভাষ্য]
আবার একই মন্ত্রে 
ন তস্য প্রতিমা অস্তি, যস্য নাম মহদযশ
অর্থ্যাৎ --এই পুরুষের(ঈশ্বরের) তুলনা দেবার কোন বস্তু নেই,তাহার মহৎ যশ আছে-- যর্জুবেদ-৩২/৩[বিজন বিহারী ভাষ্য]
এখানে দেখুন পরস্পর বিরোধী দুটি অর্থ। এর মধ্যে কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক সেটা আমাদের বের করতে হবে আলোচনার মাধ্যমে। বেদের শুধু ঐ একটা মন্ত্রের উপর সব কিছু ডিফেন্স করা যাবে না তাই আমাদের আরো মন্ত্র দেখে নিতে হবে সেখানে ঈশ্বরের সাকার রূপ আছে কি নাই।মূর্তি থাকাটা কিন্তু সাকার রূপেই পড়ে।যেহেতু দয়ানন্দ নিরাকার বাদী তাই হয়তো তার বেদ ভাষ্যে তিনি ঐটায় লিখেছেন কিন্তু আবার সায়ণ ভাষ্য তার ঠিক উল্টে।প্রতিমা শব্দটি স্বাভাবিক ভাবে মূর্তি অর্থ বুঝালেও আসোলেই বাংলা আভিধানিক অর্থে প্রতিমা অর্থ করা হয়েছে তুলনা দেবার বস্তু বা পরিমাপ করার বস্তু (নিচে স্কিন সুট)..কিন্তু প্রতিমা অর্থ যখনই বলবো তুলনা দেবার বস্তু তখনই সবাই হাসবে কেননা প্রতিমা অর্থ স্বাভাবিক ভাবে মূর্তি বোঝায়।এখন যদি ঠিক প্রতিমা অর্থ মূর্তি ধরে নেয়া যায় তবে বেদের কিছু মন্ত্রের বিরোধীতা করতে হয় যেমন নিচে কিছু ঈশ্বরের সাকার তত্ব দেখুন--
যর্জুবেদ--৩২/৪ বলা হয়েছে
এষো হে দেব------জনাতিষ্ঠন্তি
অর্থ্যাৎ --এ দেব সকল দিক ব্যোপে আছেন।হে মনুষ্যগণ ইনিই প্রথমে ছিলেন, গর্ভমধ্যেও তিনিই, এবং জনিষ্যমানও তিনিই, তিনিই প্রতি পর্দাথে বিচরণ করেন, সর্বত্র তার মুখাদি অবযব আছে তিনি অচিশ্ত্য শক্তিবিশিষ্ট।
#Important_points -- এই মন্ত্রে ঈশ্বরের মুখ থাকার কথা বলা হচ্ছে।। অর্থ্যাৎ সাকার তত্ব।
যর্জুবেদ--৩২/৮ বলা হয়েছে
বেনস্তৎ পশ্য ন্নিহিতং গূহা-------সত ওতঃ প্রোতশ্চ বিভু প্রজাসু।
অর্থাৎ--পন্ডিতেরা সে ব্রক্ষ কে জানে তিনি গূহাতে নিহিত অর্থ্যাৎ দূর্জ্ঞেয়,তিনি নিত্য, তিনিই বিশ্বের আশ্রয় অর্থাৎ নির্বশেষ কারণ,সে ব্রক্ষে সকল প্রাণী সংহার কালে মিলিত ও সৃষ্টি কালে তা থেকে নির্গত হয়।সে পরমাত্না ওতপ্রোতভাবে বিরাজমান,তিনি বিভু অর্থ্যাৎ কার্য কারণ রূপে নানান রূপ হয়েন।তিনিই ব্রক্ষ।
#Important_points--এখানে বলা হয়েছে ঈশ্বর কার্য কারণে নানান রকম রূপ নিতে পারে। অর্থাৎ সাকার তত্ব না হলে কখনোই রূপ নিতেন না।অথবা এখানে অবতার তত্ব ও বোঝা যায়। কারণ অবতার তত্বে কার্য কারণ বিশেষে কিন্তু কখনো বরাহবতার,কখনো নৃসিংহবতার কখনোবা মনুষ্য দেহ ধারীর মতো।
যর্জুবেদ--২৫/১০ বলা হয়েছে
হিরণ্যগর্ভঃ সমবর্ত তাগ্রে ভূতস্য জাতঃ --------- কর্মে দেবায় হবিষা বিধেম।
অর্থ্যাৎ--হিরণ্যগর্ভ প্রজাপতি প্রাণী সকলের উৎপত্তির পূর্বে স্বয়ং শরীর ধারী ছিলেন। তিনি জাত মাত্র সমস্ত জগতের ঈশ্বর,তিনি দ্যুলোক,ভূলোক ও অন্তরিক্ষ লোক ধারণ করে আছেন। সেই প্রজাপতির উদ্দ্যশ্যে আমরা হবি প্রদান করি।
#Important_points--এখানে ঈশ্বরের শরীর ধারণের কথা বলা হচ্ছে। অর্থ্যাৎ সাকার তত্ব ও অবতার তত্ব।কিন্তু হ্যা তা শরীর কোন সাধারণ মানুষের শরীর মতো নয় তার শরীর দিব্য (অলৌকিক,ঐশ্বরীয়,অপ্রাকৃত) শঙ্করাচার্য,রামানুজ, শ্রীধরস্বামী ভাষ্য গীতা--৪/৯।
যর্জুবেদ--৩১/৫ বলা হয়েছে
ততো বিরাডজাত----পক্ষাদ্ভুমিমথো পূর্বং।
অর্থ্যাৎ--সে আদিপুরুষ থেকে বিরাটপুরুষ উৎপন্ন হয়েছে,সে জাত বিরাটপুরুষ দেব, তির্যক, মনুষ্যাদিরূপ হয়েছেন তারপর তিনি ভূমি ও জীব গণের সৃষ্টি করেছেন।
#Important_points--মনুষ্যাদিরূপ হয়েছে।কথাটি অবতার তত্ব।
যর্জুবেদ--৩১/১০বলা হয়েছে
যৎ পুরুষং ব্যদথঃ-----পদাউচ্যেতে
অর্থ্যাৎ--প্রজাপতির প্রাণরূপ দেবগণ কত প্রকারে পুরুষ সৃষ্টি করেছিলেন? এ পুরুষের কি মুখ,বাহুদ্বয়,উরুদ্বয় ছিলো?
#Important_points--ঈশ্বরের কি হাত পা ছিলো?সাকার তত্ব।
যর্জুবেদের ৩০/১১-১৩ পর্যন্ত এই আলোচনা হয়েছে যে ঐ পুরুষের মুখ, বাহুদয়, উরুদ্বয়, নাভি থেকে কারা কার সৃষ্ট হয়েছিলো তারা হলো ব্রাম্মণ, ক্ষিত্রিয়, বৈশ্য ও শুদ্র।
#Important_points--ঈশ্বরের মুখ, হাত পা, নাভি থেকই ব্রাম্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শুদ্রের উৎপত্তি।।সুতারাং বলা যায় ঈশ্বরের সাকার তত্ব বেদেও বিদ্যমান।।
এবার ফিরে যাই সেই পূর্বের আলোচনায় --ন তস্য প্রতিমা অস্তি।।আমরা বেদের ঐ সব মন্ত্রে দেখতে পাচ্ছি যে ঈশ্বরের সাকার তত্ব বহুল আলোচনা।। সুতারাং ঈশ্বরের মূর্তি নেই বলাটা মূর্খামী। আর যেহেতু প্রতিমা অর্থ মূর্তিই নয় সেহেতু ঈশ্বরের মূর্তি অবশ্যই আছে।আর এটা বিষয় সবাই জানে যে ঈশ্বরের সংগে কখনো কারোর তুলনা হয়।কেননা ঈশ্বরের মতো সর্বশক্তিমান কেউই হতে পারে না।তিনি চাইলে যেমন রূপ নিতে পারে আবার নাও নিতে পারে। 
কিন্তু চিন্তার বিষয় একটাই এই সব আলোচনা পড়ে নব্য আর্যরা যে যর্জুবেদকেই অবৈদিক বলে ঘোষণা না করবে তার কোন গ্যারান্টি নেই।কারণ এই নব্য আর্য দয়ানন্দের পোষ্য (চেলারা) এরা দয়ানন্দের মির্থাথ্য প্রকাশ ছাড়া কিছুই চোখে দেখে না অর্থ্যাৎ সব কিছুই অবৈদিক বলে ঘোষণা করেছে।এদের কাছে মির্থাথ্য প্রকাশই হলো একমাত্র প্রামাণিক বৈদিক শাস্ত্র আর সব কিছু অবৈদিক। অবৈদিক হলেন--আদি শঙ্কারাচার্য যার জন্য ভারত বর্ষে বেদ, বেদান্ত টিকে আছে, অবৈদিক হলো --রামানুজ, শ্রী ধর স্বামি,নিম্বাকাচার্য, বলদেব বিদ্যাভূষন,কারণ এনারা সবাই শ্রী কৃষ্ণ কে ঈশ্বর বলেছে।তবে হ্যা বঙ্কিম চট্টোপাধ্যায় বৈদিক কারণ তিনি শ্রী কৃষ্ণ কে যোগী বলেছে।কিন্তু বঙ্কিম চট্টোপাধ্যায় যিনি ব্যাসদেবের মতো নয় তিনি হলেন সাধারণ একজন লেখক। তার কথায় নব্যরা বেশি অনুপ্রাণীত।। এটাই হলো নব্যদের বৈদিক।।
[ বি.দ্র.-- নব্যদের পতনের জন্য সবাই এগিয়ে আসুন। এরা বিভিন্ন ধরণের দেব দেবিকে পর্যন্ত ভূয়া বলে আ্যাখ্যা দিচ্ছে, সাথে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ তো চলছেই]

No comments:

Post a Comment