Hare Krishna

Hare Krishna
Welcome to ঈশ্বরঃ পরমঃ কৃষ্ণঃ সচ্চিদানন্দবিগ্রহঃ

Tuesday, October 3, 2017

প্রশ্নঃ সকল দেবদেবী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করেন। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ রাম-অবতারে রাবণ-বধের জন্য কেন দুর্গাদেবীর আরাধনা করলেন?

হরে কৃষ্ণ....
☞উত্তরঃ মূল গ্রন্থ বাল্মীকি রামায়ণে কোথাও ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের দুুর্গাপূজার কথার উল্লেখই নেই। পঞ্চদশ শতাব্দীতে রাজশাহী জেলার তাহেরপুরের রাজা কংসনারায়ণের সভাকবি ছিলেন কৃত্তিবাস ওঝা। তিনিই বাংলা পয়ারে রামায়ণের অল্পকিছু বর্ণনা দিয়েই তাতে দুুর্গাপূজা বিষয়টিও যুক্ত করে দিয়েছেন।

ব্রহ্মসংহিতার বর্ণনা অনুসারে দুর্গা হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অধীনস্থ সৃষ্টি স্থিতি প্রলয় সাধনকারিণী এক শক্তি। ভোগাসক্ত মানুষ জড় কামনা নিয়ে দুর্গা পূজা করে থাকে। তারা দুর্গাদেবীর কাছে প্রার্থনা করে বলে---"ধনং দেহী, জনং দেহী, রূপবতী ভার্যাং দেহি....."।
কিন্তু কলিযুগপাবনাবতারী শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু শেখালেন, "ন ধনং ন জনং ন সুন্দরীং....."
---'হে ভগবান, ইন্দ্রিয় লালসা চরিতার্থ করতে আমি এই জড়জাগতিক ধনবল, জনবল এবং রূপবতী ভার্যা---এসব কিছুই চাই না, কেবল জন্ম-জন্মান্তর ধরে আপনার শ্রীচরণে আমার অহৈতুকী ভক্তি হোক।"

অবশ্য ভগবান অনেক সময় আপন ভগবত্তা লুকিয়ে রেখে লীলার খাতিরে তাঁর ভক্তের পূজা করে জীবশিক্ষা দেন। যেমন, গার্হস্থ্য লীলায় দ্বারকাপুরীতে শ্রীকৃষ্ণ অতিথি নারদ মুনিকে দেখে নিজ হাতে শ্রীনারদের চরণ ধুয়ে মুছে দিয়ে তাঁকে প্রণতি জানিয়ে ছিলেন। কারণ গৃহস্থদের কর্তব্য হচ্ছে সাধুসেবা, সন্ন্যাসীর যথাযথ মর্যাদা দেওয়া। এই শিক্ষাই ভগবান স্বয়ং শেখালেন। যদিও নারদ মুনি কৃষ্ণের ভক্ত মাত্র। কিন্তু এতে ভগবানের ভগবত্তা কখনই ক্ষুণ্ণ হয় না।

তাই প্রশ্নানুসারে, রামচন্দ্র যদি দুর্গা পূজা করেও থাকেন, তাতে তাঁর ভগবত্তা কখনই ক্ষুণ্ণ হবে না। এছাড়া, ভগবান যখন তাঁর ভক্তের পূজা করেন, তার মাধ্যমে তিনি জীবকে জড় কামনা থেকে মুক্ত হওয়ার পন্থাই শিক্ষা দেন। ব্রজগোপীরা দেবী কাত্যায়ণীর পূজা করেছিলেন ভোগাসক্তি চরিতার্থ করার জন্য নয়। শ্রীকৃষ্ণকে সেবা করার জন্যই তাঁরা কাত্যায়ণী ব্রত করেছিলেন।

কিন্তু, কলিযুগের পতিত ব্যক্তিরা ভোগবাসনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই দুর্গা পূজা করে থাকে। তাই, তারা যতই দুর্গা পূজা করুক না কেন, মহামায়া দুর্গা তাদের সমস্ত শুভ জ্ঞান-বুদ্ধিকে শুধু হরণ করতে থাকেন। তারা কখনও পরমেশ্বর ভগবানের ভক্তও হয় না। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এদেরকে 'মায়য়া অপহৃত জ্ঞানাঃ'
অর্থাৎ 'মহামায়া কর্তৃক তাদের জ্ঞানবুদ্ধি অপহৃত হয়েছে'---এই রকম বর্ণনা করেছেন।

No comments:

Post a Comment